বাঁচা-মরার ম্যাচে ধোনিদের এ কেমন ব্যাটিং!

আজও ব্যর্থ ধোনি।ছবি: আইপিএল

ম্যাচটা দিয়ে জেতা শুরু করতেই হতো চেন্নাই সুপার কিংসের। আইপিএলে শেষ চারে জায়গা করে নিতে হলে মোট ১৪ পয়েন্ট দরকার। আজকের আগে ১০ ম্যাচ খেলে ফেলা চেন্নাইয়ের ৩ জয়ে পয়েন্ট মাত্র ৬। শেষ চার ম্যাচের চারটিই জিতলে শেষ চারের আশা বেঁচে থাকে চেন্নাইয়ের। এমন সমীকরণ নিয়ে শারজার মাঠে আজ রোহিত শর্মাবিহীন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে খেলতে নামে ধোনির চেন্নাই।

কিন্তু এমন সমীকরণের নেমে এমন ব্যাটিং তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের! আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১১৪ রান করেছে ধোনির দল! ২০১৩ আইপিএলে এই মুম্বাইয়ের বিপক্ষেই চেন্নাই অলআউট হয় ৭৯ রানে। আজ সেই ৭৯ রান ছাড়াতেই বেশ কষ্ট করতে হয়েছে চেন্নাইকে। অথচ আজ খেলা হলো শারজার মাঠে। যে মাঠ এবারের আইপিএল রানবন্যার মাঠে পরিনত হয়েছে, সেই মাঠেই আজ রান খুঁজে পেল না চেন্নাই।

অথচ ভাগ্য বদলের আশায় একাদশে তিন-তিনটি পরিবর্তন আনে চেন্নাই। অভিজ্ঞ শেন ওয়াটসন, কেদার যাদব ও পীযুষ চাওলাকে বেঞ্চে বসিয়ে সুযোগ দেয় দুই তরুণ রুতুরাজ গায়কোয়াড়, এন জগদিশান ও অভিজ্ঞ লেগ স্পিনার ইমরান তাহিরকে।
কিন্তু ইনিংসের শুরু থেকেই চেন্নাইকে পথহারা করেন মুম্বাই পেসাররা। তিন ভারতীয় ব্যাটসম্যান গায়কোয়াড়, অম্বাতি রাইডু ও জগদিশান যখন আউট হন, দলের রান তখনো ৩! অভিজ্ঞ বিদেশি ফাফ ডু প্লেসি ছিলেন ক্রিজে। ধোনিকে নিয়ে ফাফ বড় জুটি গড়াবেন—এমন আশা ছিল চেন্নাই ক্যাম্পে। কিন্তু দলের রান তিনে থাকতেই আউট হন ডু প্লেসি। বুমরা ও বোল্ট জোড়া উইকেট নিয়ে চেন্নাইকে যেন তাসের ঘরে পরিণত করেন।

অধিনায়ক ধোনি ক্রিজে এসে দলের মান বাঁচানোর ইঙ্গিত দেন। কিন্তু রোহিতের অবর্তমানে অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডকে পেয়ে বসেছিল উইকেটের নেশায়। পাওয়ার প্লে-তে দুই ওভার করে ফেলা বোল্টকে আরেক ওভারের জন্য বল তুলে দেন তিনি। বাড়তি উইকেট পেয়েও যায় মুম্বাই। রবিন্দ্র জাদেজা পুল শটে ক্যাচ দেন শর্ট মিড উইকেটে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে-র ছয় ওভার তখনো শেষ হয়নি, কিন্তু চেন্নাইয়ের ২১ রানে ৫ উইকেট নেই!

স্যাম কারেন লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন চেন্নাইকে।
ছবি: আইপিএল

পরের ওভারে লেগ স্পিনার রাহুল চাহারকে ছক্কা মারেন ধোনি। চেন্নাইয়ের তখন অলৌকিক ঘটনার দরকার। আর ধোনি অলৌকিক কিছু করে ফেলতে পটু। কিন্তু সেই পুরোনো জাদু আজ আরেকবার দেখা গেল না। ছক্কা মেরে একই ওভারে রাহুলের বড় স্পিন মেশানো লেগ ব্রেকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ধোনি! এরপর দীপক চাহারের উইকেট নেন রাহুল। ৭ উইকেট শেষ, চেন্নাইয়ের রান তখন মাত্র ৪৩।

এরপর পুরো আইপিএলে যা হয়েছে ঠিক তা-ই হলো। চেন্নাই বিপদে পড়লে তরুণ স্যাম কারেন নিয়মিত ভালো খেলেছেন আইপিএলজুড়ে, আজও তা-ই হলো। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে এক পাশ ধরে রেখে কারেন করেন ৪৭ বলে ৫২ রান। প্রথমে শার্দূল ঠাকুর ও পরে ইমরান তাহির এক পাশ ধরে রাখতে সক্ষম হন। সেই সুযোগে কিছু রান যোগ করে চেন্নাইয়ের মান বাঁচান কারেন। অষ্টম উইকেটে শার্দুলের সঙ্গে কারেনের জুটিটা হয় ২৮ রানের, আর নবম উইকেটে তাহিরের সঙ্গে কারেনের জুটিতে আসে ৪৩ রান। বলাবাহুল্য, ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি সেটি!