বাংলাদেশের বিপক্ষে একবারই জোন্স

বাংলাদেশের বিপক্ষে অস্ট্রেলেশিয়া কাপের ম্যাচে তেমন ভালো করতে পারেননি ডিন জোন্সছবি: টুইটার

শারজার মরুময় আবহে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ ডিন জোন্সের। আজ থেকে ৩০ বছর আগে ক্রিকেটে বাংলাদেশ তখন হাঁটি হাঁটি পা পা করছে। অস্ট্রেলেশিয়া কাপে খেলার সুযোগ হলো গাজী আশরাফ, মিনহাজুল, আমিনুল, নওশের, ফারুকদের। সেই ‘শিশু’ বাংলাদেশকেই সেবার লড়তে হয়েছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। অ্যালান বোর্ডার, জিওফ মার্শ, মার্ভ হিউজ, পিটার টেলর, সাইমন ও’ডনেল, স্টিভ ওয়াহ, ইয়ান হিলিদের সঙ্গে সে ম্যাচটা ছিল বাংলাদেশের দারুণ এক অভিজ্ঞতা।

অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ৭ উইকেটে। খুবই স্বাভাবিক ফল। কিন্তু মার্ভ হিউজ, গ্রেগ ক্যাম্পবলেদের বোলিংয়ের সামনে লড়াইটাও মন্দ করেনি বাংলাদেশ। সে সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের খেলা প্রশংসা কুড়িয়েছিল সর্বত্র। আমিনুল ইসলামের ৭৬ বলে ৪১ রানের এক ইনিংসে স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের সংগ্রহটা খারাপ ছিল না—১৩৪। এ প্রজন্মের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে সংখ্যাটা সন্তুষ্টির না হলেও ১৯৯০ সালে বোর্ডারের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৩৪ রানই আনন্দ দিয়েছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের।

জোন্স শারজার সেই ম্যাচটিতে খুব ভালো কিছু করতে পারেননি। ১৯ রানে ফিরেছিলেন তিনি। তাঁর উইকেট নিয়েছিলেন সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। পিটার টেলর ৫৪ রান করেছিলেন। আর পরীক্ষামূলকভাবে সেদিন ওপেনিংয়ে ব্যাটিং করতে নেমে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিলি করেছিলেন ৩৪। আরেক ওপেনার ও’ডনেল ফিরেছিলেন ২০ রানে। মিনহাজুল ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বোলিং করেছিলেন দুর্দান্ত। ৪৩ রানে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। জোন্সের উইকেটটি ছাড়াও তাঁর দখলে গিয়েছিল ও’ডনেলের উইকেট। হিলিকে ফিরিয়েছিলেন গোলাম নওশের। অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন, ফারুক আহমেদ ও আজহার হোসেনের নামও নিতে হবে। বাংলাদেশের তুলে নেওয়া ৩ উইকেটেই যে এই তিনজনের ক্যাচের সহযোগিতা ছিল।

ধারাভাষ্যকার হিসেবে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ এসেছেন জোন্স। ২০১২ সালে প্রথম বিপিএলে এসেছিলেন চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির (চিটাগং কিংস) টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে। মিনহাজুলের সঙ্গে কেন যেন কখনোই কথা হয়নি তাঁর। জোন্সকে খুব কাছ থেকে দেখার স্মৃতিটা মিনহাজুলের ৩০ বছর আগেরই, ‘শারজায় অস্ট্রেলেশিয়া কাপে তাঁকে আউট করার স্মৃতিটা মধুর। আমরা দারুণ এক ক্রীড়াবিদকে হারালাম।’

মিনহাজুলের মতোই কাল দুপুর থেকেই ক্রিকেট দুনিয়ার আক্ষেপ—ক্রিকেট যে হারিয়ে ফেলল খেলাটির দুর্দান্ত এক দূতকে!

জোন্স সে ম্যাচে ২৮ বল খেলে ১৯ রান করেছিলেন। মিনহাজুলের বলে ফারুকের ক্যাচ হন তিনি। ধারাভাষ্যকার কিংবা বিশ্লেষক হিসেবে পরবর্তী জীবনে বহুবার বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে। প্রথম সাক্ষাৎ ছিল ওটাই। কাল তাঁর হঠাৎ মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকে জোন্সকে ফেরানোর সেই স্মৃতি খুব করেই মনে পড়ছে মিনহাজুলের।