বাজে ব্যাটিং নাকি ভালো বোলিং?

আজও ভালো করছেন বোলাররা।ছবি: প্রথম আলো

‘মেরে খেললে আউট। ধরে খেলতে গেলেও শেষ পর্যন্ত আউটই।’

মাহমুদউল্লাহ একাদশের পেসার রুবেল হোসেনের বলটা স্টাম্পে টেনে এনে আউট হয়ে এমন কিছুই কি ভাবছিলেন নাজমুল একাদশের ওপেনার সৌম্য সরকার? বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের আগের ম্যাচে তামিম একাদশের বিপক্ষে সৌম্য করেছিলেন ৪৭ বলে ৯! যার ওয়ানডে স্ট্রাইক রেট প্রায় এক শর কাছাকাছি, সেই সৌম্যই আগের ম্যাচে খেলেছেন ১৯ স্ট্রাইক রেটে। আজ খোলস থেকে বের হওয়ার চেষ্টা ছিল সৌম্যর। পয়েন্টে রুবেলকে দারুণ চার মেরে শুরুটা সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হলো না ইনিংসটাকে লম্বা করা।

সৌম্যর মতো বাকি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদেরও একই হাল। ৫০ ওভারের ক্রিকেটের ব্যাটিংটা যেন বুঝতেই পারছে না কেউ! প্রথম তিন ম্যাচের ছয় ইনিংসের কথাই ধরুন। নাজমুল একাদশ ও মাহমুদউল্লাহ একাদশের প্রথম ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ একাদশ প্রথম তিন উইকেট হারায় ২১ রানে। নাজমুল একাদশ প্রথম ৩ উইকেটে করেছে ৬০ রান।

পরের ম্যাচের গল্পটাও অনেকটা এ রকমই। মাহমুদউল্লাহ একাদশের বিপক্ষে ৪২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বসে তামিম একাদশ। ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ একাদশ ০ রানেই হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। গত ম্যাচেও তাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ। তামিমেরা ৬০ রান তুলতে হারায় ৩ উইকেট। জবাবে প্রথম তিন উইকেট হারিয়ে নাজমুলরা করেন ৩০ রান। আজও মাহমুদুল্লাহ একাদশ ও নাজমুল একাদশের ম্যাচে নাজমুলরা প্রথম তিন উইকেট হারান ৩১ রানে।

একটুর জন্য সেঞ্চুরি পেলেন না আফিফ।
ছবি: প্রথম আলো

কিন্তু টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের এমন ব্যর্থতার কারণ কি? উইকেট কি খুবই কঠিন? নাকি পেসাররা খুব ভালো বল করছেন? কিন্তু উইকেটই যদি অজুহাত হবে গত ম্যাচে তামিম একাদশের মেহেদী হাসানের ৫৭ বলে ৮২ রানের ঝোড়ো ইনিংসের কি ব্যাখ্যা? মুশফিকের ১০৯ বলে ১০৩ রানের ইনিংসেরই-বা ব্যাখ্যা কী? দুজনই আগের ম্যাচে খেলেছেন আদর্শ ওয়ানডে ইনিংস।

আজ যেমন খেলেছেন নাজমুল একাদশের দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন ও মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে ১৪৭ রানের জুটি হয়েছে দুজনের। ৯৩ বলে ৫২ করেছেন মুশফিক। আফিফ ফিরেছেন সেঞ্চুরি হাতছাড়া করার আফসোস নিয়ে। ব্যক্তিগত ৯৮ রানের মাথায় রান আউট হয়ে গেছেন তিনি মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে।

একবার জীবন পেলেও দলের বিপদে ভালো ব্যাট করেছেন মুশফিক।
ছবি: প্রথম আলো

টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কথা বলতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন কৃতিত্ব দিয়েছেন পেসারদের, ‘বোলাররা ফিটনেস নিয়ে অনেক কাজ করেছে। সবাই ভালো ফিট, এটাই পেসারদের ধারাবাহিক উইকেট পেতে সহায়তা করছে।’ কোচ সরওয়ার ইমরানের কথা, ‘ব্যাটিং ভীষণ টেকনিকনির্ভর বিষয়। একজন বোলারের যে কাজ, জিম, রানিং, বোলিং— এসব তারা এই সাত মাসেও করতে পেরেছে। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং অনুশীলন করার সুযোগ ছিল না।’

বোলারদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাও দেখা যাচ্ছে। জাতীয় দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও চেয়েছিলেন পেসারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হোক। প্রতিযোগিতা তৈরি হলে দক্ষতাও বাড়বে। পেসারদের মধ্যে এমন প্রতিযোগিতা তাই মান বাড়াচ্ছে তাঁদের পারফরম্যান্সের।