ফাইনালে তামিমকে হতাশ করে শেষ হাসি বাবরের

পিএসএল ফাইনালে লাহোরের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন তামিমছবি: এএফপি

করাচি জাতীয় স্টেডিয়ামের উইকেট কি স্বাভাবিকের চেয়ে মন্থর ছিল? লাহোর কালান্দার্সের ইনিংসে বল সহজে ব্যাটে আসেনি। করাচি কিংসের ইনিংসেও এক বাবর আজম ছাড়া প্রায় সবাই ভুগেছেন একই সমস্যায়।

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ফাইনালটা তাই হাই-স্কোরিং ম্যাচ হয়নি। কম রানের এই ম্যাচে লাহোরকে হারিয়ে তামিম ইকবালকে শিরোপার ছোঁয়া পেতে দেয়নি করাচি।

ফখর জামানের সঙ্গে শুরুটা ভালোই করেছিলেন তামিম
ছবি: এএফপি

আগে ব্যাট করতে নামা লাহোর পুরো ২০ ওভার খেলে ৭ উইকেটে তুলেছে ১৩৪ রান। তাড়া করতে নেমে করাচি খেলেছে ১৮.৪ ওভার। শেষ পর্যন্ত তারা ৫ উইকেটে জিতলেও একপর্যায়ে ৩৬ বলে ৩৬ রান দরকার ছিল দলটির। অর্থাৎ লক্ষ্য সহজ হলেও চাপে পড়েছিল করাচিও।

মন্থর উইকেট এখানে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তবে বাবর আজমকে লাহোর থামাতে পারেনি। ৭ চারে ৪৯ বলে ৬৩ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেছেন করাচি ওপেনার। তাঁর অপরাজিত ইনিংসে ভর করেই চ্যাম্পিয়ন হয় করাচি।

বাবর ছাড়া করাচির আর কোনো ব্যাটসম্যান ত্রিশ রানও করতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রান এসেছে চ্যাডউইক ওয়ালটনের ব্যাট থেকে। ক্যারিবীয় তারকার ব্যাটিং দেখেও মনে হয়েছে টাইমিংয়ের সমস্যায় ভুগছেন। এর আগে ঠিক একই সমস্যায় ভুগেছেন তামিম।

টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা করতে পারেননি বাংলাদেশের তারকা ওপেনার। সেই বরাবরের মতোই থিতু হতে গিয়ে ধীরলয়ে শুরু, মাঝে দু-একটি চোখধাঁধানো শট, তারপর ইনিংসটা যখন একটু বড় হচ্ছে ঠিক তখনই আউট।

মন্থর উইকেটে ভালো বোলিং করেছে করাচি কিংস
ছবি: এএফপি

৩৮ বলে ৩৫ রানে আউট হন তামিম। ৪ চার ও ১ ছক্কায় এর মধ্যে ২২ রান এসেছে বাউন্ডারি থেকে। দ্বিতীয় ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন তামিম। তার আগে তামিমের ইনিংসের শুরুটা ছিল—ইমাদ ওয়াসিমের করা প্রথম ওভারে শুধু একটি চার। পুরো ওভার খেলেও কোনো সিঙ্গেল বের করতে পারেননি।

একপর্যায়ে তাঁর সংগ্রহ ছিল ২৪ বলে ১৪। টি-টোয়েন্টিতে ওপেনারের কাছ থেকে এমন ধীরলয়ের ব্যাটিং, সেটিও কুড়িটির বেশি বল খেলে ফেলার পর—ভাবা কষ্টকর। তবে তামিম চেষ্টা করেছিলেন রানের গতি বাড়ানোর।

ফাইনালে দারুণ এক ইনিংস খেলেন করাচির বাবর আজম
ছবি: টুইটার

ইনিংসের শুরুতে বল ব্যাটে আনতে বেগ পেতে হয় তাঁকে। মরিয়া হয়ে মাঝেমধ্যেই আলগাভাবে ব্যাট চালিয়েছেন। এর মধ্যে আবার চোখধাঁধানো ক্রিকেটীয় শটও ছিল। ইমাদকে প্রথম ওভারে মারা স্কয়ার কাটটা ছিল দারুণ।

এ ছাড়া ষষ্ঠ ওভারে আরশাদ ইকবালকে মারা ফ্লিক, লং অনের ওপর দিয়ে মারা ছক্কা, উমাইদ আসিফকে মারা পুল—দর্শনীয় ছিল তিনটি শট।

কিন্তু ওপেনারের মূল কাজটা হলো দলকে অন্তত বড় সংগ্রহ পাওয়ার ভিত গড়ে দেওয়া—সেটি সেভাবে হয়নি, কারণ দলীয় ৬৮ রানে তামিম আউট হলেও ততক্ষণে ইনিংসের অর্ধেক অর্থাৎ ১০ ওভার শেষ।

লাহোর অন্য ব্যাটসম্যানেরাও কিন্তু উইকেটে দাঁড়াতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান এসেছে ফখর জামানের ব্যাট থেকে। লাহোরের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোরারও তামিম।

এর আগে প্লে অফের দুই ম্যাচেও ভালো শুরু পেয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি তামিম। ফাইনালে শিরোপা জিততে না পারায় এবার পিএসএলে তাঁর শেষটাও হলো হতাশায়।