বাবার আদর্শের সঙ্গে মেলে না যুবরাজের

বাবা যোগরাজ সিংয়ের সঙ্গে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার যুবরাজ সিংছবি: টুইটার

ঘড়ির কাঁটা যখন কাল রাতে ১২টা পেরিয়েছে, যুবরাজ সিংয়ের বয়সের ঘর আরেকটু ডানে গেছে। আজ ৩৯তম জন্মদিন পালন করছেন ভারতের ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক।

তবে জন্মদিনে সাবেক ভারতীয় অলরাউন্ডার আলোচনায় এলেন একটা বিতর্কের কারণে।

ভারতে সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের চলমান আন্দোলন নিয়ে যুবরাজের বাবা যোগরাজ সিং সম্প্রতি এমন একটি মন্তব্য করেছেন, যেটি সরকারের বিরুদ্ধেই যায়।

কৃষকদের আন্দোলনে সমর্থন দেওয়া যেসব খেলোয়াড় সরকারের কাছ থেকে পাওয়া পদক ফিরিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের সাধুবাদ জানিয়েছেন যোগরাজ। এদিকে যুবরাজের অবস্থান বাবার মন্তব্যের বিরুদ্ধে।

কাল টুইটে বাঁহাতি সাবেক অলরাউন্ডার বাবার মন্তব্যের কথা বলতে গিয়ে জানিয়ে দিলেন, ‘মি. যোগরাজ সিংয়ের কথায় আমি কষ্ট পেয়েছি।’ এ জায়গায় বাবার আদর্শের সঙ্গে তাঁর মেলে না বলেও জানালেন যুবরাজ।

ভারত সরকারের পাস করা ‘থ্রি ফার্ম অ্যাক্ট’ কৃষকদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়—এই দাবিতে গত ২৬ নভেম্বর থেকে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে কৃষকদের।

এরই মধ্যে অনেক ক্রীড়াব্যক্তিত্ব এর পক্ষে অবস্থান নিয়ে কৃষকদের হয়ে কথা বলেছেন। অনেক খেলোয়াড়ের বাবাকেও এই আন্দোলনে নিজেদের সমর্থন প্রকাশ করতে দেখা গেছে। যুবরাজের বাবা যোগরাজও সমর্থন জানিয়েছেন।

গত সোমবার সরকারকে এই আন্দোলনের সমাধান তো দিতে অনুরোধ জানিয়েছেনই, পাশাপাশি সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সব পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়া সব ক্রীড়াব্যক্তিত্বকে সমর্থনও দিয়েছেন যোগরাজ সিং।

‘কৃষকদের চাওয়াটা ন্যায্যই। সরকারের উচিত তাঁদের কথা শোনা, তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া। এই ব্যাপারে সরকারের সমাধান দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। পাশাপাশি যেসব খেলোয়াড় সরকারের কাছ থেকে পাওয়া সম্মানজনক সব পুরস্কার ফিরিয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি’—দুদিন আগে বলেছেন যোগরাজ।

বাবার কথাগুলোর কারণে অর্জুনা ও পদ্মশ্রী পুরষ্কারজয়ী যুবরাজের ওপর যেন হঠাৎই একটা দায় এসে পড়ে! কাল জন্মদিনে তাই টুইটারে এসে সেটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন যুবরাজ।

প্রথমে জন্মদিন পালন করার কথা জানাতে গিয়ে আন্দোলনের আশু সমাধান প্রার্থনাই করলেন যুবরাজ, ‘কোনো সংশয় নেই, কৃষকেরা একটা জাতির প্রাণ। আমার বিশ্বাস, শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। জন্মদিন সাধারণত কোনো একটা ইচ্ছা বা আশা পূরণের উপলক্ষ, কিন্তু এই জন্মদিনে আমি শুধু এই প্রার্থনাই করি যে আমাদের কৃষকদের সঙ্গে আমাদের সরকারের শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে সবকিছুর দ্রুত সমাধান হোক।’

এরপরই নিজের বাবার মন্তব্যের প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলেন যুবরাজ, ‘মি. যোগরাজ সিংয়ের কথায় আমি হতাশ, অনেক কষ্ট পেয়েছি। এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে তাঁর কথাগুলো পুরোপুরিই তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য। এই ব্যাপারে তাঁর আদর্শের সঙ্গে আমার আদর্শ মেলে না।’