বাবার ব্যাগ নিয়েই ড্রেসিং রুমে ক্রুনাল

কাঁদছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। ভাই হার্দিক পান্ডিয়া তাঁকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন।
ছবি: টুইটার

জাতীয় দলে ওয়ানডে অভিষেকের টুপিটা পেয়েছেন ভাইয়ের কাছ থেকে। মাঠে নেমে ওয়ানডে অভিষেকে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়ে উপলক্ষটা রাঙিয়েছেন ক্রুনাল পান্ডিয়া।

আবেগে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি ভারতের এই স্পিন অলরাউন্ডার। পুনেতে কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচে প্রয়াত বাবাকেও স্মরণ করেছেন ক্রুনাল।

গত ১৬ জানুয়ারি ক্রুনাল ও হার্দিক পান্ডিয়ার বাবা হিমাংশু পান্ডিয়া হৃদ্‌রোগে মারা যান। রেকর্ড-গড়া ফিফটির পর ইনিংস বিরতিতে ক্রুনালের প্রতিক্রিয়া জানতে চান তাঁর ভাই ভারতের পেস অলরাউন্ডার হার্দিক। এ সময় ইনিংসটি বাবাকে উৎসর্গ করে কেঁদে ফেলেন ক্রুনাল।

৩০ বছর বয়সী অলরাউন্ডার বলেন, ‘এটা বাবাকে উৎসর্গ করছি। (কাল) আজকের দিনটা তোমার (হার্দিক) ও আমার জন্য আবেগের। তার আশীর্বাদ আছে আমাদের মাথার ওপর। আমি বিশ্বাস করি, তিনি আমার ইনিংসটি দেখে শান্তিতে ঘুমিয়েছেন। হ্যাঁ, এটা তাকেই উৎসর্গ করছি।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওয়ানডে অভিষেকে বাবাকে অন্যভাবে নিজের সঙ্গে রেখেছিলেন ক্রুনাল। বাবার সঙ্গে দুই ছেলেরই সম্পর্কটা গভীর ছিল।

প্রয়াত বাবার ভ্রমণের ব্যাগ ম্যাচের দিন ড্রেসিং রুমে নিজের সঙ্গে রেখেছিলেন ক্রুনাল। বিষয়টি তিনি ব্যাখ্যা করলেন, ‘১৬ তারিখ সকালে তিনি মারা যান। সেদিন আমার সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে খেলা ছিল। তাঁর একটা অভ্যাস ছিল, কোথাও যাওয়ার আগের দিন রাতে সব গুছিয়ে রাখতেন। জামাকাপড়, জুতা, হ্যাট গুছিয়ে রাখতেন।’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে বাবার সেই ভ্রমণের ব্যাগ বরোদা থেকে এনে নিজের সঙ্গে রেখেছিলেন ক্রুনাল, ‘জানি, তিনি আমাদের সঙ্গে নেই। কিন্তু তার কাপড়—যেগুলো পরে সেদিন ম্যাচ দেখার কথা ছিল—নিয়ে এসে ভাবলাম এগুলো ড্রেসিং রুমে আমার সঙ্গে রেখে দিই।’

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এসব কথা বলেন ক্রুনাল।

ব্যাট হাতে ৫৮ রানের ইনিংসটি ছাড়াও ১টি উইকেট নেন তিনি। ৬৬ রানে ম্যাচটি জিতে ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ভারত।

ইনিংস বিরতিতে বাবার প্রসঙ্গ ওঠার পর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি ক্রুনাল। হার্দিক তাঁকে বুকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন। ছোট ভাইকে ক্রুনাল বলেন, ‘এ পর্যন্ত (জাতীয় দল) আসতে অনেক কষ্ট করেছি। তার আশীর্বাদ রয়েছে বলেই পেরেছি। তোমার কাছ থেকে টুপিটা পাওয়াও বিশেষ কিছু। আমি সব সময় নিজের মতো হতে চেয়েছি। শুধু ক্রিকেটার নয়, মানুষ হিসেবেও এই চেষ্টা থাকবে।’

হার্দিক পরে তাঁর ভাইকে বলেন, ‘তোমার শরীরী ভাষাতেই বাবাকে স্মরণ করার বিষয়টি দেখা গেছে। সবাই হয়তো তা বুঝতে পারেনি। ড্রেসিং রুমে বাবা আমাদের সঙ্গেই ছিলেন।’