বারবার কেন দেখা দেয় তাদের 'চোকার' চেহারা?

আজ দক্ষিণ আফ্রিকার তিনজন ব্যাটসম্যান রান আউট হয়েছেন। ছবি: টুইটার
আজ দক্ষিণ আফ্রিকার তিনজন ব্যাটসম্যান রান আউট হয়েছেন। ছবি: টুইটার

ঢাকার রাস্তায় যানজট থাকবে, এটা যেমন মেনে নিতে হয়; তেমনি এটাও মেনে নিতে হবে, চাপের মুখে দক্ষিণ আফ্রিকা পারে না। এটা ধ্রুব সত্য কথা। আজ ভারতের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা কেমন করবে, এ নিয়ে একটু আগ্রহ ছিল। কিন্তু ‘চোকার’ রূপে ঠিকই দেখা দিল তারা। আবারও প্রমাণ হলো, বাঁচা-মরার ম্যাচ মানেই চোকারদের দেখা মিলবেই! কেন বারবার তাদের চোকার চেহারাটা বেরিয়ে আসে, এ যেন ক্রিকেটের এক রহস্য! 

আজ জিতলেই সেমিতে বাংলাদেশকে পাওয়া যাবে প্রতিপক্ষ হিসেবে। প্রতিযোগিতার শুরু হওয়ার আগে এমনটা আশা করেনি কোনো দল। কিন্তু এমন অনুপ্রেরণাও কাজে লাগেনি দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারত একটু চেপে ধরতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭৫ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯১ রানে অলআউট এবি ডি ভিলিয়ার্সের দল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হারল ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। টুর্নামেন্ট জিততে এসে বিদায় নিল গ্রুপ পর্বেই।
এমনটাই তো হওয়ার কথা ছিল। ১৯৯২ বিশ্বকাপ কেবল ব্যতিক্রম, যেবার সেমিফাইনাল থেকে তাদের বিদায় প্রকৃতির নির্দয় আচরণের শিকার হয়ে। কিন্তু এরপর আর প্রকৃতিকে দায় দিয়ে বেঁচে যাওয়ার সুযোগ তারা পায়নি। সেই ’৯৬ বিশ্বকাপ থেকেই তো এমন চিত্রনাট্য মেনে চলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যখন চাপের মুখে পড়েছে, করে ফেলেছে গড়বড়। ১৯৯৯, ২০০৩, ২০১১ অথবা ২০১৫... প্রতিবার জিততেই হবে, এমন ম্যাচে স্নায়ুচাপেই ম্যাচ হেরে বসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
শুধু একটি প্রতিযোগিতাতেই অন্য কিছু হয়েছিল। ১৯৯৮ সালের মিনি বিশ্বকাপে (বর্তমানের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি)। কিন্তু সেবার শিরোপা জিতে আসলে ভবিষ্যতের কোনো ইঙ্গিত দেয়নি প্রোটিয়ারা, একটি বিস্ময়কর ব্যতিক্রমী উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল মাত্র। পরে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও চাপ জয় করে নিজেদের অন্য চেহারা দেখতে পারেনি।
অথচ ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিধর দলগুলোর একটি, তারকায় ঠাসা। কিন্তু ওই যে, চোকার ভূতটা দূরই করতে পারল না তারা। দক্ষিণ আফ্রিকা মানে তাই শেষ পর্যন্ত আজকের ম্যাচের দলটিই। বাঁচা-মরার ম্যাচে যারা কোনোভাবেই পারে না!

বড় টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকার যাত্রা

বিশ্বকাপে
১৯৯২: সেমিফাইনাল
১৯৯৬: কোয়ার্টার ফাইনাল
১৯৯৯: সেমিফাইনাল
২০০৩: গ্রুপ পর্ব
২০০৭: সেমিফাইনাল
২০১১: কোয়ার্টার ফাইনাল
২০১৫: সেমিফাইনাল

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
১৯৯৮: চ্যাম্পিয়ন
২০০০: সেমিফাইনাল
২০০২: সেমিফাইনাল
২০০৪: গ্রুপ পর্ব
২০০৬: সেমিফাইনাল
২০০৯: গ্রুপ পর্ব
২০১৩: সেমিফাইনাল
২০১৭: গ্রুপ পর্ব

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
২০০৭: সুপার এইট/টেন
২০০৯: সেমিফাইনাল
২০১০: সুপার এইট/টেন
২০১২: সুপার এইট/টেন
২০১৪: সেমিফাইনাল
২০১৬: সুপার এইট/টেন