বিড়ালের ‘লিটার’ দিয়ে ভারতের স্পিনারদের সামলানোর প্রস্তুতি তাঁর

স্পিনে কোহলির বড় ভরসা অশ্বিন।ছবি: বিসিসিআই

ম্যাচটা ইংল্যান্ডে হবে, কিন্তু প্রতিপক্ষ তো ভারত। তার ওপর ম্যাচের ভেন্যু সাউদাম্পটন স্পিনারদের দিকে বেশ হাতও বাড়িয়ে দেয়। এর সঙ্গে মিলিয়ে নিন, তাঁর এখনো টেস্ট অভিষেক হয়নি।

সব মিলিয়ে আগামী জুনে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে তাকালে নিউজিল্যান্ডের উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ের দুশ্চিন্তা না হয়ে পারে না। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দলে তিনি সুযোগ পাবেন কি না, তা-ই নিশ্চিত নয়, কিন্তু সুযোগ পেলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বড় একটা মাথাব্যথা হবে ভারতের স্পিনারদের সামলানো।

রবীচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজারা তো আছেনই, সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সফর থেকে দলে জায়গা অনেকটা পাকা করে ফেলেছেন ওয়াশিংটন সুন্দরও। বুমরা-শামিদের পেস আক্রমণের পর ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির বড় এক নির্ভরতা এই স্পিনাররা।

ডেভন কনওয়ে।
ছবি: এএফপি

কোহলির নির্ভরতা আর প্রতিপক্ষের মাথাব্যথা। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতেই পারেন। অন্য কেউ করুন না করুন, কনওয়ে করেছেন। কিন্তু যেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, সেটি শুনে অবাক লাগতে পারে। ভারতের স্পিনারদের সামলানোর প্রস্তুতি নিতে পিচে কিউই ব্যাটসম্যান ব্যবহার করছেন ‘কিটি লিটার’, যা মূলত বাসাবাড়িতে বিড়ালের মতো পোষা প্রাণীদের বর্জ্য শুষে নেয়!

বালির মতো এক ধরনের গুঁড়া এটি। একটি পাত্রে কিটি লিটার রেখে বিড়াল-কুকুরকে সেখানে মলত্যাগের অনুশীলন করানো হয়। সেই গুঁড়াই এখন পিচে ছিটিয়ে দিয়ে অনুশীলন করছেন কনওয়ে।

লিটার বক্সে বিড়াল।
ছবি: সংগৃহীত

কেন? স্পিনাররা যখন বোলিংয়ে আসেন, ততক্ষণে পেসারদের ‘ফুটমার্কে’র কারণে পিচ কিছুটা অমসৃণ হয়ে পড়ে। বোলিংয়ের পর পেসারের পা পড়ে পিচের মধ্যে, সে কারণে পিচে ক্ষত হয়, এরপর স্পিনারদের বল সেখানে পড়লে বাঁক নেওয়ার ক্ষেত্রে এদিক-সেদিক হয়। আর তাতে প্যাঁচে পড়েন ব্যাটসম্যানরা। শুধু ফুটমার্কই কেন, টেস্টের চতুর্থ-পঞ্চম দিনেও তো পিচ স্পিনারদের জন্য অনেক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সেটির অনুশীলন করতেই কনওয়ের ‘কিটি লিটার’ প্রয়োগ।

‘এখানে মূলত ধারণাটা হচ্ছে বলটা পিচের অমসৃণ অংশে পড়ে কীভাবে লাফিয়ে ওঠে, সেটার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়া। এভাবে ব্যাটিং করা কঠিন, কিন্তু অনুশীলনটা ভালো। ওই লাফিয়ে ওঠা বলের বিপক্ষে লড়াইয়ের পরিকল্পনা কী হবে, সেটা খুঁজে বের করা; ম্যাচে কীভাবে খেলব, সেটা ঠিক করাই এখানে মূল উদ্দেশ্য’—অভিনব এই অনুশীলন পদ্ধতির ব্যাখ্যা কনওয়ে নিউজিল্যান্ডের স্পার্ক স্পোর্টসের ‘দ্য শো ডাউনস্টেয়ার্স’-এ দিয়েছেন এভাবে।

তবে ভারতীয় স্পিনারদের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে শুধু রক্ষণের কোনো পরিকল্পনা কনওয়ের নেই, ‘পিচ যখন অমসৃণ হয়ে পড়বে, বল যখন সত্যিই লাফিয়ে উঠবে, ঘুরবে, তখন ইতিবাচক থাকাই মূল ব্যাপার। আপনি যদি পুরোটা সময় শুধু ঠেকিয়ে যাওয়ার কথা ভাবেন, তাহলে কোনো না কোনো একটা বল আসবে যেটাতে আপনার উইকেট লেখা থাকবে।’

২৯ বছর বয়সী কনওয়ের নিউজিল্যান্ড জার্সিতে অভিষেক হয়েছে গত বছর। এখন পর্যন্ত কিউইদের হয়ে ৩ ওয়ানডে ও ১৪টি টি-টোয়েন্টি খেলা কনওয়ের জন্য ভারতের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগে বড় চ্যালেঞ্জ অবশ্য ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার জন্য এখন সেখানে আছে ২০ সদস্যের নিউজিল্যান্ড দল।

আইসিসির নিয়ম মেনে এখান থেকে আরও পাঁচজনকে বাদ দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের দল গড়বে নিউজিল্যান্ড। ভারতের বিপক্ষে সেই ফাইনাল শুরু হবে আগামী ১৮ জুন।