হাত বেশি লম্বা মনে হচ্ছে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের—এমন মনে হতেই পারে। সারা দিন বল করা ও বল কুড়োনোর ওপর থাকলে আর কী মনে হবে!
তবু যদি একটা উইকেট ফেলা যেত। পাল্লেকেলে টেস্টে আজ চতুর্থ দিনে দুই সেশন মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার কোনো উইকেট ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ।
তৃতীয় দিনে শ্রীলঙ্কার স্কোরবোর্ডে উইকেটের পাশে ‘৩’ সংখ্যাটা আজ দুই সেশনে গাধার খাটুনি খেটেও পাল্টানো যায়নি। বরং দিমুথ করুনারত্নে-ধনঞ্জয়া ডি সিলভা মিলে ছেলেখেলায় মেতেছেন বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে।
৩ উইকেটে ২২৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছিলেন করুনারত্নে-ধনঞ্জয়া। আজ প্রথম সেশনে ৩১ ওভারে ১০২ রান তুলেছেন দুজন। পরের সেশনে ৩০ ওভারে উঠেছে ১১১ রান।
এই দুই সেশনে জমাট ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের মোক্ষম জবাবই দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা। তবে তাতে পাল্লেকেলে টেস্টে হার-জিতের মধ্যে যেকোনো একটি ফল বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।
চা-বিরতির আগে ৩ উইকেটে ৪৪২ রান তুলে মাঠ ছেড়েছেন শ্রীলঙ্কার এ দুই ব্যাটসম্যান। ১৮৪ রানে অপরাজিত করুণারত্নে। ১৩৪ রান করে অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছেন ধনঞ্জয়া। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেকে ৯৯ রানে পিছিয়ে শ্রীলঙ্কা।
প্রথম সেশনে সেঞ্চুরি তুলে নেন করুনারত্নে। পরের সেশনে সেঞ্চুরির দেখা পান ধনঞ্জয়া। এখন শেষ সেশনে করুণারত্নের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পাওয়ার অপেক্ষা।
ধনঞ্জয়াও হয়তো তাঁর অধিনায়কের চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে থাকবেন না। কথাটা বলা হচ্ছে দুজনের ব্যাটিং, উইকেটের আচরণ ও বাংলাদেশের বোলারদের বোলিং দেখে। আজ দুই সেশনে চিত্র ছিল প্রায় একই রকম।
জমাট ব্যাটিংয়ের সামনে তাইজুল-তাসকিনদের নির্বিষ বোলিং কোনো বিপদই সৃষ্টি করতে পারেনি। পাল্লেকেলের ২২ গজ এখনো ব্যাটিংবান্ধব। বড় কোনো বাঁক কিংবা বল ওঠানামা করছে না। বাঁক আদায় করে উইকেট নিতেই দুই স্পিনার মেহেদী ও তাইজুলকে দিয়ে বেশি বল করান মুমিনুল।
অবশ্য তাতে লাভই হয়েছে করুণারত্নে ও ধনঞ্জয়ার। দুজনেই স্পিনারদের বিপক্ষে রান বের করতে সিদ্ধহস্ত।
এর ওপর কোনো স্পিনারই বাঁক পাননি সেভাবে। অগত্যা দ্বিতীয় সেশনে একবার বল হাতে তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। এরপর ওপেনার সাইফ হাসানকে দিয়েও একবার বল করান তিনি।
নিয়মিত বোলাররা কিছু করতে না পারায় এ ছাড়া অধিনায়কের কীই–বা করার আছে! চতুর্থ উইকেটে চা–বিরতির আগপর্যন্ত ৪৩৪ বলে ২৫২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছেন করুনারত্নে-ধনঞ্জয়া।