ব্যাটিংয়ে সেরা লিটন, বোলিংয়ে মোস্তাফিজ

লিটন দাস (বাঁয়ে) ও মোস্তাফিজুর রহমান—সবচেয়ে বেশি রান ও সবচেয়ে বেশি উইকেট।ছবি: প্রথম আলো

শেষ হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু টি–টোয়েন্টি কাপের প্রথম পর্ব। এখন অপেক্ষা নকআউট পর্বের রোমাঞ্চের। প্রথম পর্বও অবশ্য কম রোমাঞ্চ উপহার দেয়নি। রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি দেখেছে বেশ কটি ম্যাচ। ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছেন অনেকেই। তরুণ পারভেজ হোসেন তো ৪২ বলে সেঞ্চুরি করে দ্রুততম সেঞ্চুরির নতুন বাংলাদেশি রেকর্ডও গড়েছেন। সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটাও তুলনামূলক কম পরিচিত রবিউল ইসলামের।

তবে ব্যাটিং ও বোলিংয়ের শীর্ষে আছেন জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরাই। ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে বেশি রান লিটন দাসের। সবচেয়ে বেশি উইকেট মোস্তাফিজুর রহমানের। বোলিংয়ে শীর্ষ পাঁচে অপেক্ষাকৃত কম পরিচিতরা জায়গা করে নিলেও ব্যাটিংয়ে শীর্ষ পাঁচে জাতীয় দলের বাইরের কেউ নেই।

সবচেয়ে বেশি রান লিটন দাসের

একটি ম্যাচ খেলেননি লিটন দাস। তবু প্রথম পর্বে সবচেয়ে বেশি রান গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের ওপেনারের। সাত ম্যাচের সাত ইনিংসে ৩০৬ রান করা লিটন শুরু করেন বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে স্বল্প রানের ম্যাচে ৩৩ বলে ৩৪ রান করে। পরের ম্যাচে ৯ চারে ৪৬ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন লিটন। এদিন জেমকন খুলনা চট্টগ্রামকে দিতে পেরেছিল মাত্র ৮৭ রানের লক্ষ্য। তিনবার ৫০ ছাড়ানো লিটন সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছেন মিনিস্টার রাজশাহীর বিপক্ষে প্রথম দেখায়। ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৫৩ বলে ৭৮ রান করেছিলেন তিনি। ম্যাচটা মাত্র ১ রানে জেতে চট্টগ্রাম। গতকাল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচেও রাজশাহীর বিপক্ষে ফিফটি পেয়েছেন লিটন।

সৌম্য–লিটনের জুটিটা এবার জমেছে বেশ।
ছবি: শামসুল হক

লিটনের ওপেনিং–সঙ্গী সৌম্য সরকারও কম যাননি। আট ম্যাচে ২৫৩ রান করে শীর্ষ ব্যাটসম্যানদের তালিকার চতুর্থ স্থানে আছেন জাতীয় দলের এই ব্যাটসম্যান। সাত ইনিংসে চারবার ৫০ ছাড়িয়েছে দুজনের জুটি। গতকাল তো রাজশাহীর বিপক্ষে ১২২ রান এসেছে তাঁদের উদ্বোধনী জুটিতে। টুর্নামেন্টে সব উইকেট মিলিয়ে এর চেয়ে বড় জুটি আছে মাত্র একটি। ৮ ডিসেম্বর ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে প্রথম উইকেটেই ১৩১ রান যোগ করেছিলেন রাজশাহীর নাজুমল হোসেন ও আনিসুল ইসলাম।

ওই ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়া নাজমুল আছেন শীর্ষ পাঁচের তিনে। লিটনের চেয়ে ৫ রান কম তাঁর। দল বাদ পড়ে যাওয়ায় রাজশাহী অধিনায়কের অবশ্য আর সুযোগ নেই এগিয়ে যাওয়ার। ৩০২ রান নিয়ে লিটন ও নাজমুলের মাঝে আছেন ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। শীর্ষ পাঁচের অন্যজন ২৪৩ রান করা বেক্সিমকো ঢাকা ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম।

সবচেয়ে বেশি রান (শীর্ষ ৫)

সবচেয়ে আক্রমণাত্মক নাজমুল

রানে সবচেয়ে ওপরে নেই নাজমুল হোসেনের নাম। তবে শান্ত ডাকনামের নাজমুল ব্যাট হাতে অশান্তই ছিলেন গ্রুপ পর্বে। প্রথম পর্বে যে ২৪ জন ব্যাটসম্যান কমপক্ষে ১০০ রান করেছেন তাঁদের মধ্যে স্ট্রাইকরেটে সবার সেরা রাজশাহী অধিনায়ক। ১৫৬.৭৭ স্ট্রাইকরেটে ৩০১ রান করেছেন নাজমুল। যারা ১০০ রান করেছেন তাঁদের মধ্যে স্ট্রাইকরেটে তাঁর কাছাকাছি আছেন জেমকন খুলনার শামীম হোসেন। ১৪৭.৪৩ স্ট্রাইকরেটে ১১৫ রান অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানের।

সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট

স্ট্রাইকরেটে সবার সেরা নাজমুল হোসেন।
ছবি: প্রথম আলো

ছক্কায়ও সবার সেরা নাজমুল
২১টি ছক্কা মেরেছেন নাজমুল হোসেন। এর ১১টিই বরিশালের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পথে মেরেছেন রাজশাহী অধিনায়ক। ছক্কায় এরপরই আছেন ঢাকার মোহাম্মদ নাঈম। ১৮টি ছক্কা বাংলাদেশের হয়ে ৬টি টি–টোয়েন্টি খেলা নাঈমের।

ছক্কার সেরা তিন

সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মোস্তাফিজ

সবচেয়ে বেশি রান করা লিটন দাসের মতো সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজুর রহমানও একটি ম্যাচ খেলেননি। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বোলার সাত ম্যাচে ৯.৭৫ গড়ে নিয়েছেন ১৬ উইকেট। কাটার মাস্টার রান দেওয়াতেই হিসেবি। বাঁহাতি পেসারের প্রতি ওভারে গড়ে রান উঠেছে মাত্র ৫.৭৪। জেমকন খুলনার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তো ৩.৫ ওভার বোলিং করে মাত্র ৫ রানেই ৪ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজ।

সবচেয়ে বেশি উইকেট মোস্তাফিজুর রহমানের।
ছবি: প্রথম আলো

ফরচুন বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম ১৪ উইকেট নিয়ে আছেন দুইয়ে। প্রথম পর্বে ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া একমাত্র বোলার রবিউল ইসলাম সেরা পাঁচে থাকা একমাত্র স্পিনার।

সবচেয়ে বেশি উইকেট (শীর্ষ পাঁচ)

সাকিব আল হাসান।
ছবি: প্রথম আলো

সবচেয়ে কিপটে সাকিব

আট ম্যাচে মাত্র ৫ উইকেট সাকিব আল হাসানের। যাঁরা কমপক্ষে ১০ ওভার বোলিং করেছেন, তাঁদের মধ্যে জেমকন খুলনার অলরাউন্ডারই অবশ্য রান খরচের হিসাবে সবচেয়ে কিপটে। সাকিবের বাঁহাতি স্পিনে ওভারপ্রতি রান উঠেছে মাত্র ৫.৭৩ করে। ০.০১ রান বেশি খরচ করে ইকোনমিতে দ্বিতীয় সেরা প্রথম পর্বের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মোস্তাফিজুর রহমান।

ইকোনমিতে (রান/ওভার) সেরা পাঁচ