ব্র্যাডম্যানের সামনে নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন টেন্ডুলকার
স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের বাড়িতে আমন্ত্রিত অতিথি হয়েই গিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। কিন্তু কিংবদন্তির সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতে রীতিমতো নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কথা বলারই সাহস পাচ্ছিলেন না। ভাগ্যিস, সেদিন তাঁর সঙ্গে শেন ওয়ার্ন ছিলেন!
আজ থেকে ২২ বছর আগের ঘটনা সেটি। সালটা ১৯৯৮। সেবার স্যার ব্র্যাডম্যানের ৯০তম জন্মদিনে শচীন টেন্ডুলকার আমন্ত্রণ পেলেন ডনের অ্যাডিলেডের বাড়িতে। এর আগেই তো ‘ছেলেটা একেবারে আমার মতো খেলে’ বলে ভারতীয় মাস্টার ব্লাস্টারের প্রশংসায় মেতেছিলেন সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারটি। নিজের জন্মদিনে তাই টেন্ডুলকারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, চোখের দেখাটা দেখবেন, আলাপটাও সেরে ফেলবেন বলে।
১৯৯৮ সালের ২৭ আগস্ট ব্র্যাডম্যানের বাড়িতে গিয়েই থরহরি কম্পমান টেন্ডুলকার। কী বলবেন কিংবদন্তির সঙ্গে। যাঁর নাম শুনেই ক্রিকেটার হয়েছেন। ক্রিকেট ইতিহাসের কত-না ঐতিহাসিক, রোমাঞ্চকর ঘটনা তাঁকে ঘিরে। সব সময় জেনে এসেছেন তাঁর চেয়ে বড় ক্রিকেটার আর দুনিয়াতে আসেনি—এমন মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে কীই–বা বলা যায়!
নিজের সেই অবস্থাটা এত দিন পর বলেছেন টেন্ডুলকার, ‘আমার জন্য দিনটা ছিল বিশাল। শেন ওয়ার্নই হোটেল থেকে আমাকে তুলে নিয়েছিল। গাড়ি চালাচ্ছিল সে-ই। ওয়ার্নও খুব চিন্তিত ছিল। বলছিল, “আমার খুব ভয় করছে। ওনার মতো বড় মাপের ব্যক্তিত্বের সামনে গিয়ে আমি কী বলব!” সত্যি কথা বলতে কি, একই মনোভাব ছিল আমার। সে উল্টো আমাকে বলেছিল, “তুমি যেহেতু ব্যাটসম্যান, তাই আগে তোমারই কথা বলা উচিত।”’
ডনের অ্যাডিলেডের বাড়িতে গিয়ে ভয়াবহ নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন টেন্ডুলকার। তাঁর বুক কাঁপছিল। ওয়ার্নকে নিচু স্বরে বলেছিলেন, ‘কথা তুমিই আগে বলো; তুমি যেহেতু অস্ট্রেলিয়ান। আমি তো বিদেশি।’
ওয়ার্ন তাঁকে প্রথম যে প্রশ্নটি করেছিলেন, সেটি হচ্ছে টেন্ডুলকারের সময় ক্রিকেটার হলে তিনি কত গড় রাখতে চাইতেন। ইতিহাসে ৯৯.৯৪ গড়ের মালিক স্মিত হেসে উত্তর দিয়েছিলেন ৭০-এর আশপাশে। টেন্ডুলকার জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘এত কম কেন, স্যার!’ অসম্ভব রসবোধসম্পন্ন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের উত্তরটা ছিল সোজাসাপটা, ‘৯০ বছরের বৃদ্ধের পক্ষে ৭০ গড়টা খুব খারাপ নয়।’