ভারত কেন একজন ‘সাকিব’ পায় না?

সাকিব আল হাসানের ।ফাইল ছবি প্রথম আলো

আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ভারত। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ের দুটিতেই অবস্থান দুইয়ে। স্পষ্টত তিন সংস্করণেই ভারতের দাপট। ব্যক্তিগত ব্যাটিং ও বোলিং র‌্যাঙ্কিংয়েও থাকে দলটির ক্রিকেটারদের আধিপত্য। সে তুলনায় অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের অবস্থান সুসংহত নয়। টেস্ট অলরাউন্ডারের তালিকায় তিন ও চার নম্বরে যথাক্রমে রবীন্দ্র জাদেজা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন থাকলেও ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে অবস্থানটা খুবই খারাপ। ওয়ানডেতে অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে ভারতের শুধু একজনই, জাদেজা আছেন নবম স্থানে। টি-টোয়েন্টিতে নেই একজনও।

অথচ এই তিনটি সংস্করণেরই অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের দাপট। টেস্টে সাকিব আছেন পাঁচ নম্বরে। আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বাংলাদেশের এই তারকা টি-টোয়েন্টির অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় আর ওয়ানডেতে আছেন শীর্ষে। একটা প্রশ্ন জাগতেই পারে—বেশির ভাগ সময়ে যে ভারত বিভিন্ন সংস্করণের র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে অবস্থা করে, সে দেশে সাকিব আল হাসানের মতো শীর্ষ মানের একজন অলরাউন্ডার নেই কেন?

জাদেজার সেরাটা ভারত সব সময় পায়নি।
ফাইল ছবি: এএফপি

এর যথার্থ কারণ খুঁজেছেন ভারতের সাবেক টেস্ট তারকা ভিভিএস লক্ষ্মণ। তাঁর মতে, ভারতের ক্রিকেটারদের খেলার চাপ বেশি থাকায় যথার্থ অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা হচ্ছে না। চাপ বেশি থাকা বলতে তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই বছরজুড়ে খেলোয়াড়দের ব্যস্ত থাকাকে বুঝিয়েছেন ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান লক্ষ্মণ।

ভারতে কেন ভালো অলরাউন্ডার নেই? এই প্রসঙ্গে ‘টাটা লিটেরেচার লাইভ স্পোটর্স যাত্রা’ অনুষ্ঠানে লক্ষ্মণ বলেন, ‘অলরাউন্ডারের ভূমিকা পালন করা খুব কঠিন। কপিল ভাই উইকেট নেওয়ার সঙ্গে রানও করতে পারতেন। তিনি ভারতকে ম্যাচ জেতাতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে চাপ বেশি থাকায় এ কাজটি করা বেশ কঠিন।’

কারও নাম উল্লেখ না করে লক্ষ্মণ বলেন, ‘কিছু খেলোয়াড়ের মধ্যে সে ঝলক ছিল। কিন্তু সব কৌশলের দিকে নজর দিতে গিয়ে বেশি চাপ পড়ে গেছে। তিন সংস্করণেই সমানভাবে নজর দিতে গিয়ে এটি করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে ভারতীয় ক্রিকেটারদের জন্য। একজন ছিল, যার মধ্যে ভালো অলরাউন্ডার হওয়ার মসলা ছিল। কিন্তু চোটে পড়ায় তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বোলিং নাকি শুধু ব্যাটিং করবে।’

হার্দিক পান্ডিয়া।
ফাইল ছবি: এএফপি

বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডারের তালিকায় থাকবেন কপিল দেব। তাঁর নেতৃত্বেই প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক কালে তুলনা করা হতো হার্দিক পান্ডিয়ার। শুরুতে আশা দেখালেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি পান্ডিয়া। পিঠে অস্ত্রোপচার করিয়ে এখন তো তেমন বলই করতে পারছেন না। সর্বশেষ আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে বল করতে পারেননি তিনি। এবারের আইপিএলেও করছেন না।

লক্ষ্মণ যার মধ্যে আদর্শ একজন অলরাউন্ডার হওয়ার ছায়া দেখেছেন, তিনি পান্ডিয়াই। তবে অনেকেই পান্ডিয়াকে কপিলের সঙ্গে তুলনা করলেও লক্ষ্মণ তা করতে নারাজ, ‘কিংবদন্তি কপিলের সঙ্গে কোনো অলরাউন্ডারের তুলনা করা ঠিক নয়। কপিল শুধু কপিলই। চাপ নেওয়ার বিবেচনায় তাঁর সঙ্গে কেবল মহেন্দ্র সিং ধোনি অথবা সুনীল গাভাস্কারের তুলনা হতে পারে।’