ভারত দলে যেভাবে এসেছিলেন ধোনি
ভারতের ক্রিকেট ইতিহাস লেখা হলে মহেন্দ্র সিং ধোনি নামে যে বড়সড় অধ্যায় থাকবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
অথচ ধোনি আসার আগে বিশ্বাস করা কষ্ট ছিল, ভারতের মাটি থেকে বিশ্বমানের কোনো উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান আসতে পারেন।
২০০৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে অভিষেকের পর ধীরে ধীরে ধোনি সবাইকে দেখিয়েছেন, উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক হিসেবে তিনি কতটা উঁচুমানের।
এক ধোনিই অধিনায়ক হয়ে ভারতকে জিতিয়েছেন ‘ত্রিরত্ন’—ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।
গল্পের মতো এক ক্যারিয়ার শেষ করে কিছুদিন আগে জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছেন এই কিংবদন্তি। কিন্তু জাতীয় দলে তাঁর ঢোকার রাস্তাটা কেমন ছিল?
কীভাবে নির্বাচকদের নজরে এলেন তিনি? কখন নির্বাচকেরা ঠিক মনে করলেন যে এই ছেলেটাকে সুযোগ দিয়ে দেখা যায়? সব প্রশ্নের উত্তর সম্প্রতি খোলাসা করেছেন সে সময়ের প্রধান নির্বাচক কিরণ মোরে, ধোনিকে দলে আনার ব্যাপারে যাঁর ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে বেশি।
মজার ব্যাপার হলো, কিরণ মোরে নিজেও ভারতের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ৪৯ টেস্ট ও ৫৪ ওয়ানডে। সে ক্ষেত্রে বলা যেতেই পারে, রত্ন চিনতে ভুল করেননি মোরে।
শুধু মোরেই নন, তার পরে নয়ন মঙ্গিয়া, সমীর দিঘে, সাবা করিম—কেউই যা করতে পারেননি, সেটাই করতে পারবেন ধোনি, এমনটাই ভেবেছিলেন মোরে। কী সেটা?
উইকেট সামলানোর পাশাপাশি ধুন্ধুমার ব্যাটিংও করতে পারতেন ধোনি, আধুনিক ক্রিকেটে উইকেটরক্ষকদের যে গুণটা থাকা বড্ড জরুরি। আর এটাই জাতীয় দলের দুয়ার খুলে দেয় ধোনির সামনে।
‘তখন রাহুল দ্রাবিড় উইকেটরক্ষণ সামলাত। কিন্তু তাঁর মূল দায়িত্ব উইকেটরক্ষণ ছিল না। তাই আমরা এমন একজনকে খুঁজছিলাম, যে কিনা ভালোভাবে উইকেট সামলানোর পাশাপাশি বোলারদের পেটাতেও পারে। যে রাহুলকে বিশ্রাম দিতে পারে’— ডব্লুভি রমনের পডকাস্ট ‘ইনসাইড আউট’-এ বলেন মোরে।
ধোনির মধ্যে এমন কিছু দেখেছিলেন মোরে, যা অন্য কারও মধ্যে ছিল না, ‘ও যেভাবে খেলত, সেটা অসাধারণ ছিল। ওকে কেনিয়ার বিপক্ষে ভারতের ‘এ’ দলের স্কোয়াডে রাখলাম। সেবার সে ৬০০ রানের বেশি করল। আমাদের জাতীয় দলে তত দিনে শেবাগ, যুবরাজরা চলে এসেছিল, কিন্তু ধোনির মতো পরিপূর্ণ প্যাকেজ আসায় দলটা যেন পূর্ণতা পেল।’