ভারতীয় ক্রিকেটের ‘রমরমা’র কৃতিত্ব সৌরভ দিলেন দ্রাবিড়কে

রাহুল দ্রাবিড়।ছবি: বিসিসিআই

দারুণ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট। চারদিকে কেবল সাফল্য। জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া থেকে কী দারুণ এক সিরিজ জিতে ফিরল তারা। প্রথম ম্যাচে শোচনীয় হারের পর দ্বিতীয় টেস্টেই ঘুরে দাঁড়ানো; এরপর ব্রিসবেনে রীতিমতো দ্বিতীয় সারির দল নিয়েও জিতে সিরিজ জয়ের গৌরব গায়ে মাখল তারা। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকেও উড়িয়ে দিল ভারত। এ যেন তুঙ্গে বৃহস্পতি অবস্থা!

কেবল ঘরে–বাইরে দুটি সিরিজ জয়ই নয়, ভারতের এই ‘রমরমা’ অবস্থাটা আসলে অন্য একটা দিক থেকেও। সেটি হচ্ছে তাদের ম্যাচ জেতানো তারকার আধিক্য। আর ভারতীয় ক্রিকেটের এই অবস্থার পেছনে অবদানটা কার জানেন?

ভারতের কিংবদন্তি অধিনায়ক ও বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীর কথায় সেটি বোঝা যাবে। সৌরভ এই কৃতিত্ব দিচ্ছেন তাঁর সাবেক সতীর্থ ও ভারতের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির (এনসিএ) দায়িত্বে থাকা আরেক ভারতীয় কিংবদন্তি রাহুল দ্রাবিড়কে।

সৌরভ ও দ্রাবিড় - যখন একসঙ্গে খেলতেন ভারত দলে।
ছবি: সংগৃহীত

ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ঐতিহাসিক ম্যাচটি ভারত জিতেছে এমন খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে, যাঁরা টেস্ট দলেই নিয়মিত নন। এরপর ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা তরুণ অক্ষর প্যাটেলের স্পিনের ভাষাই বুঝতে পারেননি। ঋষভ পন্ত, ওয়াশিংটন সুন্দররা তো অনেক দিন ধরেই ধারাবাহিক। পেস আক্রমণে কাকে ছেড়ে কাকে খেলানো হবে—এ নিয়ে মধুর সমস্যায় ভারতীয় নির্বাচকেরা। ব্যাপারটা এমন যে তরুণদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে পরীক্ষিত বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদেরই অনেক সময় ‘ম্লান’ মনে হচ্ছে।

বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ।
ছবি: এএফপি

মোট কথা তরুণদের হাত ধরেই ভয়ডরহীন ক্রিকেটে বিশ্বকে মুগ্ধ করে যাচ্ছে ভারত। প্রথম একাদশ তো বটেই, যেকোনো পরিস্থিতিতে মাঠে নামিয়ে দেওয়া তরুণেরাও যেন সে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি।

শুভমন গিল, ঋষভ পন্ত, অক্ষর প্যাটেল, ওয়াশিংটন সুন্দররা সবাই প্রায় ম্যাচজয়ী। এঁরা সবাই প্রমাণ করে দিয়েছেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে তাঁরা বিশ্বসেরা ক্রিকেটারদের ওপর নির্দ্বিধায় ছড়ি ঘোরাতে সক্ষম।

জাতীয় ক্রিকেট একাডেমিতে তরুণদের নিয়ে কাজ করেছেন দ্রাবিড়।
ছবি: বিসিসিআই

এ অসাধারণ ‘পাইপলাইন’ তৈরি করতে পেরেই ভারত বিশ্ব ক্রিকেটের শীর্ষে। আর এই ‘পাইপলাইন’ তৈরির মূল কারিগর হিসেবেই সৌরভ কৃতিত্ব দিয়েছেন তাঁরই এক সময়ের সতীর্থ দ্রাবিড়কে।

এনসিএ-র প্রধান কর্তা হিসেবে দ্রাবিড়ের দায়িত্ব যুব ক্রিকেটারদের ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তোলা। তাঁর অধীনেই তৈরি হয়েছেন শুভমন গিল, মোহাম্মদ সিরাজ, ঋষভ পন্ত, হনুমা বিহারি, মায়াঙ্ক আগারওয়ালদের মতো ক্রিকেটাররা। সৌরভ মনে করেন, রাহুল যত্ন নিয়ে ক্রিকেটারদের গড়েছেন বলেই ভারত আজ সাফল্য পাচ্ছে, ‘রাহুল এনসিএ-তে দুর্দান্ত কাজ করে যাচ্ছে। ওর হাতে তৈরি হওয়া ক্রিকেটাররা যখন যেখানে সুযোগ পেয়েছে, নিজেদের সাফল্যের সঙ্গে মেলে ধরেছে। নিজে হাতে রাহুল জুনিয়রদের গড়ে দিচ্ছে।’