‘ভারতীয় টিকা’ নয়, কোহলিরা নেবেন অ্যাস্ট্রাজেনেকা, কেন?

কোহলিরা ভারতীয় টিকা না নিয়ে নিচ্ছেন অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডছবি: রয়টার্স

আপাতত অপ্রত্যাশিত একটা ছুটি পেয়ে গেছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। কিন্তু এই ছুটি উপভোগের কিছু নেই। গোটা ভারতেই এখন কারোর ছুটি উপভোগের অবস্থা নেই। করোনায় জেরবার দেশে এখন কেবলই হাহাকার। প্রতিদিন বড় হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল, বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। তারপরও ছুটিটা যতটা সম্ভব উপভোগ করছেন ভারতীয় ক্রিকেটাররা। কিছুদিন পরই তাঁদের উড়াল দিতে হবে বিদেশ সফরে। ইংল্যান্ড বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল যে সামনেই। এরপরই আছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ। সফরের দৈর্ঘ্য হতে যাচ্ছে প্রায় চার মাস।

এ মুহূর্তে করোনার ঊর্ধ্বমুখী হারকে ঠেকাতে টিকাকরণের কোনো বিকল্প নেই। এটা মানছে পৃথিবীর প্রায় সব দেশ। অনেক দেশেই শুরু হয়েছে টিকাকরণ কার্যক্রম। ভারতে এটি শুরু হয়েছে বছরের শুরুর দিকে। আকাশপথে ভ্রমণের ক্ষেত্রেও টিকাকরণ নতুন স্বাভাবিক দুনিয়ায় এক আবশ্যিক বিষয়। ভারতীয় ক্রিকেটারদের ইংল্যান্ড যেতে হলে অবশ্যই টিকা নিয়ে রাখতে হবে। জানা গেছে, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা দ্রুতই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভাবিত যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ নামের টিকাটি নেবেন।

ভারতেও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদিত হয়। ভারতে আছে বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান—সেরাম ইনস্টিটিউট। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদন করছে তারাও। এদিকে ভারতের প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক তাদের নিজস্ব করোনা টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’ উদ্ভাবন করেছে। ভারতে সরকারি টিকাকরণ কর্মসূচিতেও এই কোভ্যাক্সিন টিকাটি ব্যবহার করছে। এ মুহূর্তে ১৮ ও তদূর্ধ্ব লোকজনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ আর ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ দুটি টিকাই। ভারতীয়রা যেকোনো টিকা নিতে পারছেন। তবে ভারতীয় ক্রিকেটারদের কোভ্যাক্সিন না দিয়ে কোভিশিল্ড দেওয়ার অবশ্য একটা কারণ আছে।

কোহলিরা যাচ্ছেন ইংল্যান্ড সফরে।
Nayir Iqbal

দুই ডোজে করোনার টিকা নিতে হয়। পৃথিবীতে এখনো পর্যন্ত ব্যবহার হওয়া প্রায় প্রতিটি করোনা টিকার ক্ষেত্রেই এই নিয়ম। আর এমন নিয়ম আর ইংল্যান্ড সফরের কারণেই ভারতীয় ক্রিকেট দল ‘ভারতীয় টিকা’ কোভ্যাক্সিন নিতে পারছে না। প্রথম ডোজের টিকা নিয়েই ইংল্যান্ড সফরে বেরিয়ে পড়বেন তাঁরা। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে যখন দ্বিতীয় ডোজের সময় হবে, তখন তাঁরা ইংল্যান্ডের মাটিতে। খেলোয়াড়েরা সবাই যেন দ্বিতীয় ডোজের টিকা সহজে পেয়ে যান, তাই তাঁদের যুক্তরাজ্যের টিকাই দেওয়া হচ্ছে। ইংল্যান্ডে সহজেই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনা যাবে—ভাবনাটা এমনই।

আইপিএল চলার সময়ই ভারতীয় ক্রিকেটারদের টিকাকরণ করতে চেয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। কিন্তু আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়ায় সেটি আর হয়নি। খেলা স্থগিত না হলে হয়তো কয়েক দিনের মধ্যেই বিসিসিআইয়ের ব্যবস্থাপনায় টিকা নিতেন কোহলি, বুমরা, রোহিতরা।