মাঠে সাকিব-তামিমদের আচরণই সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাঠে ক্রিকেটারদের আচরণ বড় আলোচনা-সমালোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে তিন বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নার-ক্যামেরন ব্যানক্রফটদের বল টেম্পারিং কাণ্ডের পর তো আরও বেশি।
দলের খোলনলচেই এরপর বদলে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। স্মিথ-ওয়ার্নাররা নিষিদ্ধ হয়েছেন, কোচ-অধিনায়কের জায়গায় বদল এসেছে। কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার আর অধিনায়ক টিম পেইনের অধীনে মাঠে অস্ট্রেলিয়ার আচরণে বদলও এসেছে। আইসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যই তা বলছে। সে তথ্যে বাংলাদেশের জন্য আছে তেতো স্বাদ দিয়ে যাওয়া এক সংবাদ।
মাঠে আচরণ কেমন হতে হবে, সেটি ঠিক করে দিয়েছে আইসিসির কোড অব কন্ডাক্ট বা আচরণবিধি। বল টেম্পারিং কাণ্ডের পর গত তিন বছরে যা অস্ট্রেলিয়া ভেঙেছে মাত্র দুবার। এর চেয়ে কম আচরণবিধি ভেঙেছে শুধু জিম্বাবুয়ে!
আচরণবিধি ভাঙার হিসাব করলে উল্টো দিকে আছে ইংল্যান্ড, ২০১৮ সালের এপ্রিলের পর থেকে স্টোকস-রুটরা আচরণবিধি ভেঙেছেন ১২ বার। এর চেয়ে বেশি আর কোনো দল ভাঙেনি।
তাহলে বাংলাদেশের জন্য তেতো স্বাদ দিয়ে যাওয়া তথ্য কোনটি? আইসিসির হিসাব জানাচ্ছে, গত তিন বছরে আচরণবিধি ভাঙার হিসাবে বাংলাদেশ আছে তালিকায় ইংল্যান্ডের পরেই, সাকিব-তামিমরা আচরণবিধি ভেঙেছেন ১১ বার। তবে হিসাবটা যখন করা হবে ম্যাচপ্রতি আচরণবিধি ভাঙার, তখন আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের ওপরে আর কেউ থাকবে না! ম্যাচপ্রতি বাংলাদেশ গড়ে ০.১২ বার আচরণবিধি ভেঙেছে, দুইয়ে থাকা ইংল্যান্ড ভেঙেছে ০.১১ বার।
মোট ডিমেরিট পয়েন্টের হিসাবে অবশ্য ইংল্যান্ড-বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে অনেক ওপরে আছে শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এখানে ব্যাখ্যা দেয় আচরণবিধি ভাঙার ধরণ।
ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা যে ১২ বার আচরণবিধি ভেঙেছেন, তার মধ্যে ১১ বারই অপরাধটা ছিল ‘লেভেল ১’ বা সবচেয়ে ছোট পর্যায়ের অপরাধ, যেগুলোর জন্য ডিমেরিট পয়েন্ট ১টি করে। শুধু জেসন রয় ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে ৮৫ রানে আউট হওয়ার সময় ‘লেভেল-২’ ধরনের আচরণবিধি ভেঙে পেয়েছেন ২টি ডিমেরিট পয়েন্ট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৬ ডিমেরিট পয়েন্টের ৫টিই নিকোলাস পুরানের! আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ফিল্ডিংয়ের সময় বুড়ো আঙুল দিয়ে খুঁচিয়ে বল টেম্পারিং করতে চেয়েছিলেন উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে ২০১৮ সালের সেই বিতর্কিত টেস্ট দুই দলেরই ডিমেরিট পয়েন্টের ঘরকে স্ফীত করেছে।
সেন্ট লুসিয়ায় সেই টেস্টের তৃতীয় দিনে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমালের বিরুদ্ধে বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগের পর পুরো শ্রীলঙ্কা দলই মাঠ ছেড়ে যায়। পরে ম্যাচ যখন শুরু হলো, শ্রীলঙ্কাকে সেই ঘটনার জন্য ২৪ ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১২ পয়েন্ট পান চান্ডিমাল। শ্রীলঙ্কার সে সময়ের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ও আশঙ্কা গুরুসিনহা পান ৬টি করে ডিমেরিট পয়েন্ট।