মিরপুর যেন ‘টি–টোয়েন্টিপুর’

২৯৮টি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ হয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেছবি: শামসুল হক

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম। হোম অব বাংলাদেশ ক্রিকেট। চাইলে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে হোম অব টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটও বলতে পারেন। রেকর্ড–পত্তরও সাক্ষী হিসেবে কথা বলবে আপনার হয়ে। কম তো নয়, এ পর্যন্ত ২৯৮টি স্বীকৃত টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছে শেরেবাংলায়। যেখানে অন্য কোনো ভেন্যু পৌনে ২০০ টি–টোয়েন্টি ম্যাচও আয়োজন করতে পারেনি।

বাংলাদেশের ক্রিকেট কতটা শেরেবাংলাকেন্দ্রিক, সেটির প্রমাণ দেয় এবারের বঙ্গবন্ধু টি–টোয়েন্টি কাপই। ২৪ ম্যাচের টুর্নামেন্ট, সব ম্যাচেরই ভেন্যু শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। এতে অবশ্য করোনাভাইরাসের বড় ভূমিকা। তবে করোনাভাইরাস শব্দটা আতঙ্ক হিসেবে দেখা দেওয়ার আগেও বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলোর বেশির ভাগ ম্যাচ শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই হয়েছে।

মিরপুরে যেখানে টি–টোয়েন্টি ম্যাচের সংখ্যা প্রায় ৩০০ ছুঁই ছুঁই, সেখানে বাংলাদেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টি–টোয়েন্টি আয়োজন করা চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ম্যাচ সংখ্যা মাত্র ৭৯টি। সারা বিশ্ব মিলিয়ে টি–টোয়েন্টি আয়োজনে শেরেবাংলার পরেই আছে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১৭১টি ম্যাচ হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভেন্যুটিতে।

এক ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি স্বীকৃত টি–টোয়েন্টি ম্যাচ

শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রথম স্বীকৃত টি–টোয়েন্টি ম্যাচ হয়েছে ২০১০ সালের ১১ এপ্রিল। জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি–টোয়েন্টির সেই ম্যাচে খেলে চট্টগ্রাম বিভাগ ও রাজশাহী বিভাগ। যেই ম্যাচে রাজশাহীর হয়ে খেলেন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান এইডেন ব্লিজার্ডও।

মিরপুরে প্রথম টি–টোয়েন্টি ম্যাচে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন মুক্তার আলী।
ছবি: প্রথম আলো

প্রথমে ব্যাট করে চট্টগ্রাম ১৯.৩ ওভারে অলআউট ১৩২ রানে। ফিফটি পেয়েছিলেন দলটির ওপেনার উত্তম সরকার। ২৯ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ রান করেছিলেন উত্তম। রাজশাহীর পেসার মুক্তার আলী ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। এই পারফরম্যান্স দিয়ে ম্যাচসেরাও হয়ে যান মুক্তার। ১৩৩ রানের লক্ষ্যটা ১৭.১ ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে ছুঁয়ে ফেলে রাজশাহী। ৩৭ বলে ৮ চারে ৫৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন নাঈম ইসলাম।

২০১০ সালে ১৫টি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ হয় শেরেবাংলায়। এরপর আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও আর বেশ কয়েকটি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের খেলা হয়েছে এখানে।

কাকতালীয়ভাবে শেরেবাংলায় প্রথম স্বীকৃত টি–টোয়েন্টির মতো প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচেও প্রথমে ব্যাট করা দল করে ১৩২ রান

শেরেবাংলায় প্রথম আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ম্যাচ হয় ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর। সিরিজের একমাত্র টি–টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। কাকতালীয়ভাবে এ মাঠের প্রথম টি–টোয়েন্টির মতো প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচেও প্রথমে ব্যাট করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে ১৩২ রান। রানটা ১ বল হাতে রেখে পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। ২৬ বলে অপরাজিত ৪১ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।

শেরেবাংলায় স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিব আল হাসানের।
ছবি: প্রথম আলো

সাকিব আল হাসান এই মাঠে ৯৩ ম্যাচে ১২৯ উইকেট নিয়েছেন, যা কিনা স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে এক ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড। ৭০ ম্যাচে ৯৬ উইকেট নিয়ে রুবেল হোসেন আছেন এরপরই।

ব্যাটিংয়ের রেকর্ডটা অবশ্য শেরেবাংলার নয়। ভারতের বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ৮৯ ম্যাচে ২৭৬২ রান করে এক ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির। দুইয়ে শেরেবাংলার মুশফিকুর রহিম।