মুশফিকের 'আগাম উদযাপনে'র ব্যাখ্যা দিলেন মাশরাফি

পান্ডিয়াকে টানা দুটি চার মেরে মু​শফিকের সেই উদযাপন। ছবি: এএফপি
পান্ডিয়াকে টানা দুটি চার মেরে মু​শফিকের সেই উদযাপন। ছবি: এএফপি

৫ বলে ১০ রান। টানা দুটি চারে সমীকরণটাকে ৩ বলে ২ করে দিলেন মুশফিকুর রহিম। দুটি চার মেরেই কী উচ্ছ্বাস! মুষ্টিবদ্ধ হাত, চোখেমুখে উপচে পড়া উন্মাদনা! যেন জয়ের রেখাটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন। দেখারই কথা। সমীকরণ তখন পানির মতো সহজ। ৩ বলে ২ রান! ক্রিজে দুজনই সেট ব্যাটসম্যান, দুজনই বেশ অভিজ্ঞ। শুধু মুশফিক কেন, পুরো বাংলাদেশ তখন জয়ের আশায় বুঁদ হয়ে আছে। 

কিন্তু উচ্ছ্বাসটা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের উদযাপনে রূপ নিতে পারল না। তিন বল আগেই যে উদযাপন করলেন মুশফিক, সেটিই বাংলাদেশের শেষ উদযাপন হয়ে থাকল। একটু কি দ্রুতই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন মুশফিক? সেই উদযাপন আরেকটু পরে হলেই কি ভালো হতো? সেই উদযাপন কি মুশফিকের মনোযোগও সরিয়ে দেয়নি? ঠান্ডা মাথায় একটি সিঙ্গেল বের করে নিলেও হয়, তিনি উড়িয়ে মারতে গিয়েই তো পথ হারাল বাংলাদেশ।
এখন এসব প্রশ্ন তোলা সহজ। উঠছেও। আসলে ম্যাচের পরিস্থিতিতে চাপের জগদ্দল পাথর যেন ওই দুটি চার দিয়ে বের করে দিয়েছিলেন মুশফিক। এ কারণে হয়তো ভেতর থেকেই অমন স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ বের হয়ে এসেছিল মুশফিকের।
মাশরাফির কথাতেও আছে চাপের মুখে এই সহজ হিসেব গুলিয়ে ফেলার আক্ষেপ, ‘ওই সময়টায় আরেকটু হিসেব করে খেললেই হতো, আমাদের এত ঝুঁকিতে পড়তে হতো না। বৃত্তের মধ্যে কোনো ফিল্ডার ছিল না। যদি এক রান নিতাম (যে বলটিতে মুশফিক আউট হলো), আমরাই অনেক ভালো অবস্থানে থাকতাম। ওভাবে চিন্তা করতে পারলে তো ভালোই হতো। কিন্তু আমরা সেটা পারিনি।’
মুশফিকের সেই ‘আগাম উদযাপন’ নিয়েও ব্যাখ্যা দিলেন মাশরাফি। যে ম্যাচে সাব্বির অমন ক্যাচ নিয়েও নিশ্চুপ উদযাপন করে গেলেন, সৌম্য সম্ভাব্য টুর্নামেন্ট সেরা ক্যাচ নিয়েও শুধু সৌম্য হাসিতেই উচ্ছ্বাসটায় বাঁধ দিলেন, যে ম্যাচে বরং প্রতিটি ছোট ছোট মুহূর্তে ভারতের পান্ডিয়া-জাদেজারা বেশি উদযাপন করে যাচ্ছিলেন, বারবার মনে হচ্ছিল স্নায়ুর ওপর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দেরই নিয়ন্ত্রণ বেশি, সেখানে কিনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তটিতেই স্নায়ুচাপ পেয়ে বসল মুশফিককে!
মাশরাফিও বললেন সেটি, ‘মুশফিক আরও একটু সতর্ক হতে পারত। কিন্তু এটাও ভাবুন, ও-ই আমাদের এত কাছে নিয়ে এসেছে। হয়তো এ কারণেই ওভাবে উদযাপন করেছে। এটা নিয়ে আসলে নেতিবাচক ভাবার কিছু নেই। কারণ যেকোনো ব্যাটসম্যানই অমন সময়ে দুটি চার মারলে উত্তেজিত হয়ে যাওয়ার কথা।’
উত্তেজনাটা শেষ পর্যন্ত সুখকর পরিণতি এনে দিতে পারল না, এটাই ষোলো কোটি মানুষের আক্ষেপ!