মোস্তাফিজদের লড়াইয়ের পুঁজি বাড়তে দিলেন না বুমরা

বুমরা ত্রাস ছড়িয়েছেন।ছবি: আইপিএল

২০১৪ সালের পর দুই দলের মধ্যে ৯ ম্যাচে এই প্রথম আগে ব্যাটিং পেল রাজস্থান রয়্যালস। মুম্বাই ইন্ডিয়ানস সেদিন নিজেদের মাঠ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামেই খেলেছে। সে ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৮৯ রান করেও হেরে গিয়েছিল রাজস্থান।

এবার ম্যাচটা দিল্লিতে। সেই রাজস্থান এই রাজস্থানে অনেক ফারাক, সেই মুম্বাই এই মুম্বাইয়েও। এবার ফলটা কী হবে? ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ পিচে মোস্তাফিজুর রহমানের দল রাজস্থান আজ আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে করেছে ১৭১ রান।

যে পিচে ১৯০-এর নিচে রানকেও অনেকের কাছে যথেষ্ট বলে মনে হচ্ছে না, সে পিচে মোস্তাফিজদের লড়াইয়ের জন্য আরও বেশি পুঁজি এনে দিতে পারেনি রাজস্থান, তার প্রধান—হয়তো একমাত্রও—কারণ যশপ্রীত বুমরা।

অনেক দিন পর বুমরাকে এভাবে ইয়র্কারের বন্যা বইয়ে দিতে দেখা গেল! মুম্বাইয়ের অন্য বোলারদের কেউ যেখানে ওভারপ্রতি গড়ে রান দেওয়ার হারটাকে সাড়ে সাতের নিচে রাখতে পারেননি, ট্রেন্ট বোল্ট রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি গড়ে ৯-এর ওপরে, সেখানে বুমরার বোলিং বিশ্লেষণ—৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট! কী চোখধাঁধানো নিয়ন্ত্রণই না দেখালেন ভারতীয় ফাস্ট বোলার!

বুমরার ২৪ বলের মধ্যে ১২টিতেই কোনো রান নিতে পারেনি রাজস্থান। তাঁর বলে বাউন্ডারি হাঁকানো বলতে ইনিংসের দ্বিতীয় ও তাঁর প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে জস বাটলারের কোনোরকমে ব্যাটে লেগে হয়ে যাওয়া একটা চার! শেষ পর্যন্ত যদি মুম্বাই ম্যাচটা জিতে যায়, হয়তো বুমরার চারটা ওভারই হয়ে থাকবে ব্যবধানসূচক। আরও নির্দিষ্ট করে বললে তাঁর শেষের দুই ওভার।

রাজস্থান ইনিংসের শুরুতে ঝড় তোলেন বাটলার-জসওয়াল।
ছবি: আইপিএল

১৬ ওভার শেষেও রাজস্থানের রান ছিল ২ উইকেটে ১৪০। ক্রিজে ছিলেন দুই সেট ব্যাটসম্যান সঞ্জু স্যামসন ও শিবম দুবে। অধিনায়ক স্যামসনই বেশি আগ্রাসী ছিলেন তখন, সে সময় তাঁর রান ছিল ২৩ বলে ৩৯। অন্যদিকে দুবে অপরাজিত ছিলেন ২১ বলে ২৪ রানে। কিন্তু ১৭তম ওভারে বুমরা এসে সব হিসাব পাল্টে দিলেন।

১৭তম ওভারে দিলেন ৫ রান, ১৯তম ওভারে—তাঁর ব্যক্তিগত চতুর্থ ওভার—দুবের উইকেট নিয়ে রান দিলেন মাত্র ৪টি! এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসে সে ওভারে বুমরা রান দিয়েছিলেন ৬টি, চতুর্থ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১ রান। ৪ ওভার শেষে রাজস্থানের রান ছিল ২০!

অথচ বুমরা যখন ব্যাটসম্যানদের বিবশ করে রেখেছেন, মুম্বাইয়ের অন্য বোলারদের ওপর বেশ ঝাল ঝেড়েছেন রাজস্থানের অন্য ব্যাটসম্যানরা। শুরুটা জস বাটলারকে দিয়ে। ৪৬ বলে ৬৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ৪১ রানই ইংলিশ ওপেনারের। একবার রান আউট ও একবার ক্যাচ মিসে দুই জীবন পাওয়া ইনিংসে ৩২ বলের ইনিংসে চার-ছক্কা সমান ৩টি করে। রাহুল চাহারের বলে তিনি আউট হন, অথচ তাঁর আগেই চার বোলারকে কাজে লাগানো হয়ে গেছে মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মার।

স্যামসন করেছেন ৪২ রান।
ছবি: আইপিএল

না লাগিয়ে উপায়ও ছিল না! একদিকে বাটলার, অন্যদিকে যশস্বী জয়সওয়ালও যে কম যাননি। রাজস্থানের হয়ে খেলা মুম্বাইয়ের ছেলে জয়সওয়াল আউট হওয়ার আগে করেন ২০ বলে ৩২ রান। মুম্বাইয়ের হয়ে খেলা রাজস্থানের ছেলে রাহুল চাহারের বলে যখন আউট হন তিনি, ইনিংসের ৯.৫ ওভারে রাজস্থানের রান ২ উইকেটে ৯১।

সেখান থেকে আক্রমণের ব্যাটনটা তুলে নেন অধিনায়ক স্যামসন। ১৮তম ওভারে বোল্টের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৭ বলে ৫ চারে তিনি করেন ৪২ রান। ৩১ বলে ৩৫ রান করা দুবেও স্যামসন আউট হওয়ার পর আর বেশিক্ষণ টেকেননি। শেষ ৪ ওভারে তাই রাজস্থান ২ উইকেট হারিয়ে তুলতে পারে ৩১ রান।

প্রথম চার ও শেষ চার—এই ৮ ওভারে ৫১ রান। এর মধ্যে চারটি ওভার বুমরার ছিল কিনা!