ম্যাকেঞ্জির কখনো মনে হয় বাংলাদেশই বাংলাদেশের 'প্রতিপক্ষ'

সব ধরনের আলোচনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে খেলতে পারবে বাংলাদেশ? ছবি: প্রথম আলো
সব ধরনের আলোচনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে খেলতে পারবে বাংলাদেশ? ছবি: প্রথম আলো
খারাপ করলে তুমুল সমালোচনা। একটু ভালো করলেই প্রশংসার বন্যা। বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ অনুরোধ করছেন, ধৈর্য ধরতে। দুঃসময়েও তাঁদের ওপর আস্থা রাখতে।


শুরুটা বার্মিংহাম থেকে। বিশ্বকাপে ভারত ম্যাচ দিয়ে শুরু। এর পর লর্ডসে পাকিস্তান ম্যাচ, শ্রীলঙ্কায় টানা তিন ওয়ানডের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে বড় ব্যবধানে হার। টানা পরাজয়ে ক্লান্ত বাংলাদেশ জয়ের দেখা পেয়েছে আড়াই মাস পর।

কাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়টাও এসেছে কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে। তবুও স্বস্তি, পরাজয়ের বৃত্ত থেকে তো বের হওয়া গেল। মনস্তাত্ত্বিক খেলা ক্রিকেটে একটা জয় পারে পুরো দলকে বদলে দিতে। তলানিতে গিয়ে ঠেকা আত্মবিশ্বাস মুহূর্তেই উঠিয়ে দিতে পারে উঁচুতে। সাকিবদের মুখে হাসি ফিরেছে সে কারণেই। জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে যেন একটু দম নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা ।

মাঝে বড় ঝড়ই গেছে বাংলাদেশ দলের ওপর। খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। দলের ব্যাটিং কোচে নিল ম্যাকেঞ্জির আপত্তিটা এখানেই। খারাপ সময়ে যেভাবে তুলোধুনা করা হয় ক্রিকেটারদের, তিনি মনে করেন এতে আরও বেশি চাপে পড়ে যায় দল, ‘যদি হারের কথাই ভাবতাম তাহলে এখানে থাকতাম না। আমাদের যে প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে এবং তাদের যে প্রয়োগ ক্ষমতা, আমি মনে করি প্রতি ম্যাচেই আমাদের জেতার সুযোগ আছে। কখনো কখনো মনে হয় আমাদের সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ আমরা নিজেরাই ।নিজেরাই নিজেদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করি। আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রাখছি। দর্শক-সংবাদমাধ্যমকেও তাই রাখতে হবে। ওরা (খেলোয়াড়) যন্ত্র নয়, মানুষ। তাদের পাশে থাকতে হবে, সমর্থন দিতে হবে। কাল যদি আবার হারি, পরের ম্যাচ নিশ্চয়ই জিতব। আমরা তো হারতে নামি না। বাংলাদেশ ভয়ডরহীন শতভাগ ইতিবাচক ক্রিকেট খেলবে।’

কাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আফিফ হোসেন ও মোসাদ্দেক হোসেন যেভাবে খেলেছেন, ভীষণ খুশি ম্যাকেঞ্জি। লিটন দাস, সৌম্য সরকারের মতো যারা ভালো করতে পারছেন না, তাঁদের হয়ে ব্যাট ধরছেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ। কেউ খারাপ খেললে দ্রুতই তাঁকে ছুড়ে ফেলার পক্ষে নন ম্যাকেঞ্জি। আজ বিকেলে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে তিনি বারবার বলতে চাইলেন, সুসময়-দুঃসময় ভরসা রাখতে হয় খেলোয়াড়দের ওপর, ‘অন্য বড় দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ক্রিকেট নিয়ে তুমুল আগ্রহ-আবেগ। যখন দল ভালো খেলে সবাই উজ্জীবিত থাকে। খারাপ সময়ে সবাই যেন খেলা ভুলে যায়। খেলোয়াড়েরা ভীষণ চাপে পড়েছিল। এই চাপটা আবার তারাই সরিয়ে ফেলেছে। আমাদের খেলোয়াড়েরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলেছে। আমাদের ক্রিকেটকে এভাবেই এগিয়ে নিতে চাই। কাল দেখুন আফিফ এল, প্রথম বলেই চার মারল। পরে আরও কিছু দেখার মতো বাউন্ডারি পেল। পরের ওভারে সৈকতও অসাধারণ দুটি ছক্কা মারল। সবার সম্মিলিত চেষ্টা ছিল। যেটা বললেন, কোনো ভয় ছাড়া এটি একটি ছিল দলীয় প্রচেষ্টা।’