যে রোগ পিছু তাড়া করেছে টেন্ডুলকারকে

শচীন টেন্ডুলকার।ফাইল ছবি

ক্যারিয়ারে একটা বড় সময়জুড়ে প্রায়ই ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন শচীন টেন্ডুলকার। ব্যাপারটি রীতিমতো অসুখে পরিণত হয়েছিল লিটল মাস্টারের। ২৪ বছরের ক্যারিয়ারের বহুদিন ব্যাপারটি ভুগিয়েছে তাঁকে।

প্রতিটি ম্যাচের আগে প্রচণ্ড উৎকণ্ঠায় থাকতেন ভারতের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান। আর সেই উৎকণ্ঠা রাতের ঘুম কেড়ে নিত তাঁর। টেন্ডুলকার জানিয়েছেন, ম্যাচের আগে রাতের পর রাত জেগে থাকার বিষয়টি চলেছে ১০ থেকে ১২ বছর।

সম্প্রতি এক আলাপচারিতায় ক্যারিয়ারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন এ কিংবদন্তি। ক্যারিয়ার সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি অনুধাবন করতে পারেন নিজের সমস্যাটা, ‘সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি বুঝতে পারি, খেলার জন্য শুধু শারীরিক নয়, মানসিক প্রস্তুতিও থাকা প্রয়োজন। যেকোনো ম্যাচের আগেই নিজেকে মানসিকভাবে তৈরি করা খুব জরুরি। খেলার চার থেকে পাঁচ দিন আগে থেকেই আমার কল্পনায় খেলাটা শুরু হয়ে যেত। প্রচণ্ড উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগতাম।’

বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই টেস্টে সেঞ্চুরির পর টেন্ডুলকার।
ছবি: টুইটার

টেন্ডুলকার আজ এত বছর পরেও সেই দিনগুলোর কথা মনে করতে পারেন স্পষ্ট, ‘ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ থেকে ১২ বছর আমি উদ্বেগে কাটিয়েছি। ম্যাচের আগে রাতের পর রাত আমি ঘুমাতে পারতাম না। পরে বুঝতে পারি, এসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই। ম্যাচের আগে আমার ঘুম হবে না। এ ব্যাপারেকেই নিজের ম্যাচ-প্রস্তুতির অংশ বানাতে হবে। এটা নিয়ে ভাবা ছেড়ে দিয়েছিলাম।’

ক্যারিয়ারে খারাপ সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার বিদ্যা শিখেছেন বলে জানিয়েছেন টেন্ডুলকার। আর সমস্যার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সঙ্গেই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজে পাওয়া যায় বলে মত ভারতের সর্বকালের সেরা তারকার, ‘মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখা খুব জরুরি। শারীরিক চোটে ফিজিও-ট্রেনাররা সাহায্য করেন। একইভাবে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কালেও কারও না কারও সাহায্য লাগে। সাধারণত, এমন সময়ে প্রিয়জনের সান্নিধ্য সবচেয়ে বেশি শান্তি দিতে পারে। তবে এমন পরিস্থিতে মানিয়ে চলাই গুরুত্বপূর্ণ। সমস্যার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারলেই এর সমাধান খুঁজে পাওয়া সম্ভব।’

শচীন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলি।
ফাইল ছবি

বিরাট কোহলির যেদিন প্রথম তাঁর সতীর্থ হলেন, সেদিন একটা মজার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনা উল্লেখ করেছেন টেন্ডুলকার। বলেছেন কোহলির সঙ্গে তাঁর পরিচয়ের শুরুটাই ছিল অদ্ভুত, ‘আমি ড্রেসিংরুমে বসে আছি, হঠাৎ কোহলি ছুটে এসে আমার পা ছোঁয়। আমি খুবই বিব্রত হই। ওকে বলি, এসব কী করছ! ড্রেসিংরুমে এসব করতে হয় না। আমি বুঝতে পারিনি কোহলি কেন এমন করল। পরে বুঝতে পারি, পুরোটাই মজা করে করা। যুবরাজ সিং, মুনাফ প্যাটেল, হরভজন সিংরা নতুন দলে আসা কোহলিকে বলেছিল, দলে ঢুকলেই নাকি আমার পা জড়িয়ে ধরতে হয়। বোকার মতো কোহলিও সেটি বিশ্বাস করে।’