যেখানে ধোনি ছাড়া জায়গা হয়নি কোনো ছেলের

উইকেটের পেছনে অ্যালিসা হিলি। পৌঁছে গেলেন অনন্য উচ্চতায়।ছবি: ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া

এত দিন রেকর্ডটা ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির। আধুনিক ক্রিকেট উইকেটরক্ষকদের জন্য নিজেকে আদর্শ বানিয়ে রেখেছেন ধোনি। স্বভাবতই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশিবার ডিসমিসালের রেকর্ডটি ছিল তাঁর দখলে। এবার সে রেকর্ড ধোনির হাতছাড়া হলো। তবে কোনো পুরুষ উইকেটরক্ষক ধোনির এই রেকর্ড ভাঙতে পারেননি। আজ অস্ট্রেলিয়ার মেয়ে ক্রিকেট দলের উইকেটকিপার অ্যালিসা হিলি টপকে গেছেন ধোনিকে।

আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে ৯৯ ম্যাচে হিলির ডিসমিসাল ৯২টি। আর ৯৭ ম্যাচে ৯১ বার ডিসমিসাল করে রেকর্ডটা ছিল ধোনির। ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেট মিলিয়ে কীর্তিটি শুধুই হিলির। এরই মাঝে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলায় নিজের নামের পাশে আর কোনো ডিসমিসাল যোগ করা হচ্ছে না। ফলে প্রথম কোনো ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ডিসমিসালের সেঞ্চুরি করার পথে হিলিকে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে না।

অ্যালিসা হিলির একটি পরিচয় অনেকেই জানেন, মিচেল স্টার্কের স্ত্রী তিনি। তবে তাঁর অন্য পরিচয়টাই হয়তো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উইকেটের পেছনে এত দুর্দান্ত পারফরম্যান্সটা যে সে সূত্রেই পেছনে। অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক ইয়ান হিলির ভাতিজির রেকর্ডটা হয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান তিন ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে। ব্রিসবেনে অ্যালান বোর্ডার ফিল্ডেই কীর্তিটা বুঝে নিয়েছেন ৩০ বছর বয়সী হিলি।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ডিসমিসালে এ দুজনের পরই আছেন ইংল্যান্ডের নারী ক্রিকেটার সারা টেলর। টি-টোয়েন্টিতে ৭৪ বার ডিসমিসাল করেছেন। এরপরই আছেন নিউজিল্যান্ডের নারী ক্রিকেটার র‍্যাচেল প্রিস্ট (৭২) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেরিসা আগুইলেরিয়া (৭০)। শীর্ষ পাঁচে ধোনি ছাড়া ছাড়া জায়গা পাননি কোনো পুরুষ। ছয় ও সাতেও আছেন দুই নারী। ভারতের তানিয়া ভাটিয়া মাত্র তিন বছরের ক্যারিয়ারেই ৬৭টি ডিসমিসাল অর্জন করেছেন। এর পর আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ত্রিশা চেট্টি (৬৪)।

এরপরই সুযোগ মিলেছে কোনো পুরুষ ক্রিকেটারের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দীনেশ রামদিন (৬৩) এর চেয়ে দুইটি ডিসমিসাল কম বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমের।

ক্রিকেটের তিন সংস্করণে সবচেয়ে বেশি ডিসমিসালের রেকর্ডটা দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক উইকেটকিপার মার্ক বাউচারের। ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ৪৬৭ ম্যাচে তাঁর ডিসমিসাল ৯৯৮টি। বাউচারের পরই আছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি উইকেটকিপার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। তাঁর ৯০৫ ডিসমিসাল ৩৯৬ ম্যাচে। গিলক্রিস্টের পর আছেন ধোনি। ৫৩৮ ম্যাচে ৮২৯ বার ডিসমিসাল ভারতের সাবেক অধিনায়কের।

গত মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়া ধোনি ভারতের হয়ে খেলেছেন ৩৫০টি ওয়ানডে, ৯০ টেস্ট ও ৯৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ডও ধোনির। তিনি ৩৩২টি ম্যাচে খেলেছেন অধিনায়কত্বের আর্ম ব্যান্ড পরে। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে দারুণ দক্ষতায় বল তালুবন্দী করেছেন, স্টাম্পিংয়েও ধোনির জুড়ি মেলা ভার ছিল। ক্রিকেটের তিন সংস্করণে সব মিলিয়ে ধোনি ১৯৫টি স্টাম্পিং করেছেন। যে রেকর্ড আর কোনো উইকেটকিপারেরই নেই।