যেখানে মিলে যান গিলক্রিস্ট–জাভেদ ওমর

কীভাবে মিলে গেলেন দুজন?ফাইল ছবি

স্যাম কারেন ভালোই ব্যাটিং করেন। বেন স্টোকসের বদলি হিসেবে ইংল্যান্ড দলে অলরাউন্ডার হিসেবে খেলছেন এই বাঁহাতি। ক্যারিয়ারের প্রথম সাত টেস্টে ৩৬-এর ওপর গড় আর তিনটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখাচ্ছিল ইংল্যান্ডকে। সেই কারেন কাল গড়লেন এক লজ্জার রেকর্ড।

লর্ডস টেস্টে মোট ৬ মিনিট ব্যাট করেছেন কারেন। এর মধ্যে আউট হয়েছেন দুবার। দুবারই প্রথম বলে। টেস্টে দুই ইনিংসে শূন্য পাওয়াই বিরল ঘটনা। সেখানে প্রথম বলেই জোড়া চশমা পাওয়া তো আরও বিরল। লর্ডসে এমন কিছু এই প্রথম।

অন্তত একবার কিং পেয়ার দেখা দলগুলো
ছবি: প্রথম আলো

টেস্টে দুই ইনিংসে শূন্য পেলে বলা হয় জোড়া চশমা। আর সে কাণ্ডটা যদি হয় প্রথম বলেই? একে ডাকা হয় কিং পেয়ার বলে। এই রাজকীয় ব্যাপার-স্যাপার হোম অব ক্রিকেট দেখেনি কখনো। কাল দুবার সে দৃশ্য দেখার সম্ভাবনা জেগেছিল। প্রথম ইনিংসে গোল্ডেন ডাক পেয়েছিলেন হাসিব হামিদ। কাল অবশ্য প্রথম বলে আর আউট হননি। কিন্তু স্যাম কারেন সেটা করতে পারেননি। মোহাম্মদ সিরাজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।

অস্ট্রেলিয়া বেশ এগিয়ে ছিল এই কাজে
ছবি: প্রথম আলো

টেস্ট ক্রিকেটে কিং পেয়ার যে অনন্য ঘটনা সেটা আগেই বলা হয়েছে। কতটা? সেটা জানতে এই পেয়ার পাওয়া ব্যাটসম্যানের সংখ্যা বললেই চলছে, মাত্র ২২। এবং কোনো ব্যাটসম্যানকেই একাধিকবার এই দুর্ভাগ্য সহ্য করতে হয়নি।

একই ভেন্যুতে একাধিকবার এ ঘটনা খুব কম দেখা গেছে
ছবি: প্রথম আলো

কারেনের আগে সর্বশেষ কিং পেয়ার পাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুঃস্বপ্নের টেস্ট সিরিজে স্যাবাইনা পার্কে দুই ইনিংসেই প্রথম বলে আউট হয়েছিলেন নুরুল হাসান। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে এমন কিছু দেখতে হয়েছিল জাভেদ ওমরকে। ২০০৭ সালে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে দুই ইনিংসেই প্রথম বলে আউট হয়েছিলেন এই ওপেনার।

ভালোবাসার বন্ধন!
ছবি: প্রথম আলো

ইতিহাসে সবচেয়ে প্রথম এ দুঃখ পেতে হয়েছিল উইলিয়াম অ্যাটওয়েলকে। ১৮৯২ সালে সিডনি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ‘কিং পেয়ার’ পেয়েছিলেন তিনি। এর পরের ১০০ বছর শুধু প্রতিপক্ষকেই এমন ‘উপহার’ দিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া। সর্বোচ্চ ছয়বার প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে ‘কিং পেয়ার’ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তারা প্রথমবার এমন দুঃস্বপ্ন দেখেছে ২০০১ সালে। বিখ্যাত সেই কলকাতা টেস্টে হরভজন সিংয়ের হ্যাটট্রিকের শিকার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিং পেয়ারও জুটেছিল অ্যাডাম গিলক্রিস্টের।

অস্ট্রেলিয়ার ঠিক উল্টো দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম দিকে এত বেশি ভগ্ন দশা ছিল তাদের, এই রেকর্ডে বারবার তাদের নাম উঠেছে। সর্বোচ্চ পাঁচবার কিং পেয়ার দেখেছেন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা। যার সর্বশেষ ঘটনা ১৯৯৫ সালের।

এ চার দেশ এখনো এ লজ্জা পায়নি
ছবি: প্রথম আলো

ওদিকে শ্রীলঙ্কার ঘটনাটি সবচেয়ে বিস্ময়ের। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তিন বার এ ঘটনার শিকার তারা। তিনবার তাদের এ দুঃখ দিয়েছে পাকিস্তান। এমন ভালোবাসা শুধু দক্ষিণ আফ্রিকা আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যেই আর দেখা গেছে।

পাকিস্তান অন্য দলগুলোকে এ লজ্জা উপহার দিয়েছে পাঁচবার। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান কিং পেয়ার পাননি। প্রায় এক শ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটের অংশ ওয়েস্ট ইন্ডিজও পায়নি এমন লজ্জা।