যেন টেস্টই খেললেন মুমিনুল

টেস্টের মত ব্যাটিং করেই সেঞ্চুির করলেন মুমিনুল হক। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেপ্রথম আলো

ফ্লিক শটটা খুব প্রিয় তাঁর। পায়ের আশেপাশে বল পেলেই হলো। কবজি ঘুরিয়ে বল পাঠিয়ে দেন স্কয়ার লেগ, মিড উইকেটে। আজ সারাদিন জুড়ে ব্যাট করে টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক বেশ কয়েকবারই খেললেন প্রিয় শটটি। ওটিস গিবসন একাদশের বোলারদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিয়েছেন। বাধ্য করেছেন নিজের প্যাডে বল করাতে। সেই সুযোগটাই নিয়ে করেছেন সেঞ্চুরি।

প্রস্তুতি ম্যাচের দ্বিতীয় দিন সকাল সকাল ব্যাটিংয়ে নেমে ১১৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন রায়ান কুক একাদশের অধিনায়ক মুমিনুল। অন্য ব্যাটসম্যানদের যেখানে নড়বড়ে লেগেছে, সেখানে মুমিনুল ছিলেন ব্যতিক্রম। আজ সারাদিন তাঁর ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি ৭ মাস পর খেলছেন। উল্টো মনে হয়েছে করোনা বিরতির আগে যেখানে থেমেছিলেন, সেখান থেকেই শুরু করেছেন আবার। করোনার আগে নিজের খেলা সর্বশেষ টেস্টে যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই সেঞ্চুরি করেছিলেন!

মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে মুমিনুলের জুটি হয়েছে ১৫৭ রানের। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে
প্রথম আলো

কিছুদিন আগে অনুশীলনে টেস্ট ম্যাচের আমেজ পেতে সাদা জার্সি পরে ব্যাটিং করেছেন মুমিনুল। প্রস্তুতি ম্যাচটাকেও টেস্ট ম্যাচ ভেবেই খেলেছেন তিনি। অবশ্য সকালে গিবসন একাদশের দুই পেসার ইবাদত হোসেন ও হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত বোলিংও মুমিনুলের মধ্যে টেস্ট ম্যাচের মেজাজ আনতে ভূমিকা রেখেছে। রায়ান কুক একাদশ দ্রুতই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে। তবে জাতীয় দলেও অনেকবার এমন পরিস্থিততে পড়া মুমিনুল সহজেই পরিস্থিতি সামলে নেন।

সেঞ্চুরির পথে মুমিনুল হক। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে
প্রথম আলো

এরপর টেস্ট ইনিংস যেভাবে গড়েন, সেভাবেই খেলেছেন। দিনের প্রথম সেশনটা দিয়েছেন বোলারদের। বাকি সময়টা দাপট দেখিয়েছেন। ৯৭ বল খেলে ফিফটি। শেষ সেশনে একবারের জন্যও আউট হওয়ার সুযোগ না দিয়ে ১৭৮ বল খেলে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। পাঁচ বাউন্ডারি ও এক ছক্কা ছিল মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে। বিকেল ৫টায় মাঠ ছাড়ার সময় ২২০ বলে ১১৭ রান অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল।

দুই দিনের ম্যাচ শেষে নিজের ব্যাটিং নিয়ে মুমিনুল বলেছেন, ‘চেষ্টা করছিলাম টেস্ট ম্যাচে যে রকম পরিবেশ থাকে, যে রকম অবস্থা থাকে ওইভাবে শুরু করার। ব্যাটসম্যানরা যেন রানের জন্য না খেলে। আমরা যেন সারাটা দিন ব্যাটিং করতে পারি। কন্ডিশন ও আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে খেলার ভেতরে অনেকদিন ছিলাম না। এই জন্যই আমরা এভাবে ব্যাটিং করেছি।’

মুমিনুলের সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৬২ রান করেছেন মোহাম্মদ মিঠুনও। একবার জীবন পেয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে মুমিনুলের সঙ্গে যোগ করেন ১৫৭ রান। দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনে গতকাল ২৩০ রান করে গিবসন একাদশ। আজ ব্যাট করে কুক একাদশ করে ২৪৮ রান। কাল বিশ্রাম নিয়ে পরশু থেকে আবার নিজেদের মধ্যে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।