যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে ভাবেন না বাবর

বাবর আজম।
ছবি: রয়টার্স

বছরের শুরুতে ভয়ংকর এক সময় কাটিয়েছেন বাবর আজম। দল নিয়ে নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া পাকিস্তান অধিনায়ককে এই সময়টা মাঠে নিউজিল্যান্ডের পেসারদের সামলাতে হয়েছে। আর মাঠের বাইরে তাঁর আইনজীবী ব্যস্ত ছিলেন হামিজা মুখতারকে নিয়ে। গত ডিসেম্বরে যে বাবরের বিরুদ্ধে ভয়ংকর সব অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই নারী। বাবর তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁকে ধর্ষণ করেছেন, এমনকি গর্ভপাত করাতে বাধ্য করেছিলেন—অভিযোগের কমতি ছিল না কোনো।

এসব অভিযোগ পরে মিথ্যা বলেই জানা গেছে। আদালতেই একের পর এক অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। পরে হামিজা নিজেও স্বীকার করেছেন, বিখ্যাত হওয়ার জন্য এ কাজ করেছিলেন। বিখ্যাত হওয়ার আশায় ছিলেন, বন্ধুরাও এ পরামর্শ নিয়ে হাজির হয়েছিল। তাই ফলাফলের কথা চিন্তা না করেই ভয়ংকর সব অভিযোগ করে বসেছিলেন। সব অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য হয়ে নিজের ভুলও স্বীকার করে নিয়েছিলেন।

সেসব ঘটনা এখন অতীত। শুধু একটি অভিযোগ এখনো আদালতে তদন্তাধীন আছে। গুরুতর সব অভিযোগ থেকে মুক্তি মিলেছে। তবু নামের পাশে কালিমা তো লেগেছেই। কিন্তু বাবর আজমের দাবি, ওসব নিয়ে ভাবেন না বলেই খেলায় এর আঁচড় ফেলতে দেননি।

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে পাকিস্তান। সে জন্য দলও ঘোষণা করা হয়ে গেছে। দল নিয়ে আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে কথাও বলেছেন। দল নির্বাচনে যে অধিনায়ক হিসেবে প্রভাব রাখতে শুরু করেছেন বাবর, সেটাও আজ জানা গেছে। আর সেই ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনেই উঠে এল সেই বিতর্কিত প্রসঙ্গ। বাবর সপাট কাভার ড্রাইভই যেন করলেন এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে, এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার এবং আদালতের এখতিয়ারাধীন। আমার আইনজীবী এটা সামলাচ্ছে। জীবনে আমরা অনেক বাধা–বিপত্তিরই সামনে পড়ি এবং আমি এতে অভ্যস্ত। এটা আমার ফর্ম বা ক্রিকেটে কোনো প্রভাব ফেলেনি।

বাবর আজম।
ছবি: টুইটার

গত ডিসেম্বরে অবশ্য পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। লাহোরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে হামিজা নামের ওই নারী অভিযোগ করেন, বাবর আজম তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ করেছেন। গর্ভে সন্তান আসায় তাঁকে গর্ভপাতেও বাধ্য করেন পাকিস্তান অধিনায়ক। পরে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছেন। এমনকি বাবর বিখ্যাত হওয়ার আগে আর্থিকভাবে তিনি সাহায্য করে এত দূর এনেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন হামিজা। নিজেকে বাবরের স্কুলের সহপাঠী পরিচয় দেওয়া নারী বলেছিলেন, আর্থিক দিক থেকেও তাঁর সঙ্গে অন্যায় করেছেন বাবর।

আদালতে একের পর এক অভিযোগ খারিজ হয়ে যাওয়ায় গত জানুয়ারিতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলে নিয়েছিলেন হামিজা মুখতার। এটাও জানিয়েছেন, পাকিস্তান অধিনায়কের সঙ্গে অতীতে তাঁর কোনো সম্পর্ক ছিল না। তবে তাঁর করা অন্য এক অভিযোগে গতকাল লাহোরের আদালত কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার সাইবার ক্রাইম বিভাগকে আজমের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছেন। এরপরই সাংবাদিকেরা এ ব্যাপারে প্রশ্ন রেখেছিলেন বাবরের কাছে। বাবরের জবাব থেকে পরিষ্কার, নতুন তদন্তেও নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করতে পারবেন বলে আশা তাঁর।