‘রক্ত’ চেনাতে শুরু করেছেন কাদিরতনয়

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঝলক দেখালেন উসমান কাদিরছবি: এএফপি

আবদুল কাদির। পাকিস্তানের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার। প্রয়াত কাদিরের তিন ছেলে ক্রিকেট খেললেও তাঁদের নামডাক ছিল না বললেই চলে। এবার অবস্থা বদলেছে। ছোট ছেলে উসমান কাদির যে পাকিস্তানের জাতীয় দলেও চলে এসেছেন।

বাবার মতো তিনিও লেগ স্পিনার।  জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে ডাকা হয় তাঁকে। পাকিস্তানের জার্সি গায়ে উঠতেই প্রথম সিরিজেই ‘রক্ত’ চেনাতে শুরু করেছেন কাদিরতনয়।

টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেক ২৭ বছর বয়সী উসমানের। সিরিজ যত এগিয়েছে, ম্যাচপ্রতি বেড়েছে উসমানের উইকেটের সংখ্যা। প্রথম ম্যাচে মাত্র ১ উইকেট পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে পেয়েছিলেন ৩টি। পাকিস্তানও এক ম্যাচ হাতে রেখে নিশ্চিত করে ফেলে সিরিজ।

আজ রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের সামনে সুযোগ আসে জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই করার। উসমানের দারুণ বোলিং পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে মাত্র ১২৯ রান তুলতে পারে জিম্বাবুয়ে। উসমান উইকেট পেয়েছেন ৪টি। তা–ও আবার ৪ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে।

বাবার মতো উসমানও লেগ স্পিনার
ছবি: এএফপি

আজ উসমানের শিকার ওপেনার চামু চিবাবা, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ওয়েসলি মাধেভেরে, মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মিল্টন শুম্বা ও অলরাউন্ডার এলটন চিগুম্বুরা। ছোট ছেলের এমন কীর্তি দেখে সবচেয়ে বেশি খুশি হতে পারতেন আবদুল কাদির। কিন্তু ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে না–ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কালজয়ী এই লেগ স্পিনার।

জিম্বাবুয়ে ৩৩ রানে ২ উইকেট হারালেও এক প্রান্ত থেকে ভালোই ব্যাটিং করছিলেন চিবাবা। স্কোরবোর্ড ৫৫ রান উঠতেই ব্যক্তিগত ৩১ রানে (২৮ বল) উসমানের বলে হায়দার আলীর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান এই ওপেনার।

জিম্বাবুয়ের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান এসেছে চিবাবার ব্যাট থেকেই। উসমানের দ্বিতীয় শিকার মাধেভেরে। ১৪ বলে ৯ রান করে উইকেটের পেছনে বাবর আজমের হাতে ক্যাচ দেন মাধেভেরে।

শুম্বাকে গুগলির ফাঁদে ফেলে স্টাম্পিং করেছেন উসমান। আজই শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা চিগুম্বুরাকে ২ রানের বেশি করতে দেননি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন চিগুম্বুরা।

১৩০ রান করতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি পাকিস্তানকে। মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ১৫.২ ওভারে জয় তুলে নেয় বাবর আজমের দল। ৩৩ বলে সর্বোচ্চ ৪১ রান করে অপরাজিত ছিলেন অভিষিক্ত আবদুল্লাহ শফিক।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহকারী খুশদিল শাহও অপরাজিত ছিলেন ৩৬ রানে (১৫ বল)। আউট হওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে ফখর জামান ২১ ও হায়দার আলী ২৭ রান করেন। একটি করে উইকেট নেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা ও মিল্টন শুম্বা।

আজ ম্যাচসেরা হয়েছেন ২০১২–১৩ মৌসুম থেকে অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা উসমান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার জন্য অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব নেওয়ার চিন্তাও করেছিলেন কাদিরের ছোট ছেলে। ২০১৮ সালে খোলাখুলিভাবেই উসমান জানিয়েছিলেন, তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে চান।

পাকিস্তানের সৌভাগ্য সেটি হয়নি। গত বছর তো উসমানকে অস্ট্রেলিয়া সফরের টি–টোয়েন্টি দলে ডাকে পাকিস্তান। সে সময়ে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। উসমান পাকিস্তানের দলে ছিলেন এ বছরের শুরুতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি দলেও। এবারও খেলা হয়নি তাঁর। শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা ফুরাল এবার।

আর সুযোগ পেয়েই কী দারুণভাবেই না তা কাজে লাগালেন আবদুল কাদিরতনয়।