‘রাহানে ইস্পাতের মতো ঠান্ডা, রাগই কোহলির শক্তি’

কোহলি–রাহানে: অধিনায়ক হিসেবে কে সেরা।
ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ভারত সবচেয়ে বাজে খেলেছে যে টেস্টে, সেটিতেই নেতৃত্ব দিয়েছেন বিরাট কোহলি। অ্যাডিলেডে দিনরাতের সে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে অলআউট হয়ে হেরেছিল তারা। এরপর প্রথম সন্তান জন্মের মুহূর্তে স্ত্রী আনুশকা শর্মার পাশে থাকতে দেশে ফিরে এসেছিলেন। তা নিয়ে সমালোচনা–বিতর্ক কম হয়নি। সাবেক ক্রিকেটাররা তো রীতিমতো তিরে বিঁধেছেন ভারত অধিনায়ককে।

কোহলি দেশে ফেরার পর থেকেই যেন ভোজবাজির মতো পাল্টে গেল ভারত। অ্যাডিলেড বিপর্যয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাকি তিনটি টেস্টে যেখানে ভারতের ভরাডুবির ঘোষণা বেশ কয়েকজন সাবেক তারকা ক্রিকেটার দিয়েই দিয়েছিলেন, সেখানে ভারত রীতিমতো রূপকথাই রচনা করল। মেলবোর্নের জয়ে সিরিজে সমতা এল, সিডনিতে বীরত্বপূর্ণ এক ড্র জয়ের সমান গৌরব এনে দিল তাদের। ব্রিসবেনে চোট–আঘাতে জর্জরিত দল যখন সেরা একাদশ নামাতেই হিমশিম, তখন ডাগআউটে বসে থাকা ক্রিকেটাররাই দলকে এনে দিলেন ঐতিহাসিক জয়। বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি নিজেদের কাছেই রেখে দেওয়ার গৌরবটা যে ভারত অর্জন করেছে দলের সেরা খেলোয়াড় আর অধিনায়ক কোহলিকে ছাড়াই।

ঠান্ডা মাথার অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে।
ছবি: এএফপি

পুরো ভারত এখন অজিঙ্কা রাহানের বন্দনায় মাতোয়ারা। কোহলির চেয়ে রাহানে ভালো অধিনায়ক—এমন কথাও উঠে গেছে। কোহলির অধিনায়কত্ব এসে গেছে আতশি কাচের তলায়। রাহানেকে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে স্থায়ীভাবে রেখে দেওয়ার কথাও বলছেন কেউ কেউ। এমন একটা অবস্থায় রাহানে বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘কোহলি অধিনায়ক ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন’—এমন কথা। দুজনের মধ্যে এমন কী পার্থক্য আছে, সেটিও খোঁজা হচ্ছে। তবে দুই তারকার অধিনায়কত্বে যে পার্থক্য আছে, সেটা জানিয়েছেন ভারতীয় দলের বোলিং কোচ ভারত অরুন। আরেক তারকা রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে এক ভিডিও চ্যাটে এসে বোলিং কোচের মন্তব্য, ‘রাহানে ইস্পাতের মতো ঠান্ডা অধিনায়ক আর কোহলি আবেগপ্রবণ, আক্রমণাত্মক। তাঁর শক্তি বেরিয়ে আসে সেই আবেগকে পুঁজি করেই।’

আবেগই অধিনায়ক কোহলির বড় শক্তি।
ছবি: এএফপি

রাহানে কেমন অধিনায়ক, সেটি বলতে গিয়ে অরুনের মন্তব্য, ‘রাহানে কখনো রেগে যায় না। বোলার বা সতীর্থদের সঙ্গে চিৎকার–চেঁচামেচি করে না। সে ঠান্ডা মাথায় তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। ভুল করলেও সে বোলারকে কিছু বলে না। সে চুপচাপ প্রতিপক্ষকে শেষ করে দিতে পছন্দ করে।’

কোহলির রাগত অভিব্যক্তি কিংবা আবেগই তাঁর শক্তির জায়গা, ‘দুটি বাজে বল হলেই কোহলির চেহারায় রাগী রাগী একটা ভাব ফুটে ওঠে। এটাই তার অধিনায়কত্বের ধরন। এটাই ওর শক্তি।’