রুট উপড়ে গলে জাঁকিয়ে বসল শ্রীলঙ্কা

লড়াইটা হলো এই দুজনের মধ্যেই।
ছবি: এসএলসি

প্রথম ইনিংসে ওশাদা ফার্নান্দো কোনো রান করেননি। জিমি অ্যান্ডারসনের বলে অসহায় আত্মসমর্পণের আগে চারটি বলই খেলেছেন। কিন্তু আজ তৃতীয় দিনটায় ফার্নান্দোকে ঘিরে যদি উল্লাস করে শ্রীলঙ্কা, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই।

পুরো দিন ধরে শ্রীলঙ্কাকে জ্বালিয়ে মেরেছেন জো রুট। গলের উইকেটে অন্য ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যখন বাঁহাতি স্পিনার লাসিথ এমবুলদেনিয়ার বলে হার মেনে একে একে ফিরে গেছেন, সেখানে রুটকে দেখেই শুধু মনে হয়েছে, এ উইকেটে রান নেওয়া সম্ভব। সেই রুটকে রানআউট করে দিয়েছেন ফার্নান্দো। ইংলিশ অন্য দুই ব্যাটিং ভরসা জনি বেয়ারস্টো ও বাটলারের ক্যাচটাও এই ফার্নান্দোর হাতেই গেছে।

দিনের শেষ বলে রুটের বিদায় নেওয়াটাই শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে দিল গলে। ৯ উইকেটে ৩৩৯ রানে দিন শেষ হয়েছে সফরকারী ইংল্যান্ডের। এখনো ৪২ রানে পিছিয়ে থাকা ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যবধান কমানোর দায়িত্বটা কাল শূন্য রানে অপরাজিত জ্যাক লিচ ও নামার অপেক্ষায় থাকা অ্যান্ডারসনের।

আরেকটি দেড় শ রানের ইনিংস রুটের।
ছবি: এসএলসি

দিনের শেষ বলটাই যত ঝামেলা করল। দিলরুয়ান পেরেরার বলটা লেগে ঠেলে প্রান্ত বদলের চিন্তা ছিল রুটের। কিন্তু শর্ট লেগে থাকা ফার্নান্দো ঠিকই বলটা ধরে ফেললেন। ধরেই ছুড়ে মারলেন স্টাম্পে। রুট রান নেওয়ার জন্য বেরও হননি। শুধু অফ স্টাম্পের বাইরের বল লেগে খেলতে গিয়ে যতটুকু পা নাড়াতে হয়, ওটুকুই তাঁর কাল হলো। ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা রুট ফেরার জন্য ঝাঁপ দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। ১৮৬ রানেই শেষ হলো রুটের লড়াই।

প্রথম টেস্টেই টের পাওয়া গিয়েছিল, সফরকারীদের হয়ে যতটুকু লড়ার সব অধিনায়ককেই লড়তে হবে। সেই টেস্টেও প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি করে দলকে বড় লিড এনে দিয়েছিলেন রুট। এবার ১৪ রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি পাননি। কিন্তু লড়াইয়ে এবারও তিনি একাই ছিলেন। গতকাল তাঁর সঙ্গে দিন শেষ করা বেয়ারস্টো (২৮) আজ আর ৪ রান করেই বিদায় নিয়েছেন। ৯৭ রানের পঞ্চম উইকেট জুটিতে জস বাটলার এনে দিয়েছেন ৫৫ রান। এরপর শুধু ডম বেসকেই সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন রুট। এই অফ স্পিনারের সংগ্রহও কেবল ৩২ রান।

অনন্য এক অর্জনের সামনে এমবুলদেনিয়া।
ছবি: এসএলসি

প্রায় নিখুঁত এক ইনিংসেই ইংল্যান্ডকে দিনের শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে রেখেছিলেন রুট। স্পিন উইকেটে কীভাবে খেলতে হয়, সেটার চূড়ান্ত প্রদর্শনী রেখেছেন। যে উইকেটে বাটলার বাদে অন্যদের রীতিমতো ঘাম ঝরেছে, সেখানেই কী দারুণ সাবলীল ব্যাটিং তাঁর। না হলে এমবুলদেনিয়া আজ শ্রীলঙ্কাকে বড় এক লিড এনে দেওয়ার পণই যেন করেছিলেন।

রুটকে তো কেউ আউট করতে পারেননি। আর বাটলারকে বোকা বানিয়েছেন অভিষিক্ত রমেশ মেন্ডিস। বাদবাকি সব উইকেট নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন এমবুলদেনিয়া। ১৩২ রানে ৭ উইকেট তাঁর ক্যারিয়ারসেরা। আগামীকাল বাকি উইকেটটাও বুঝে নিতে পারলেই গলে প্রথম বোলার হিসেবে এক ইনিংসে ৮ উইকেট প্রাপ্তির ঘটনা দেখা যাবে। যে মাঠ মুত্তিয়া মুরালিধরন ও রঙ্গনা হেরাথদের ব্যক্তিগত সম্পদ বনে গিয়েছিল, সে মাঠে এক অনন্য কীর্তি তো বটেই।