তৃতীয় দিনের শেষটা শ্রীলঙ্কার

রুট পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ দ্বিশতক।ছবি: টুইটার

গল টেস্টে আজ তৃতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪২১ রানে অলআউট ইংল্যান্ড। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসেই ২৮৬ রানের লিড পেয়েছে সফরকারী দল।

গলের ২২ গজে জো রুট যেমন দুর্দান্ত ব্যাট করেছেন, তেমনি ইংল্যান্ডের শেষ ৬ উইকেট পড়েছে বাকি ১২১ রানের মধ্যে! কাল ৪ উইকেটে ৩২০ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করা ইংল্যান্ড আজ খেলতে পেরেছে মাত্র ২৩.১ ওভার (১৩৯ বল)। ওদিকে তৃতীয় দিনে এসে প্রকৃত স্বাগতিক দলের মতো খেলল শ্রীলঙ্কা। আলোক স্বল্পতায় আগে মাঠ ছাড়ার আগে ২ উইকেটে ১৫৬ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। এখনো ১৩০ রানে পিছিয়ে স্বাগতিক দল।

কাল ১৬৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক রুট। আজ এ ইনিংসের সঙ্গে যোগ করতে পেরেছেন মাত্র ৬০ রান। মাত্র বলার কারণ, রুট যেভাবে ব্যাট করছিলেন, তাতে ‘ট্রিপল’ সেঞ্চুরিও হয়ে যেতে পারত! অন্য প্রান্তে বাকিরা ফেরার মিছিল শুরু করায় শেষ উইকেট জুটিতে দ্রুত রান তুলতে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন রুট। ৩২১ বলে ২২৮ রান তুলেছেন রুট। মেরেছেন ১৮টা চার, আর ১টি ছক্কা।

এমন উদ্‌যাপনেই শুরু হলো রুটের বছর।
ছবি: টুইটার

গলের উইকেটে এ জন্য দুই স্পিনার দিলরুয়ান পেরেরা ও লাসিথ এমবুলদেনিয়াকে সাধুবাদ জানাতেই হবে। দুজনের স্পিনই ছোবল মেরে উঠেছে। পায়ের নিপুণ ব্যবহারে রুট তা দারুণভাবে খেলতে পারলেও বাকিরা সেভাবে পারেননি। সকালের সেশনেই ৬ উইকেট তুলে নেন স্বাগতিক বোলাররা। ইংল্যান্ড শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে ৪৯ রানের মধ্যে।

রুট যেখানে ডাবল পেলেন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর অভিষিক্ত ড্যান লরেন্সের ৭৩। প্রতিষ্ঠিত কোনো ব্যাটসম্যান ফিফটিও পাননি। লরেন্স ছাড়া আর কেউ ন্যূনতম ১০০ বলও খেলেননি। এ হিসাব অবশ্যই রুটের ইনিংসটির বাইরে। ১ ছক্কা ও ১৮ চারে ৩২১ বলের এই ইনিংস যে রুটের ব্যাটিং সামর্থ্যের ধ্রুপদি প্রমাণ। সেঞ্চুরিও নয়, ডাবল সেঞ্চুরিতে শুরু হলো রুটের বছর।

ক্যারিয়ারের চতুর্থ ও অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় ডাবলের দেখা পেলেন রুট। ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরিতে রুটের চেয়ে এগিয়ে শুধু ওয়ালি হ্যামন্ড (৭টি) ও অ্যালিস্টার কুক (৫টি)। ২০১৫ সালে আবুধাবিতে কুকের ২৬৩ রানের ইনিংসের পর এশিয়ায় দ্বিতীয় সেরা ইনিংস রুটের, সেটি অবশ্যই ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে।

এই ইনিংস খেলার পথে সপ্তম ইংলিশ ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ৮০০০ রানের মাইলফলক টপকে যান রুট। ইনিংসের হিসেবে তিনি ৮ হাজারি ক্লাবে ঢোকা ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় (১৭৮ ইনিংস) দ্রুততম। ১৭৬ ইনিংসে এ মাইলফলকের দেখা পেয়েছিলেন কেভিন পিটারসেন।

পাহাড়সমান ব্যাট নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে শ্রীলঙ্কা। ইনিংস ব্যবধানে হার চোখ রাঙাচ্ছে তাদের। প্রথম ইনিংসে ১৩৫ রানে অলআউট হওয়া দলকে দারুণ শুরু এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার।

কুশল পেরেরা ও লাহিরু থিরিমান্নের ১০১ রানের উদ্‌বোধনী জুটি ইনিংস ব্যবধানে হারের ভয়টা একটু দূর করেছে। এরপরই সবাই আগ্রহ নিয়ে তাকিয়েছিলেন টিভি পর্দায়। টানা চার শূন্যের পর এক রেকর্ডের ভয় নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন কুশল মেন্ডিস। প্রথম স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে টানা পাঁচ শূন্যের রেকর্ডটা হতে দেননি মেন্ডিস।

প্রথম ৬ বলে রান নিতে পারেননি। তবে জ্যাক লিচের বল স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে নিজেকে রাহুমুক্ত করেছেন। পরে অবশ্য ওই লিচের বলেই আউট হয়েছেন। তবে এর আগে ৫৪ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি গড়েছেন থিরিমান্নের সঙ্গে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৪২১ অল আউট। রুট ২২৮, লরেন্স ৭৩, বেয়ারস্টো ৪৭; (পেরেরা ৪/১০৯, এমবুলদেনিয়া ৩/১৭৬, ফার্নান্দো ২/৪৪)
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ১৩৫ অলআউট ও দ্বিতীয় ইনিংস: ২/১৫৬ (থিরিমান্নে ৭৬*, পেরেরা ৬২; কারেন ১/২৫)