রেকর্ডটা এখন মাহমুদউল্লাহর

স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ইনিংসে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের বাংলাদেশি রেকর্ড এখন মাহমুদউল্লাহর।ছবি: শামসুল হক

মাহমুদউল্লাহ উইকেটে এলেন ১৫তম ওভারের শেষ বলে, ফিরলেন ১৭তম ওভারের তৃতীয় বলে। ৯ বল খেলেই জেমকন খুলনা অধিনায়ক আজ ড্রেসিংরুমে ফিরে গেলেন স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেটের নতুন রেকর্ড সঙ্গী করে।

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে ৮ বলেই ৩০ রান করার পর নবম বলে আউট হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ৯ বলে ৩০ রান, প্রথম কোয়ালিফায়ারে খুলনা অধিনায়কের স্ট্রাইক রেট ৩৩৩.৩৩। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস এখন মাহমুদউল্লাহর। এই রেকর্ডে শুধু ২৫ বা এর বেশি রানের ইনিংসগুলোই বিবেচনা করা হয়।

মাহমুদউল্লাহ ভেঙেছেন শুভাগত হোমের রেকর্ড। ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন টি-টোয়েন্টি লিগে শাইনপুকুরের হয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামেই ১৮ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন শুভাগত। বাংলাদেশের হয়ে ১৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা অলরাউন্ডারের স্ট্রাইক রেট ছিল ৩২২.২২।

শুভাগত হোমের রেকর্ড ভেঙেছেন মাহমুদউল্লাহ।
ফাইল ছবি

শুভাগত ঠিক আগের দিনই গড়া নিজের রেকর্ডই শুধু হালনাগাদ করে নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ১০ বলে ৩২ রান করেছিলেন জাতীয় দলের বাইরে থাকা অলরাউন্ডার। সেদিন ঠিক ৩২০ ছিল শুভাগতর স্ট্রাইক রেট।

বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের রেকর্ড হলেও মাহমুদউল্লাহ আজ অল্পের জন্য ভাঙতে পারেননি বাংলাদেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বেশি স্ট্রাইক রেটের ইনিংসের রেকর্ড, যেটি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান ড্যারেন স্যামির। ২০১৭ সালে ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে রাজশাহী কিংসের হয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে ১৪ বলে ৪৭ করে অপরাজিত ছিলেন স্যামি। ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ৩৩৫.৭১। সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসের তালিকায় ৩৩৫.৭১-এর ঠিক পরেই আছে ৩৩৩.৩৩।

সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেটের বিশ্ব রেকর্ডটা আরেক ক্যারিবীয় আন্দ্রে রাসেলের। ২০১৩ সাল ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টসের বিপক্ষে ৬ বলেই ৪ ছক্কা ও ১ চারে ২৯ করেছিলেন জ্যামাইকা তালওয়াসের রাসেল। স্ট্রাইক রেট ৪৮৩.৩৩!

আজ গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে টানা ৩টি ছক্কা মেরেছেন জেমকন খুলনার মাহমুদউল্লাহ।
ছবি: প্রথম আলো

আজ উইকেটে এসে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে সুইপ করে ১ রান নেন মাহমুদউল্লাহ। বোলার মোসাদ্দেক ঠিক আগের বলেই আউট করেছিলেন ৮০ রান করা জহুরুল ইসলামকে। মাহমুদউল্লাহর ঝড়টা বেশি টের পেয়েছেন তরুণ বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম। শরীফুলের করা ১৬তম ওভারের প্রথম তিন বলেই ছক্কা মেরেছেন মাহমুদউল্লাহ। প্রথম দুটি স্কয়ার লেগ দিয়ে, শেষেরটি লং অন দিয়ে। ইনিংসে ছক্কা এই তিনটিই। পরের বলে ওয়াইড, এরপর একটি ডাবল ও একটি সিঙ্গল নিয়ে প্রান্ত বদলান মাহমুদউল্লাহ। শেষ বলটায় সাকিব রান নেওয়ায় পরের ওভারে স্ট্রাইকে থাকেন মাহমুদউল্লাহই।

এবার বোলার পাল্টিয়ে অফ স্পিনার সানজিৎ সাহাকে আনেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। প্রথম দুই বলেই ৪ মেরে ৩০ রান পুরো করে ফেলেন মাহমুদউল্লাহ। তৃতীয় বলটায় ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা শুধু ডিপ মিডউইকেটে সৌম্য সরকারের হাত পর্যন্ত পৌঁছায়।

মাহমুদউল্লাহর বিস্ফোরক ইনিংসে ভর করেই প্রথম কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রামকে ২১১ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে খুলনা।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ স্ট্রাইকরেট (কমপক্ষে ২৫ রানের ইনিংস)