লারা-টেন্ডুলকার-শেবাগদের উত্তরসূরিকে নিয়ে এখনো আশাবাদী তিনি

অ্যাডিলেড টেস্টে ভারতের দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হন পৃথ্বী শছবি: এএফপি

অথচ নিজের দলের কোচই তাঁর ব্যাটিং স্টাইল দেখে শচীন টেন্ডুলকার, ব্রায়ান লারা ও বীরেন্দর শেবাগের ছায়া খুঁজে পেয়েছিলেন। পৃথ্বী শ–এর একের পর এক ব্যর্থতা দেখে রবি শাস্ত্রীর সেই কথাটা এখন ক্রিকেটভক্তদের কাছে মশকরার বিষয়।

অ্যাডিলেড টেস্টে ভারতের ভরাডুবির পিছে দায় আছে ২১ বছর বয়সী এই ওপেনারেরও। মেলবোর্ন টেস্টে হয়তো বাদও পড়তে পারেন তিনি।

ক্যারিয়ারের এই সংকটকালে শত্রুশিবির থেকে একজনের সমর্থন পেলেন শ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান মাইকেল হাসির মতে, নির্বাচকদের উচিৎ, শ–এর ওপর আরেকটু ভরসা রাখা। কেন?

সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন হাসি, ‘আমার মনে হয় শ–এর ওপর ভারতীয় নির্বাচকদের আরেকটু ভরসা রাখা উচিৎ। হ্যাঁ, প্রথম টেস্টে সে রান পায়নি কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে, একটা মাত্র ম্যাচ শেষ হয়েছে। এমন একটা টেস্টে সে রান পায়নি, যেখানে তাঁকে বিশ্বমানের বোলিং আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়েছিল এবং পিচটাও ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন ছিল।’

শ–এর পাশে দাঁড়াতে গিয়ে হাসি নিজেদের একটা উদাহরণ ব্যবহার করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার জো বার্নসও এমন ফর্মহীনতায় ভুগতেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকেরা তাঁর ওপর আস্থা হারাননি।

পৃথ্বী শ-র প্রতিভা নিয়ে কারও সন্দেহ না থাকলেও মাঠে তা অনূদিত করতে পারছেন না এই ব্যাটসম্যান
ছবি: এএফপি

নির্বাচকদের কাছ থেকে সাহস পেয়ে আস্তে আস্তে নিজের ফর্ম ফিরে পান এই ব্যাটসম্যান। হাসির চাওয়া, ভারতীয় নির্বাচকদেরও উচিৎ এভাবে শ–এর পাশে দাঁড়ানো, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে জো বার্নসের গড় একসময় সাতেরও কম ছিল। কিন্তু নির্বাচকেরা তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন। এমনকি সে প্রথম ইনিংসেও কম রানে আউট হয়েছিল, কিন্তু আস্তে আস্তে সে তার আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়, খাটতে থাকে এবং দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করে।’

মেলবোর্নের পিচ শকে সাহায্য করবে বলে আশা করেন হাসি, ‘পৃথ্বীর ওপর সে ভরসাটা রাখতে হবে। ওকে এই বিশ্বাসটা দিতে হবে যে ওর পাশে সবাই আছে। ওকে বলতে হবে, দেখো, আমরা তোমাকে সমর্থন দিচ্ছি। মেলবোর্নের পিচ ওকে অনেক সাহায্য করবে। ওখানে অ্যাডিলেডের মতো অত পেস আর বাউন্স থাকবে না। ওর প্রতিভা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।’

শ–এর প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ নেই ভারতের কোচ রবি শাস্ত্রীরও। বহু দিন আগে ভারতীয় দলের ওপেনার পৃথ্বী শকে এক সাক্ষাৎকারে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন ভারতের কোচ।

তাঁর ব্যাটিং স্টাইলের সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছিলেন তিন কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার, ব্রায়ান লারা ও বীরেন্দর শেবাগের। সেই শ–এরই এখন রান তুলতে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।

কিন্তু সেবার আসলে কী বলেছিলেন শাস্ত্রী?

তাঁর মুখ থেকেই শুনে নেওয়া যাক, ‘ক্রিকেট খেলার জন্যই জন্ম হয়েছে শর। মুম্বাইয়ের মাঠে-ঘাটে ও সেই আট বছর বয়স থেকে খেলে যাচ্ছে। ওর খেলার মধ্যে ওর ওই পরিশ্রমের বিষয়টা ফুটে ওঠে। দর্শকদের জন্য ওর ব্যাটিং একটা চরম আনন্দের বস্তু। ওর ব্যাটিং স্টাইলের মধ্যে একটু শচীন, একটু শেবাগের ছাপ পাওয়া যায়। আর ও যখন হাঁটে, তখন ওর মধ্যে ব্রায়ান লারারও ছাপ দেখা যায়।’

যাঁর স্টাইলের মধ্যেই এত কিংবদন্তির সম্মিলন, সে তারকাই আইপিএলের দ্বিতীয় ভাগে কোনো ম্যাচে ১০–এর বেশি রান তুলতে পারেননি এক ম্যাচে। টেস্টেও কামিন্স-স্টার্কদের সামনে থরহরিকম্পমান অবস্থা।

পৃথ্বী কী পারবেন পরের টেস্টে সুযোগ পেয়ে নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করতে?