ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতির পরপরই ৩৬৫ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম সেশনেই ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৬১ তুলেছিল দল। লিটন দাস ১৪১ রানে ফেরেন। মুশফিকুর রহিম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৭৫ রানে।
লিটন দাস আউট হতেই যেন আগল খুলে গেল বাংলাদেশের ইনিংসের। মুশফিকুর রহিম একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে পাল্টা লড়াইটা ঠিকই করেছেন। কিন্তু সঙ্গীর অভাবটা প্রকট হয়েই দেখা দিল। কাল প্রথম দিনে ২৪ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর সেই ৫ উইকেটেই দলের সংগ্রহটা ২৭৭-এ পৌঁছে দিয়েছিলেন লিটন ও মুশফিক। শতক হাঁকানো দুই ব্যাটসম্যান নিজেদের ইনিংস আরও বড় করবেন, এমন প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু লিটন ১৪০ রানেই আউট।
এরপর মুশফিকুর রহিমের একার লড়াই, তাইজুল ইসলামের কিছুটা প্রতিরোধ। কিন্তু বাকিরা এলেন আর গেলেন। ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় দিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৯ উইকেটে ৩৬১। মুশফিকুর রহিম অপরাজিত ছিলেন ১৭১ রান করে। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই আর মাত্র ৪ রান যোগ করেই অলআউট দল। ৩৫৫ বলে খেলে ২১টি বাউন্ডারিতে মুশফিক অপরাজিত ১৭৫ রানে।
প্রথম সেশনে ক্ষণিকের ভুলেই ফিরেছেন লিটন। ফিরেছেন কাসুন রাজিতার বলে। তাঁর অফ স্টাম্পের একটু বাইরের বলটিতে ব্যাট সরাতে পারলেন না লিটন। আউট হওয়ার আগে ২৪৬ বলে ১৪১ করেছেন তিনি। বাউন্ডারি ১৬টি, ছক্কা একটি। লিটনের ব্যাট ছুঁয়ে বল চলে যায় স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা মেন্ডিসের কাছে। দারুণ এক ক্যাচ। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ৬ উইকেটে ২৯৬।
এর দুই বল পর আবারও রাজিতার আঘাত। টেস্টে ক্রিকেটে নিজের প্রথম ৫ উইকেট-কীর্তি তিনি তুলে নিলেন মোসাদ্দেক হোসেনকে ফিরিয়ে। দীর্ঘ দিন পর টেস্ট খেলতে নামা মোসাদ্দেক উইকেটে গিয়েই আউট। রাজিতার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে তিনি ফিরলেন লঙ্কান উইকেটকিপার নিরোশান ডিকভেলাকে ক্যাচ দিয়ে।
দিনের প্রথম সেশনে চার বলের ঝড়ে কিছুটা এলোমেলো হলো বাংলাদেশ। বিশেষ করে ফর্মে থাকা লিটনের ফেরা। মোসাদ্দেকের ওপরও প্রত্যাশা ছিল। তিনি চাপমুক্ত হয়ে নিজের খেলাটা খেলবেন। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর অনভ্যস্ততা ফুটে বেরিয়েছে রাজিতার ওই এক বলেই। অগত্যা, সব দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নিতে হলো লিটনের ধ্রুপদি জুটির সঙ্গী মুশফিকুর রহিমকে। দলের প্রয়োজনে ব্যাটটাও চালাতে হলো দ্রুত। আজও একেবারে ভুলহীন ইনিংস মুশফিকের। খেলেছেন উইকেটের চারপাশে। লঙ্কান বোলারদের দুর্বলতা খুঁজে নিয়ে আলগা বলগুলোকে শাস্তি দিয়েছেন দারুণভাবে।
লিটন, মোসাদ্দেকের বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিম তাইজুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ছিল সেই পাল্টা লড়াই। দুজন গড়েছেন ৪৯ রানের জুটি। এই জুটিতেই দলের সংগ্রহটা সাড়ে তিনশতে পৌঁছেছে। তাইজুল ৩৭ বলে ১৫ করেছেন। তাইজুল আউট হন আসিতা ফার্নান্দোর বলে নিরোশান ডিকভেলার ক্যাচ হয়ে। একইভাবে আউট খালেদ আহমেদও। ইবাদত হোসেনও আউট হতে পারতেন। ফার্নান্দোর বলে তাঁর বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার, কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত মুশফিকের সঙ্গী হয়ে প্রথম সেশনটা কাটিয়ে দেন ইবাদত। শেষ পর্যন্ত রান আউট হয়েছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার সেরা বোলার ওই রাজিতাই। ৬২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। আসিতা ফার্নান্দো নিয়েছেন ৪ উইকেট।