লিটনের ব্যাটে লড়াইয়ের রসদ বাংলাদেশের

লিটন খেলেছেন ৫৯ রানের ইনিংসছবি: শামসুল হক

মুশফিকুর রহিম আর ইয়াসির আলী চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিলেন। তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে দ্রুত ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর এ দুজনই ধস ঠেকিয়েছিলেন। আগের ইনিংসে ৯১ রানে ফেরা মুশফিকের ওপর বড় ভরসাই ছিল। কিন্তু তিনি ফিরলেন দিনের প্রথম ওভারেই। শুরুতেই আঁধার নেমে আসে রৌদ্রকরোজ্জ্বল চট্টগ্রামে।

আগের ইনিংসে সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বলে রক্ষা। সঙ্গে ছিলেন অভিষিক্ত ইয়াসির আলী। দুজনেই দায়িত্বশীল একটা জুটি (৬৯ বলে ৪৭) গড়েই লড়াইটা জারি রাখলেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ যে পাকিস্তানকে ২০২ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিতে পারল, এর সিংহভাগ কৃতিত্ব দিতে হবে এ দুজনকে। ইয়াসিরের দুর্ভাগ্যই। লড়াইয়ে নেতৃত্বের ভূমিকা ছিল তাঁরই। কিন্তু শাহিন শাহ আফ্রিদির একটি শর্ট বলে বল থেকে চোখ সরিয়ে নিয়েই বিপত্তিটা বাঁধল। মাথার পেছনে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তাঁকে। একটি সম্ভাবনাময় ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটে গেল সেখানেই।

৫ উইকেট নিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি
ছবি: শামসুল হক

প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৪ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তিনি। অভিষেকেই চমৎকার একটা গল্পই রচনা করতে যাচ্ছিলেন। ৭২ বলে ৩৬ করে ফেলেছিলেন এরই মধ্যে। ৬টি চমৎকার বাউন্ডারি মেরে নিজের আত্মবিশ্বাস প্রমাণ করেছিলেন।

ইয়াসিরের মাথার চোট যেহেতু, তাই তাঁকে আর মাঠে ফেরায়নি বাংলাদেশ। অভিষেকে তাঁর নামের পাশে লেখা হলো, ‘আহত অবসর’। বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নুরুল হাসান। তিনি লিটনের সঙ্গ জুটি বেঁধে ৬১ বলে ৩৮ রানের আরও একটা জুটি গড়লেন। তবে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে সাজিদ খানের বলে ফাহিম আশরাফের হাতে ক্যাচ ১৫ রান করে। অন্যপ্রান্তে লিটন আস্থা নিয়েই খেলেছেন। ৮৯ বলে ৬টি চারে ৫৯—প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ার-সেরা ১১৪ রানের ইনিংস খেলার পর চট্টগ্রাম টেস্টে লিটন আবারও দুর্দান্ত।

ইয়াসির খেলছিলেন দারুণ
ছবি: শামসুল হক

বাংলাদেশের লেজ ছেঁটে ফেলতে বেশি সময় নেয়নি পাকিস্তান। শাহিন শাহ আফ্রিদি ছিলেন দুর্দান্ত। তিনি ১৫ ওভার বোলিং করে মাত্র ৩২ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ১৩.১ ওভার বল করে ৩৩ রানে ৩ উইকেট স্পিনার সাজিদ খানের। ১১ ওভারে ৫২ রানে ২ উইকেট হাসান আলীর। লিটনের সঙ্গে ইয়াসির আর তাঁর বদলি নুরুলের দুটি জুটিই শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত। ৪৪ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ের রসদ যে পেয়েছে, সেটি লিটন আর তার দুই সঙ্গীর কল্যাণেই।