শহীদুল যেভাবে লন্ডনের ওভাল জয় করলেন

এই স্বীকৃতি শহীদুলের এক অনন্য অর্জন।
ছবি: ফেসবুক

লন্ডনের ওভালে গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল বাংলাদেশ। এই ওভালেই ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম ইকবাল। লন্ডনের বিখ্যাত এই মাঠে কদিন আগে বিশেষভাবে উচ্চারিত হলো আরেক বাংলাদেশির নাম, তিনি শহীদুল আলম। বাংলাদেশের ক্রিকেটে যিনি ‘রতন’ নামে পরিচিত।

১৫ ডিসেম্বর ২৪ ঘণ্টার জন্য সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের ঘরের মাঠ ওভাল মাঠের নামকরণ করা হয় ‘শহীদুল আলম রতন ওভাল’ নামে। বিশেষ এই স্বীকৃতি পেয়ে ভীষণ আপ্লুত তিনি। সংবাদমাধ্যমকে শহীদুল বলেছেন, ‘এভাবে সম্মানিত হওয়াটা দারুণ এক খবর। এটির অনেক তাৎপর্য। আমার মতো যারা পরিবর্তনে বিশ্বাসী, যারা অসহায় মানুষকে সহায়তা করতে চায়, তাদের এটি অনুপ্রাণিত করবে। শুধু যুক্তরাজ্যেই নয়, পুরো ক্রিকেট বিশ্বেই ওভালের মতো নামজাদা স্টেডিয়ামের নামকরণ আমার নামে করাটা বিরাট সম্মানের। আমি সারে ক্রিকেট ক্লাবকে ধন্যবাদ জানাই।’

বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরিচিত মুখ, বিসিবির সাবেক কোচ শহীদুল কীভাবে জয় করেছেন ওভাল—সে গল্পটাই শোনা যাক। লন্ডনের ‘ক্যাপিটাল কিড ক্রিকেট’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী তিনি। যুক্তরাজ্যে অন্যান্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মতো তাঁর প্রতিষ্ঠানও সরকারি অনুদান পেয়ে থাকে। করোনা মহামারিতে সব অবরুদ্ধ (লকডাউন) হওয়ার আগে তারা অনুদান পেয়েছিল ন্যাশনাল লটারি ফাউন্ডেশন থেকে।

এই অনুদান কাজে লাগিয়ে লকডাউনের পুরো সময়ে শহীদুল ও তাঁর প্রতিষ্ঠান পাশে দাঁড়িয়েছিল যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর, বিশেষ করে লন্ডনে ঘরবন্দী সহস্রাধিক সুবিধাবঞ্চিত তরুণ ক্রিকেটারের পাশে। শহীদুলের এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড এবং সারে ক্রিকেট ক্লাব ১৫ ডিসেম্বর ২৪ ঘণ্টার জন্য ওভালের নাম বদলে রাখে ‘শহীদুল আলম রতন ওভাল।’

১৫ ডিসেম্বর ২৪ ঘণ্টার জন্য সারে কাউন্টি ক্লাবের হোম ভেন্যু ওভাল মাঠের নামকরণ করা হয় ‘শহীদুল আলম রতন ওভাল’ নামে।
ছবি: ফেসবুক

এই অর্জনের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুভেচ্ছাবৃষ্টিতে ভিজছেন শহীদুল। বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমুল আবেদীন তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, ‘এটা অনেক বড় অর্জন। রতনকে অভিনন্দন।’ অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান। অভিনন্দন জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামও। আমিনুল লিখেছেন, ‘অনেক বড় অর্জন। আপনার এই বড় সাফল্যে আমরা একজন বাংলাদেশি হিসেবে গর্বিত।’ সাবেক ক্রিকেটারদের পাশাপাশি বর্তমান অনেক খেলোয়াড়ই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শহীদুলকে।

সবার অভিনন্দনের জবাবে শহীদুল বলেছেন, ‘আমার ক্রিকেটীয় যাত্রায় যাঁরা পাশে আছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। আশা করি, এই স্বীকৃতি আরও অনেককে অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করবে।’