শাহরুখ খান হতে গিয়ে বউ হারাতে চান না তিনি

স্ত্রীর জন্য মানুষ কত কিছুই না করে!

সংসারে শান্তি বজায় রাখার জন্য, স্ত্রীকে সন্তুষ্ট রাখার জন্য ‘স্বামী’ ব্যক্তিটির চেষ্টার কমতি নেই। সেই ‘স্বামী’ সাধারণ কোনো মানুষ হোক কিংবা রিকি পন্টিংয়ের মতো বিশ্বকাপজয়ী তারকা, স্ত্রীর সঙ্গে যে আপস করে চলার কোনো বিকল্প নেই, সেটা সবাই বোঝেন। পন্টিংয়ের কথাই ধরুন, অস্ট্রেলিয়া দলের সাবেক এই বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ। চাকরির টানে স্ত্রী-সন্তান থেকে দূরে থাকলেও স্ত্রী কী চান না চান, বেশ ভালোই মাথায় থাকে পন্টিংয়ের! কে যেচে পড়ে ঝামেলা বাড়াতে চায় বলুন!

সেই স্ত্রীর কারণেই মুখে দাড়ি-টাড়ি রাখার সাহস পান না বলে জানিয়েছেন এই কিংবদন্তি! ফলে, অন্তত দাড়ি রাখার দিক দিয়ে বলিউড তারকা শাহরুখ খানকে কখনো অনুসরণ করার ইচ্ছা হলেও সেটা করতে পারেন না পন্টিং। কারণটা আর কিছুই নয়, স্ত্রী রিয়ান্না ক্যান্টর যে দাড়ি জিনিসটা মোটেও বরদাশত করতে পারেন না!

দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রেরাণাদায়ী কোচ হয়ে উঠেছেন রিকি পন্টিং।
ছবি: টুইটার

ব্যাপারটা একটু খোলাসা করে বলা যাক।

ভারতের মেয়েদের হকি দল গড়ে তোলা, সেটার সাফল্য-ব্যর্থতা, ও পরবর্তী সময়ে বিশ্বকাপ জয় নিয়ে ২০০৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল হিন্দি ছবি ‘চাক দে ইন্ডিয়া’। যেখানে মূল ভূমিকা ছিল শাহরুখ খানের। চলচ্চিত্রের গল্পে একসময় ছেলেদের দলের হয়ে বিশ্বকাপ জিততে ব্যর্থ-সমালোচিত শাহরুখ পরে কোচ হয়ে মেয়েদের দলকে বিশ্বকাপ জেতান। সে পথের নানা বাঁকে দলের উদ্দেশে, দলের খেলোয়াড়দের উদ্দেশে অনুপ্রেরণাদায়ী বেশ কিছু সংলাপ ছিল কবির খানরূপী শাহরুখের কণ্ঠে, যার মধ্যে বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে দলের উদ্দেশে ‘সত্তর মিনিটের’ বক্তৃতা সবচেয়ে বেশি শিহরণ ছড়ায়। চলচ্চিত্রে ‘চাক দে ইন্ডিয়া’ গানটিও ভারতজুড়ে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল।

দিল্লি ক্যাপিটালসের কোচ রিকি পন্টিং যখন কথা বলেন, তখন নাকি সে রকম অনুভূতিই হয় দলের ভারতীয় ওপেনার পৃথ্বী শর। ‘যখনই রিকি স্যার (পন্টিং) কথা বলেন, মাথায় ওই গান বাজতে থাকে, শাহরুখ খানের গানটা,’ সাক্ষাৎকারে বলেছেন শ। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই পন্টিংয়ের সঙ্গে শাহরুখের তুলনা চলে আসে অবধারিতভাবে। একজন নায়কের সঙ্গে তাঁর তুলনা হচ্ছে, এটা ভেবে পন্টিং মনে মনে খুশি হয়েছিলেন কি না কে জানে! তবে ঠিকই বুঝেছেন, খুশি হয়েও লাভ নেই। সে সিনেমায় কড়া হেডমাস্টাররূপী কোচ শাহরুখের বেশভূষাও বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। সে চরিত্রের জন্য হালকা চাপদাড়িও রেখেছিলেন বলিউডের বাদশাহ। আর এই চাপদাড়িতেই সমস্যা পন্টিংয়ের। চাইলেই তো আর শাহরুখের মতো অমন চাপদাড়ি রাখতে পারবেন না! রাখলে যে স্ত্রীই তাঁকে ছেড়ে চলে যাবেন!

গতকাল আইপিএলের চলতি মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসকে বেশ বড় ব্যবধানে হারিয়েছিল পন্টিং-পন্তের দিল্লি। ম্যাচ জয়ের খুশিতেই ম্যাচ শেষে নিজের একটা অভ্যাসের কথা জানিয়েছেন পন্টিং। আর সেটা জানানোর মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিয়েছে, আর যা-ই হোক, শাহরুখের মতো দাড়ি রাখা তাঁর কম্ম নয়! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেকটা ভিডিও প্রকাশ করেছে দিল্লি, যেটার ক্যাপশনে তারা শাহরুখ ও পন্টিংয়ের চেহারার ওই দৃশ্যমান পার্থক্যের কথাই তুলে ধরেছে, ‘কবির খান (চাক দে ইন্ডিয়ায় শাহরুখের করা চরিত্র) আর পন্টিংয়ের মধ্যে পার্থক্য একটাই, কবিরের চাপদাড়ি ছিল, পন্টিংয়ের নেই!’

‘চাক দে ইন্ডিয়া’ ছবির সেই কবির খানরূপী শাহরুখ
সংগৃহীত ছবি

কেন নেই? সেটার জবাব খোদ পন্টিংই দিয়েছেন ওই ভিডিওতে, ‘আমার বউ আমাকে ডিভোর্স দেবে যদি ও কখনো আমাকে দাড়ি রাখতে দেখে! এ জন্য প্রতিটি ম্যাচের আগেই আমি অন্তত একবার করে দাড়ি কেটে তারপর মাঠে আসব। এটা সব সময়ই আমার একটা অভ্যাস ছিল। আমি জানি না আপনারা সবাই ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছেন কি না, কিন্তু আমি সব সময় ম্যাচের আগের রাতে দাড়ি কাটি। দিল্লির প্রতিটি ম্যাচের আগেও আমি সেটাই করব!’

রিয়ান্না ক্যান্টরের সঙ্গে পন্টিংয়ের মন দেওয়া-নেওয়ার কাহিনি আজকের নয়। বহুদিন ধরে পন্টিংয়ের বান্ধবী ছিলেন রিয়ান্না। ২০০২ সালে সংসার পাতেন। ঘরে তিন তিনটে ফুটফুটে সন্তানও আছে এই দম্পতির।

এই সুখের সংসারে এখন কে চাপদাড়ির জন্য আগুন লাগাতে চায়, বলুন!