শূন্য গ্যালারির সামনেই ব্রডের ৫০০

৫০০তম উইকেট পাওয়ার বলটা নিশ্চয় সংগ্রহ করে রাখবেন। ছবি: রয়টার্স
৫০০তম উইকেট পাওয়ার বলটা নিশ্চয় সংগ্রহ করে রাখবেন। ছবি: রয়টার্স

করোনাকালের মূল সমস্যা আজ টের পেলেন স্টুয়ার্ট ব্রড।

টেস্ট ইতিহাসে আজ এমন এক ক্লাবের সদস্য হলেন, যেখানে আগে সদস্য ছিল মাত্র ৬ জন। ক্রেইগ ব্রাফেটকে আজ এলবিডব্লু করে দলকে মহাগুরুত্বপূর্ণ বেকথ্রু এনে দিয়েছেন ব্রড। ম্যানচেস্টার টেস্ট ও সিরিজ জিততে ইংল্যান্ডের আর তখন মাত্র ৭ উইকেট দরকার। কিন্তু ব্যক্তিগরভাবে এই মুহূর্তটা আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্রডের জন্য। ব্রাফেট যে ক্রিকেটের কুলীন সংস্করণে তাঁর ৫০০তম শিকার। তাঁর আগে টেস্টে এ মাইলফলক ছুঁয়েছেন কোর্টনি ওয়ালশ, শেন ওয়ার্ন, মুত্তিয়া মুরালিধরন, গ্লেন ম্যাকগ্রা, অনিল কুম্বলে ও জেমস অ্যান্ডারসন।

মাইলফলক যে ছুঁতে যাচ্ছেন ব্রড সেটা পরশুই বোঝা গেছে। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত এমন মুহূর্তের সাক্ষী হতে গ্যালারিতে হাজির হন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু করোনাকালে এসব আর হওয়ার উপায় নেই। ফলে এমন মুহূর্তটা শুধু সতীর্থদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেই কাটালেন ব্রড। স্টেডিয়ামে পরিবারের কেউ ছিল না বললে ভুল হবে। ম্যাচ রেফারি হিসেবে ক্রিস ব্রড মাঠেই আছেন। কিন্তু নিরপেক্ষ অফিশিয়াল হিসেবে পুত্রের আনন্দে তালি দেবেন, সে উপায়ও নেই!

ব্রডের এই কীর্তিতে অভাবনীয় আরেকটি ব্যাপারও হলো। এই প্রথম টেস্টে দুই প্রান্তেই ৫০০ উইকেট পাওয়া দুজন পেসার বল করলেন। ব্রডের ক্যারিয়ারজুড়েই পাশ থেকে পথ দেখিয়ে যাওয়া জেমস অ্যান্ডারসপ্রন তো এখন ছয় শ উইকেট পাওয়ার দৌড়ে আছেন। টেস্টে দুই প্রান্তেই ৫০০ উইকেত পাওয়া দুই বোলারের বোলিং অবশ্য এর আগেও দেখা গেছে। একই টেস্টে অবসর নেওয়া ম্যাকগ্রা ও ওয়ার্ন তো ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট জয়ের পথে শেষ উইকেট তুলে নেওয়ার কাজটাও ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন।

অ্যান্ডারসনের প্রসঙ্গ আরেকটু বিস্তারিত বলা উচিত। গত এক দশক ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণ ব্রড ও অ্যান্ডারসন সামলেছেন,। তৃতীয় পেসার হিসেবে অনেকেই এসেছেন, আবার হারিয়ে গেছেন। কিন্তু বছরের পর বছর ফিটনেস ধরে রেখে টেস্ট ক্রিকেটে পেস বোলিং করার কাজটা করে দেখাচ্ছেন দুজন। গতি নয়, নিয়ন্ত্রণ আর সুইং দিয়েই যে ভীতিকর পেস আক্রমণ গিড়ে তোলা যায়, তার সেরা উদাহরণ এ দুজন। দুজনের এত মিল দেখেই বোধ হইয় প্রকৃতিও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। বলা ভালো ক্রেইগ ব্রাফেট। এই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ওপেনারকে আউট করেই টেস্টে নিজের ৫০০ উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন অ্যান্ডারসন। তিন বছর পর ব্রডেরও আরাধ্যের ৫০০তম শিকার সেই ব্রাফেট। ব্রডের এ অর্জনে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রিকি পন্টিং, ‘৫০০ উইকেট পাওয়ায় ব্রডকে অভিনন্দন। বরাবরই কঠিন প্রতিপক্ষ ছিলে এবং ইংলিশ কন্ডিশনে খুবই দক্ষ বোলার।’

ব্রডের মাইলফলক ছোঁয়ার পরই উইকেট পাওয়ার কাজে মন দিয়েছেন অন্য পেসাররা। ৩৯৯ রানের লক্ষ্যে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৫ উইকেটে ৮৩ রান তুলেছে।