শ্বশুরের মৃত্যুশোক নিয়েই নামলেন, ম্যাচও জেতালেন

কাল এভাবেই শ্বশুরকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নিতীশ।ছবি: আইপিএল

গতকাল আইপিএলে খেলা হয়েছে দুটি। দিনের প্রথম ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৫৯ রানে হারিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। আগের ম্যাচে মাত্র ৮৪ রানে থামা দলটিকে কাল রানের পাহাড়ে তুলেছেন নিতীশ রানা ও সুনীল নারাইন। মিডল অর্ডারে সুযোগ পেয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান স্পিনার ৩২ বলে ৬৪ রান করেছেন। ৬টি চারের সঙ্গে চারটি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে।

সে তুলনায় নিতীশ একটু কম মারমুখী ছিল। তাঁর ৫৩ বলের ইনিংসে ছিল ১৩টি চার ও একটি ছক্কা। তবে শুরুতে ধাক্কা খাওয়া এক দলকে রান পাহাড়ে তুলতে তাঁর ৮১ রানের ইনিংসটিই রেখেছিল মূল ভূমিকা। তাঁর এ ইনিংসের আগে জানা যায়নি কত বড় শোক সামলে নেমেছেন নিতীশ। শুক্রবারই শ্বশুরকে হারিয়েছেন এই ২৬ বছর বয়সী। তবু দলের সংকটের মুহূর্তে পরদিনই বিকেলে মাঠে নেমে পড়েছেন নিতীশ।

গতকাল পরের ম্যাচেও এমন কিছু দেখা গেছে। মাঝে দুই সপ্তাহ খেলা হয়নি মনদীপ সিং। কালই সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে কাল নেমেছিলেন মনদীপ। অথচ শুক্রবারই বাবাকে হারিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। কঠিন উইকেটে খুব বেশি ভালো করতে পারেননি, মাত্র ১৭ রান করেছেন। কিন্তু পারিবারিক এই বিপর্যয়ের মাঝেও এভাবে খেলতে নেমে যে পেশাদারি মনোভাব দেখিয়েছেন, সেটা মুগ্ধ করেছে অনেককে। এদের মধ্যে আছেন শচীন টেন্ডুলকারও।

বাবার মৃত্যুশোক নিয়েই কাল খেলতে নেমেছিলেন মনদীপ।
ছবি: আইপিএল

এ দুজনের নিবেদন দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি টেন্ডুলকার। টুইটারে দুজনের প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘কাছের মানুষকে হারানো খুবই বেদনাদায়ক। এর চেয়েও কষ্টকর হলো শেষবারের মতো বিদায় বলতে না পারা। মনদীপ-নিতীশ ও ওদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি। তারা যেন এ ধাক্কা দ্রুত সামলে নিতে পারে। আজ (গতকাল) মাঠে নামায় দুজনকেই টুপি খোলা অভিবাদন। দারুণ খেলেছ।’

মনদীপ ও নিতীশের কষ্টটা ভালোভাবেই টের পাচ্ছেন টেন্ডুলকার। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ চলার সময়ে বাবাকে হারিয়েছেন মাস্টার ব্লাস্টার। দেশে ফিরে এসে পিতার শেষকৃত্যে অংশ নিয়ে আবার ফিরে গিয়েছিলেন। ফিরেই কেনিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরিও করেছিলেন টেন্ডুলকার।

গতকাল মনদীপ তাঁর বাবার স্মৃতিতে কিছু করতে পারেননি। তবে দল ১২ রানের এক জয় পেয়ে তাঁর ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে। পুরো পাঞ্জাব দল কালো বাহুবন্ধনী পরে শোক জানিয়েছে। জয়ের পর বাবাকে সে জয় উৎসর্গ করেছেন মনদীপ। তবে এবারের আইপিএলে নিজের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি নিতীশ। শ্বশুর সুরিন্দরের নামে কলকাতা নাইট রাইডার্সের একটি জার্সি বানিয়ে ছিলেন। আর ফিফটি পাওয়ার পর সে জার্সি উঁচিয়ে ধরে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তাঁর প্রতি।