শ্রীলঙ্কা সফর অপচয় ছাড়া কিছু ছিল না

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে ভারতফাইল ছবি: এএফপি

বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মারা ব্যস্ত ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ নিয়ে। এমন অবস্থায় আবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক দিনের ক্রিকেটের সূচি। এ অবস্থায় জৈব সুরক্ষাবলয় ও কোয়ারেন্টিন পর্ব পার করে শ্রীলঙ্কায় দল পাঠানো সম্ভব হতো না ভারতের পক্ষে। তাই ভারতের দ্বিতীয় সারির এক দল গিয়েছিল শ্রীলঙ্কায়।

সে দল সফর শুরু করেছিল দাপটের সঙ্গে। সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটারদের দম্ভও তখন ছিল দেখার মতো। বীরেন্দর শেবাগ বলেছিলেন, ভারতের এত প্রতিভা যে এক দলে কুলানো যায় না। ১৯৯৬ বিশ্বকাপজয়ী শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা কেন ভারতের এই দলকে ভারতের ‘বি দল’ বলেছিলেন, সেটি নিয়েই রানাতুঙ্গাকে ধুয়ে দিয়েছেন শেবাগসহ অনেক সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার।

এর মধ্যে বর্তমান ভারতীয় দলের অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়াও বলে বসলেন, ভারতের প্রতিভার ছড়াছড়ি এত যে এ রকম আরও এক-দুটি দল গড়লে তারাও যেকোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারবে।

কিন্তু ভারতের সফরের শেষটা হয়েছে তিক্ত। একটি ম্যাচে হারলেও ওয়ানডে সিরিজটা ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ভারত, টি-টোয়েন্টিতে সেটাও হয়নি। এগিয়ে গিয়েও করোনাধাক্কায় টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হেরে বসেছে ভারত। হারের পর এক সাবেক ক্রিকেটারের মনে হচ্ছে, এমন সিরিজ খেলাটাই ভারতের জন্য ছিল অপচয়।

তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা ভারতের সিরিজ কাল শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগে ক্রুনাল পান্ডিয়ার করোনা ধরা পড়ে। তাঁর সংস্পর্শে ছিলেন আরও আটজন। মোট নয়জন ক্রিকেটার শেষ দুটি ম্যাচে খেলতে পারেননি। তাই কোনোমতে একাদশ গড়েই মাঠে নেমেছিল ভারত। দ্বিতীয় ম্যাচে তবু ১৩২ রান তুলেছিল সফরকারীরা। গতকাল পূর্ণ ২০ ওভার খেলেও ৮ উইকেট হারিয়ে ৮১ রানে থেমেছে তারা।

ভারত চাইলে সিরিজ বন্ধ করে দিতে পারত। কিন্তু এমন দল নিয়ে জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই জেনেও সিরিজ শেষ করেছে তারা। কারণটা সবার জানা, ভারত এ সিরিজটা করেছে শুধু প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে। এ সিরিজের ফল তাদের কাছে গুরুত্ব পায়নি। তাই ফলাফল যা-ই হোক, সিরিজ শেষ করা নিয়েই আগ্রহ ছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই)।

কুলদীপের ইনিংসে বড় লজ্জা এড়িয়েছে ভারত
ফাইল ছবি: এএফপি

সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার যজুরবিন্দ্র সিংয়ের ধারণা, এভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য সিরিজ খেলাটা বোর্ডের ভুল সিদ্ধান্ত। নিউজএইটিনকে বলেছেন, ‘এই তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টির শ্রীলঙ্কা সফর ভারতের জন্য পুরো অপচয় ছিল। এটা করা হয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের প্রতি (ভারতের) ক্রিকেট বোর্ডের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছা থেকে। শ্রীলঙ্কা বোর্ড আর্থিকভাবে ধুঁকছে। একজনের দরকারের সময়ে প্রতিবেশীর এভাবে হাত বাড়িয়ে দেওয়া প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু সবাইকে বুঝতে হবে, এসব ক্ষেত্রে একটা দেশের জাতীয় সম্মান ও গৌরব জড়িয়ে আছে।’

এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা যত দুর্বলই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কারও বিপক্ষেই দ্বিতীয় দল পাঠানোর পক্ষে নন ভারতের হয়ে ৪টি টেস্ট খেলা যজুরবিন্দ্র, ‘টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সবার পেছনে শ্রীলঙ্কা দল। এ কারণে হয়তো মনে হচ্ছিল, পূর্ণ শক্তির দল না নিয়েও ওদের হারানো যাবে।’