শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটে ‘অর্থ–বিদ্রোহ’
এগিয়ে আসছে শ্রীলঙ্কা দলের ইংল্যান্ড সফরের দিনক্ষণ। মঙ্গলবার রাতেই ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়ে যাওয়ার কথা তাদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ সফরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল যেতে পারবে কি না, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
করোনা-টরোনা নয়, শ্রীলঙ্কা দলের ইংল্যান্ড সফর নিয়ে শঙ্কা জেগেছে দলটির খেলোয়াড়দের বিদ্রোহের কারণে। এই সফরের জন্য ক্রিকেট শ্রীলঙ্কার (এসএলসি) দেওয়া চুক্তির প্রস্তাবটি দলটির বেশির ভাগ সিনিয়র খেলোয়াড়দেরই পছন্দ হয়নি। এ চুক্তিতে সই করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের এই বিদ্রোহের শুরু আরও আগে থেকেই। এসএলসির বার্ষিক কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব নিয়েই সন্তুষ্ট ছিলেন না তাঁরা। এমনকি বার্ষিক কেন্দ্রীয় চুক্তিতেও এখনো সই করেননি অনেক সিনিয়র ক্রিকেটার। তাঁরা মনে করেন, এসএলসির দেওয়া প্রস্তাবে যথেষ্ট স্বচ্ছতা নেই এবং এই চুক্তি সিনিয়র ক্রিকেটারদের জন্য উপযোগী নয়। গত অক্টোবরে আগের কেন্দ্রীয় চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই তাই খেলোয়াড়েরা চুক্তিহীন।
বর্তমানে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের বিভিন্ন সফরের আর্থিক বিষয় নিয়ে প্রতিটি সফরে চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারের ইংল্যান্ড সফরে এসএলসি যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা পছন্দ হয়নি সিনিয়র ক্রিকেটারদের। বিদ্রোহ করে বসেছেন তাঁরা।
এসএলসির বার্ষিক কেন্দ্রীয় চুক্তি নিয়ে শুরুতে বিদ্রোহ করেছিলেন ২৪ জন ক্রিকেটার। সেটা বেড়ে এখন ৩৮ জনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল এই ৩৮ জন ক্রিকেটার এক বিবৃতির মাধ্যমে চুক্তি সই না করার বিষয়টি জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এসএলসির দেওয়া রেটিং পদ্ধতিতে স্বচ্ছতার সমস্যা আছে। এ কারণে আমরা সফরের চুক্তিতে সই করব না।’ খেলোয়াড়দের আইনজীবী নিশান প্রেমাথিরত্নে ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘সফরের চুক্তি ২০২১ সালের বার্ষিক কেন্দ্রীয় চুক্তির ওপর নির্ভর করে। আর সেটা এখনো সই-ই করা হয়নি।’
আগের বছর শ্রীলঙ্কার বার্ষিক কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ছিলেন ৩০ জন খেলোয়াড়। এবার ২৪ জনকে কেন্দ্রীয় চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে এসএলসি। বিদ্রোহ করা খেলোয়াড়েরা তাঁদের বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গত বছর যারা ভালো খেলেছে, সেই সব খেলোয়াড়দের বিষয়টি পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে বিবেচনা না করা হলে আমরা চুক্তিতে সই করব না।’
চুক্তি সই করতে না চাওয়া খেলোয়াড়: কুশল পেরেরা, দিমুথ করুনারত্নে, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, দিনেশ চান্ডিমাল, কুশল মেন্ডিস, নিরোশান ডিকভেলা, সুরঙ্গা লাকমল, দাসুন শানাকা, ওয়ানিদু হাসারাঙা, লাসিথ এম্বুলদেনিয়া, পাথুম নিশাঙ্কা, লাহিরু থিরিমান্নে, দুষ্মন্ত চামিরা, কাসুন রাজিথা, লক্ষ্মণ সান্দাকান, বিশ্ব ফার্নান্ডো, ইসুরু উদানা, ওশাডা ফার্নান্ডো, রমেশ মেন্ডিস, লাহিরু কুমারা, দানুশকা গুনাতিলকা, আশেন বান্ডারা, আকিলা দনাঞ্জয়া, চামিকা করুনারত্নে, আশিথা ফার্নান্ডো, বিনুরা ফার্নান্ডো, শিরান ফার্নান্ডো, আভিশ্কা ফার্নান্ডো, ইশান জয়ারত্নে, চারিথ আসালঙ্কা, দনাঞ্জয়া লক্ষ্মণ, নুয়ান প্রদীপ, সাদিরা সামারাবিক্রমা, কামিল মিশ্র, প্রাভিন জয়াবিক্রমা, রোশেন সিলভা, বিনোদ ভানুকা।