শ্রীলঙ্কায় এবার নানাবাড়ি যাওয়া হচ্ছে না সাইফের

সাইফ হাসান।ফাইল ছবি: প্রথম আলো

এর আগে যতবারই শ্রীলঙ্কা গেছেন, ততবারই নানাবাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা হয়েছে তরুণ ওপেনার সাইফ হাসানের। এবার আর হচ্ছে না। করোনাকালের ক্রিকেট মানেই জৈব সুরক্ষাবলয়ের কঠোর নিয়মনীতি মেনে চলা। বলয়ের বাইরের কারও সঙ্গে দেখা করা যে সাফ নিষেধ। না হলে সাইফের মায়ের পরিবারের সদস্যদের কি আর থামানো যেত!

সাইফের বাবা হাসান রেজা বাংলাদেশি। কিন্তু মা একজন শ্রীলঙ্কান। সাইফের বাবা সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় দুজনের পরিচয় এবং ভালো লাগা। পরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন দুজন। সাইফ জন্মের পর থেকে সৌদি আরবেই ছিলেন। এরপর সাইফের যখন ১০ বছর বয়স, বাংলাদেশে ফেরত আসে তাঁর পরিবার।

সাইফ হাসান বুঝে গেছেন টেস্ট কতটা কঠিন।
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

পরিবারের অমতে বিয়ে করায় সাইফের মায়ের আর কখনোই শ্রীলঙ্কা যাওয়া হয়নি। নানাবাড়ি যাওয়া হয়নি সাইফেরও। নানাবাড়ির গল্প শুনে শুনেই বড় হয়েছেন জাতীয় দলের এই তরুণ ওপেনার। পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার পর তবেই মায়ের পক্ষের পরিবারের সঙ্গে দেখা হয় সাইফের।

এর আগে বয়সভিত্তিক দল ও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফর করেছেন সাইফ। এবারই প্রথমবার শ্রীলঙ্কা গেলেন জাতীয় দলের হয়ে।

২০১৬ সালে প্রথম শ্রীলঙ্কায় বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলতে যান সাইফ। সেখানেই সাইফের মায়ের পরিবারের সঙ্গে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ। নিজেদের মেয়ের একমাত্র ছেলেকে প্রথমবার দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সাইফের নানার বাড়ির সদস্যরা। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার পরও তাঁদের সঙ্গে দেখা হয় সাইফের।

বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে শ্রীলঙ্কা দফর করেছেন ওপেনার সাইফ হাসান।
ফাইল ছবি

আরবের জল–হাওয়ায় বড় হওয়া সাইফ দেশের বাইরেই জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। দেশে ফিরেছেন শুধু ক্রিকেটের টানে। ১০ বছর বয়সে দেশে ফেরার পর ধানমন্ডির একটি ক্রিকেট একাডেমিতে সাইফকে ভর্তি করিয়ে দেন তাঁর বাবা। এরপর সেই সাইফই নিউজিল্যান্ডে ২০১৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন। দল তাঁর অধীনে খেলে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে।

এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট, ‘এ’ দল ও বিসিবি হাইপারফরম্যান্স দলের হয়ে পারফর্ম করে ২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারত সফরে প্রথম জাতীয় দলে ডাক পান সাইফ। ভারতে অভিষেক না হলেও পরের সিরিজেই পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে টেস্ট অভিষেক হয় এই ডানহাতি ওপেনারের। নিয়মিত ওপেনার সাদমান ইসলাম চোটে পড়ায় দেশের হয়ে টানা দুটি টেস্ট খেলেন সাইফ। করোনার লম্বা বিরতির পর সাদমান টেস্ট দলে ফিরলে জায়গা ছাড়তে হয় সাইফের। তবে দলের সঙ্গে ছিলেন তিনি। এবারের শ্রীলঙ্কা সফরেও বদলি ওপেনার হিসেবে দলে আছেন সাইফ।