সরফরাজের পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব হারানোয় ইমরানের হাত নেই

পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদছবি: এএফপি

সাম্প্রতিক সময়ে সরফরাজ আহমেদ মাঠে থাকলে কথা হয়। মাঠের বাইরে থাকলেও কথা হয়। অথচ এক সময় এই সরফরাজ–ই ছিলেন তিন সংস্করণে পাকিস্তানের নির্ভরযোগ্য অধিনায়ক!

কিন্তু দিন বদলেছে বেশ আগেই। সরফরাজ নেতৃত্ব হারিয়ে আর দশজন সাধারণ ক্রিকেটারের মতো খেলছেন। দলেও জায়গাটা পাকা নয়, তাই আসা–যাওয়ার মধ্যে থাকতে হয়। আর সমালোচনা তো আছেই। ‘হাই’ তোলা নিয়ে রঙ্গ–রসিকতাও কম হয় না।

আচ্ছা, যদি প্রশ্ন ওঠে সরফরাজের এইসব দিন দেখা শুরু হয়েছে কবে থেকে, নেতৃত্ব হারানোর পর? তাহলে নেতৃত্বটা তিনি হারালেন কীভাবে? অনেকে কিন্তু এর পেছনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বকাপ জেতানো সাবেক অধিনায়ক ইমরান খানের অদৃশ্য হাত দেখেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) পৃষ্ঠপোষকও ইমরান। তিনিই পেছন থেকে কলকাঠি নেড়ে সরফরাজকে সরিয়েছেন নেতৃত্ব থেকে—এমন কথাও উঠেছে।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান এহসান মানি জানালেন, ভাবনাটা একদম ভুল। গত বছর সরফরাজের কাছ থেকে পাকিস্তান দলের নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ায় দেশের প্রধানমন্ত্রীর কোনো হাত নেই। এ সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন স্বয়ং পিসিবি চেয়ারম্যান এহসান মানি নিজেই। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘জিও টিভি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন পিসিবি প্রধান।

গত বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে পাকিস্তান দলকে প্রকাশ্যেই পরামর্শ দিয়েছিলেন ইমরান খান—টস জিতে আগে ব্যাটিং নাও।ম্যানচেস্টারে বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই ম্যাচে টসও জিতেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ। কিন্তু দেশের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ও প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ কানে তোলেননি তিনি। আগে ফিল্ডিংয়ে নেমেছিলেন। অনেকের মতে, অধিনায়ক সরফরাজের ভাগ্য তখনই ঠিক হয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু তখনই তিনি নেতৃত্ব হারাননি। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়ার পর দুর্বল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ঘরের মাঠে টি–টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছিল সরফরাজের পাকিস্তান। এরপর আর অধিনায়ক হিসেবে টিকে থাকতে পারেননি এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।

সাক্ষাৎকারে এহসান মানি জানান, ইমরান নয়, তাঁর সিদ্ধান্তেই নেতৃত্ব হারিয়েছিলেন সরফরাজ, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমরা অনেক বিষয়েই পরামর্শ পাই। কিন্তু তিনি দেশ চালাতে ব্যস্ত, ক্রিকেটে একদমই হস্তক্ষেপ করেন না। এটা (সরফরাজকে হটানো) ছিল আমার সিদ্ধান্ত।’

নেতৃত্ব যে হারাচ্ছেন তা সরফরাজ নিজেই টের পেয়েছিলেন আগেই। গত বছরের নভেম্বরে শহীদ আফ্রিদির সঙ্গে আলাপচারিতায় এমন কথা বলেন তিনি। আফ্রিদির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ হয় সেই আলাপ। সরফরাজ বলেছিলেন, ‘সত্যি বলতে নেতৃত্ব যে হারাচ্ছি তা আগেই টের পেয়েছিলাম। তাই প্রস্তুত ছিলাম মানসিকভাবে।’