সাকিবের আইপিএল খেলাই এখন শঙ্কায়

সাকিব আল হাসান।প্রথম আলো

শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজের সময় আইপিএল খেলার জন্য ছুটি চেয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সমালোচনার মুখে পড়েন সাকিব আল হাসান। গত রাতে সাকিব একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটের ফেসবুক লাইভে এসে পাল্টা দাবি জানান। সাকিব নাকি টেস্ট খেলতে না চাওয়ার কথা বিসিবিকে বলেননি। বিসিবিকে দেওয়া সাকিবের ছুটির চিঠিও নাকি বিসিবি ঠিকমতো পড়েইনি।

বিসিবিও পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি। এখন যা সম্ভাবনা, তাতে সাকিবের আইপিএল খেলার অনাপত্তিপত্রই না আবার ধরে রাখে বিসিবি! বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানের কথায় সেই ইঙ্গিতই পাওয়া গেল।

কাল সাকিবের সাক্ষাৎকারের পর থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গন উত্তাল। সংবাদমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সবখানেই সাকিবকে ঘিরে বিতর্ক। আজ সন্ধ্যায় সাকিবের এ ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালক বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসানের বাসায় জড়ো হন।

কেকেআরের হয়ে আইপিএল খেলার কথা সাকিবের।
ছবি: আইপিএল

রাতে বৈঠক শেষে আকরাম খান সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘অনেক কথার মধ্যে একটা কথা শুনেছি যে ও (সাকিব) চিঠি দিয়েছে যে এবং আমি নাকি চিঠি পড়িনি। ঠিক আছে, আমি যেহেতু চিঠি পড়িনি, ভুল বুঝতে পেরেছি। তবে ওর কথায় বোঝা গেছে, সে টেস্ট খেলতে চাইছে। কাল–পরশু আমি বোর্ডের সবার সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করে অনাপত্তিপত্রের ব্যাপারে চিন্তা করব। আগ্রহ থাকলে সাকিব শ্রীলঙ্কায় টেস্ট খেলবে। আর বাকি যেটা, আমরা দেখে সিদ্ধান্ত নেব কী করা যায় না করা যায়।’

বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান তাঁর চিঠি পড়েননি বলে সাকিব সাবেক এই অধিনায়কের দিকে সরাসরি আঙুল তুলেছেন। আসলেই কি আকরাম খান চিঠিটা পড়েননি? এমন প্রশ্নের জবাবে আজ আকরাম খান বলেছেন, ‘সাকিব চিঠির মধ্যে বলেছে, শ্রীলঙ্কায় যে সিরিজটা আমরা খেলতে যাচ্ছি, সেখানে সে না খেলে আইপিএল খেলতে চায়। শ্রীলঙ্কায় আমরা কী খেলতে যাচ্ছি সেটা আপনারাও জানেন, আমরাও জানি, সবাই জানে। এই কথাটা ওখানে উল্লেখ করা আছে। তারপরও যেহেতু সে নিজের মুখে বলেছে যে সে টেস্ট খেলতে চায়, তো বিবেচনা করব।’

শ্রীলঙ্কা সফর থেকে ছুটি নিয়েছেন সাকিব।
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

তবে বোর্ডের বিরুদ্ধে কথা বলে যে সাকিব সহজে পার পাচ্ছেন না, সেটি বোঝা গেল আকরাম খানের কথায়, ‘আমরা খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় যখন ২০-৩০ হাজার টাকা পেতাম, তখন কিন্তু আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করতাম। আমরা বোর্ডের বিপক্ষে কোনো দিন বলি না। বোর্ড মিটিংয়ে এ ব্যাপারেও (সাকিবের বোর্ডের বিরুদ্ধে বলা) আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আজ আমাদের আলাপ হয়েছে।’

সাকিব তাঁর সাক্ষাৎকারে বিসিবির হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) বিভাগের প্রধান নাঈমুর রহমানের কাজের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। আজ বৈঠক শেষে সাকিবের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সাবেক এই অধিনায়ক বলছিলেন, ‘এটা আমার জন্য অপ্রত্যাশিত। সবার জন্যই অপ্রত্যাশিত হওয়ার কথা। সবাই জানে যে পাঁচ বছর আগে এইচপি কোথায় ছিল, এখন কোথায় আছে। আমাদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ক্রিকেটাররা এইচপি হয়ে জাতীয় দলে কিন্তু খেলেছে, পারফর্ম করছে। এটা একেবারেই দৃশ্যমান। কিন্তু যখন এইচপি ভালো করছে, তখন এমন কথা বলা আমার কাছে অবাক করার মতো। এর পেছনে অন্য কিছু আছে কি না, জানি না।’