সাকিবের আইপিএলে যাওয়ায় খারাপ কিছু দেখেন না মাহমুদ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে খালেদ মাহমুদপ্রথম আলো
ফেসবুক লাইভে সাকিবের বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্যের পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া আসছে ক্রিকেট বোর্ডসহ বিভিন্ন অঙ্গন থেকেই। এই বিতর্কে এবার মুখ খুললেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ।

জাতীয় দলের খেলার সময় আইপিএল খেলতে চেয়েছেন সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। সেই বিতর্কের মধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনাপত্তিপত্র নিয়ে আজ সকালে ভারতে গেছেন সাকিব। তবে বিতর্ক থামেনি তাতে। কিছুদিন আগে ফেসবুক লাইভে সাকিবের বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্যের পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া আসছে ক্রিকেট বোর্ডসহ বিভিন্ন অঙ্গন থেকেই। এই বিতর্কে এবার মুখ খুললেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির পরিচালক খালেদ মাহমুদ। সাকিবের আইপিএল খেলতে চাওয়া বা যাওয়ার মধ্যে খারাপ কিছু দেখেন না মাহমুদ; বরং এটা জাতীয় দলের জন্য ভালো হতে পারে বলেই মনে করেন তিনি।

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে খালেদ মাহমুদ
প্রথম আলো

মিরপুরে আজ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান খালেদ মাহমুদ। সেখানেই এসেছে সাকিবের আইপিএল খেলতে যাওয়ার প্রসঙ্গ। এ নিয়ে খালেদ মাহমুদের কথা, ‘এখানে খারাপ কিছু তো নেই। কারণ, আপনি যেখানে খেলতে যাচ্ছেন, সেটা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অন্যতম সেরা টুর্নামেন্ট। বিশ্বের সেরা ক্রিকেটাররাই ওখানে খেলে। তো ওদের অভিজ্ঞতাটা তো অবশ্যই সাকিবের কাজে লাগবে।’

মোস্তাফিজও মনে হয় যাবে। আমাদের দুজন খেলোয়াড় আইপিএল খেলতে গেলে ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে। আমি বলব, খারাপ তো অবশ্যই হবে না।

সাকিবের মতো আইপিএলের নিলামে দল পেয়েছেন বাংলাদেশ দলের পেসার মোস্তাফিজুর রহমানও। তিনি অবশ্য বলেছেন, বোর্ড যেটা ভালো মনে করে, সেটাই করবেন। তাঁর কাছে দেশ আগে, সেটাও জানিয়ে গেছেন নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে। তবে খালেদ মাহমুদের কথা শুনে মনে হচ্ছে, সাকিবের মতো মোস্তাফিজকেও আইপিএলের জন্য অনাপত্তিপত্র দেবে বিসিবি। মাহমুদ বলেছেন, ‘মোস্তাফিজও মনে হয় যাবে। আমাদের দুজন খেলোয়াড় আইপিএল খেলতে গেলে ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের জন্য অনেক ভালো হবে। আমি বলব, খারাপ তো অবশ্যই হবে না।’

সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান
প্রথম আলো


বিসিবিকে লেখা চিঠিতে এবং ফেসবুক লাইভে সাকিব দাবি করেছেন, এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতেই তিনি আইপিএলে খেলতে চেয়েছেন। এতে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলেরই লাভ হবে বলে মনে করেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। খালেদ মাহমুদও এই বিষয়ে সাকিবের সঙ্গে একমত, ‘বোর্ড যখন এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে, তখন তো ভুল বলা যাবে না। ক্রিকেট বোর্ড চিন্তা করেই অনুমতি দিয়েছে (সাকিবকে আইপিএলে খেলার)। ইংল্যান্ডে গত বিশ্বকাপে আমরা ওর পারফরম্যান্সের কারণেই স্বপ্ন দেখতে পেরেছিলাম যে সেমিফাইনাল খেলব। তা হয়নি। বলা যায় না, এবার হতেও পারে সেটা।’

আইপিএল-বিতর্ক ছাড়াও ফেসবুক লাইভে সাকিব ক্রিকেট বোর্ড নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন। কয়েকজন বোর্ড পরিচালকের কর্মদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সাকিবের নিশানায় পড়েছেন বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান আকরাম খান ও হাই পারফরম্যান্স বিভাগের প্রধান নাঈমুর রহমান। দুই সাবেক অধিনায়কই প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, সাকিবের কাছ থেকে তাঁরা আরও সম্মান আশা করেছিলেন।

আমি এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। শুধু বলতে চাই যে বিব্রতকর তো একটু লাগবেই। দুজনই আমাদের দেশের আইকন। মাশরাফি বাংলাদেশ দলের আইকন, সফলতম অধিনায়ক, একজন লিজেন্ড। আর সাকিব তো বিশ্বসেরা।


কাছাকাছি সময়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বোর্ড পরিচালকদের নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন নির্বাচকদেরও। কাকতালীয়ভাবে সাকিব-মাশরাফি দুজনেই আবার প্রশংসা করেছেন খালেদ মাহমুদের। তবে এ সবকিছু নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতে রাজি নন মাহমুদ, ‘আমি এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। শুধু বলতে চাই যে বিব্রতকর তো একটু লাগবেই। দুজনই আমাদের দেশের আইকন। মাশরাফি বাংলাদেশ দলের আইকন, সফলতম অধিনায়ক, একজন লিজেন্ড। আর সাকিব তো বিশ্বসেরা। ওর কথা বললে শেষ হবে না। দুজনই দেশের আইকন, সেরা পারফরমার, সব দিক থেকেই। যেটা বলেছে, কোনো দুঃখ থেকে এ কথাগুলো আসছে কি না, আমি জানি না। তবে কথাগুলো একটু বিব্রতকর তো অবশ্যই।’

খালেদ মাহমুদ ও মাশরাফি বিন মুর্তজা
প্রথম আলো


সাকিব-মাশরাফির মন্তব্যের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেটি খুব শিগগিরই স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন খালেদ মাহমুদ, ‘এগুলোকে ওদের ব্যক্তিগত অভিমত মনে করি আমি। এটাকে আমরা যতটা গুরুত্ব দিচ্ছি, ততটা গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নাই। খুবই সামান্য বিষয়। যেটা আমরা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করে ফেলতে পারি। এটা নিয়ে আসলে এত কথা বলাও ঠিক না।’

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন