সাব্বিরের ফিফটি, আজও ব্যর্থ সাকিব

রানের দেখা পেলেন সাব্বির।ছবি: প্রথম আলো

টুর্নামেন্ট প্রায় শেষের দিকে, ব্যাটিংয়ে ছন্দ খুঁজে পাননি সাকিব আল হাসান। বোলিংয়ে উল্লেখ করার মতো উইকেট না পেলেও ভালো ইকোনমি রেট ছিল তাঁর ঢাল। আজ বেক্সিমকো ঢাকার বিপক্ষে সেটিও ধরে রাখা যায়নি। ঢাকা ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম সাকিবের এক ওভারেই মারলেন ৪ ছক্কা।

৩ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে উইকেটশূন্য আর ব্যাটিংয়ে করেছেন ৮ রান। সাকিব পারেননি, জেমকন খুলনাও আটকে আছে টানা হারের বৃত্তে, ঢাকার কাছে আজ তারা হেরেছে ২০ রানে।

দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন নাঈম।
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা যেভাবে শুরু করেছিল, ২০০ রানের স্কোর পাওয়া কঠিন ছিল না। সাকিবের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে নাঈম মারলেন ৪ ছক্কা, ওই ওভারেই উঠল ২৬ রান।

আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লং অন, স্কয়ার লেগ দিয়ে সাকিবকে যেভাবে আছড়ে ফেলছিলেন ঢাকার ২১ বছর বয়সী ওপেনার, বড় একটা ইনিংস তাঁর কাছে পাওনাই হয়ে গেয়েছিল। কিন্তু নাঈম-ঝড়টা বেশিক্ষণ দেখা যায়নি। শহিদুল ইসলামের বলে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হয়ে থেমেছেন ১৭ বলে ৩৬ রান করে।

ব্যক্তিগত রান বড় না হলেও নাঈম যে ‘মোমেন্টাম’ এনে দিয়েছেন দলকে, সেটি কাজে লাগিয়েছেন তাঁর উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী সাব্বির রহমান। পেয়েছেন টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ফিফটি, কাটিয়েছেন রানখরা। ১১ ওভার শেষেও ঢাকার রানরেট থেকেছে ১০-এর ওপরে। কিন্তু ঢাকার রানের গতি কিছুটা এরপরই কমেছে। ১০.৪ ওভারে ১ উইকেটে ১০৫ থেকে হুট করেই ঢাকার স্কোর ৪ উইকেটে ১১৬, ১০ বলে ১১ রানের মধ্যে ঢাকা হারিয়েছে ৩ উইকেট।

ঝড় তুলেছিলেন আকবরও।
ছবি: প্রথম আলো

এর মধ্যে ছিল অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের উইকেটও। মাশরাফি বিন মুর্তজার অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার ফ্লিক করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড়, পয়েন্টে শামীম হোসেনের দুর্দান্ত ক্যাচ হওয়ার আগে ঢাকা অধিনায়ক করতে পেরেছেন মাত্র ৩ রান। তবু ঢাকার ২০০ রানের স্কোর গড়া অসম্ভব ছিল না, সম্ভবত নাঈমে অনুপ্রাণিত হয়ে আকবর আলী খুলনার আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামের করা ১৫তম ওভারে মারলেন ৪ ছক্কা। হাসান মাহমুদের বলে কভারে মাশরাফির ক্যাচ হওয়ার আগে আকবর করে গেছেন ১৪ বলে ৩১ রান।

নাঈম (৩৬), আল আমিন (৩৬), আকবর (৩১)—ঢাকার তিন ব্যাটসম্যান থিতু হয়েও পারেননি ফিফটি পূর্ণ করতে। সাব্বির এ ভুল করেননি। শহিদুল ইসলামের শিকার হওয়ার আগে করেছেন ৩৮ বলে ৫৬ রান। ১৬.৪ ওভারে সাব্বির আউট হওয়ার পর ঢাকার রানের চাকা বেশ শ্লথ হয়েছে। শেষ ১৮ বলে ঢাকা তুলতে পেরেছে ১২ রান। ২০ ওভার শেষে ঢাকার স্কোর ৭ উইকেটে ১৭৯। মাশরাফি ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট।

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট পেয়েছেন রবি।
ছবি: প্রথম আলো

তারকাসমৃদ্ধ খুলনার কাছে ১৮০ রানের লক্ষ্যটা হয়ে গেছে অনেক বড়। সাকিব ব্যর্থ হয়েছেন। মাহমুদউল্লাহ ২৩ রানের বেশি করতে পারেননি। আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও মাশরাফি করেছেন ১ রান। খুলনার ব্যাটসম্যানদের যাওয়া-আসার মিছিলে ওপেনার জহুরুল ইসলামই যা একটু লড়েছেন। নাসুম আহমেদের বলে ফেরার আগে ৩৬ বলে করেছেন ৫৩ রান। খুলনা গুটিয়ে গেছে ১৯.৩ ওভারে ১৫৯ রান তুলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত রবিউল ইসলাম বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে আবির্ভূত হয়েছেন দুর্দান্ত এক অফ স্পিনার হিসেবে! আজ পেয়েছেন ২৭ রানে ৫ উইকেট, যেটি তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার–সেরা বোলিং। এই টুর্নামেন্টে রবিই প্রথম বোলার, যিনি ইনিংসে পেলেন ৫ উইকেট। ৫ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়ে চলে এসেছেন টুর্নামেন্টে সেরা পাঁচ বোলারের তালিকাতে।

বল হাতে রবি আলো ছড়ালেও ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে ছন্দে ফেরা সাব্বিরের হাতে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ যিনিই হন, শেষ চার নিশ্চিত হওয়াতেই আনন্দিত ঢাকা।