সিরাজের চোখের জলের শক্তি দেখলেন ওয়ার্নার

সিডনি টেস্টেও শুরুতে সাফল্য পেয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজছবি: এএফপি

এই সুর, এই মূর্ছনার কোনো তুলনা নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা সুর তো এটি—নিজ দেশের জাতীয় সংগীত। সেই সুরে চোখ ভিজে যাওয়া মধুর এক অনুভূতি। জাতীয় সংগীতে কারও চোখ ভিজতে দেখাও সুন্দরতম দৃশ্যগুলোর একটি।

আজ সিডনিতে সেই দৃশ্যই দেখা গেল। ভারতের জাতীয় সংগীতের সুরের আবেগে চোখ ভেজালেন ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা মোহাম্মদ সিরাজ।

অস্ট্রেলিয়া সফরকে কী বলবেন সিরাজ? ভারতীয় দলের হয়ে টেস্ট খেলার স্বপ্ন নিয়ে অস্ট্রেলিয়া এলেন। কিন্তু এসেই পেলেন বাবা হারানোর দুঃসংবাদ। তিনি ফিরে যেতে পারতেন দেশে। কিন্তু যাননি।

যে বাবা চিরদিন স্বপ্ন দেখেছেন তাঁর ছেলে ভারতের হয়ে খেলবে, তাঁর আত্মাকে সম্মান দিতে শোক বুকে চেপে খেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

তরুণ এই ফাস্ট বোলারের প্রতিশ্রুতির মাত্রাটা তখনই টের পাওয়া গিয়েছিল। মেলবোর্নে টেস্ট অভিষেকেই দুই ইনিংস মিলে ৫ উইকেট নিয়ে নিজের প্রতিশ্রুতির প্রায়োগিক দিকটা দেখিয়েছেন। আজ সিডনিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট শুরুর আগে সিরাজ প্রমাণ রাখলেন আবেগেরও।

টসের পর দুই দেশের জাতীয় সংগীত বেজে উঠল। অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের সব খেলোয়াড় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন। ভারতের ‘জনগণ মন...’ সবে শেষ হয়েছে, টেলিভিশন পর্দায় ভেসে উঠল সিরাজের আবেগমথিত মুখ। কাঁদছিলেন তিনি। দুচোখ বেয়ে ঝরে পড়ছিল অশ্রুজল।

দুই হাত দিয়ে তা মুছলেন। ক্রিকেট মাঠে অনেক দৃশ্যেরই চিত্রায়ণ হয়। কিন্তু জাতীয় সংগীতের সুরে কোনো খেলোয়াড় কাঁদছেন—এমন দৃশ্য ক্রিকেট শেষ কবে দেখেছিল!

চোখের জলের আবেগকে মাঠের খেলায় শক্তিতে রূপান্তরিত করতে খুব বেশি সময় নেননি সিরাজ। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাকফুটে ঠেলেছেন শুরুতেই।

চোট কাটিয়ে মাঠে নামা ডেভিড ওয়ার্নারের উইকেটটি তুলে নেন তিনি। সিরাজেরই শরীরের বাইরে পিচ করা একটা বল ড্রাইভ করে স্লিপে চেতেশ্বর পূজারাকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ওয়ার্নার। দিনের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় ওভারেই টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের ষষ্ঠ উইকেটটি তুলে নেন তিনি।

ওয়ার্নারকে তুলে নেন সিরাজ
ছবি: এএফপি

৭ ওভারের পর বৃষ্টি এসে বন্ধ রেখেছিল খেলা। বিরতির পর অস্ট্রেলিয়া অবশ্য কোনো উইকেট হারায়নি। চা–বিরতির আগে অস্ট্রেলিয়া ৩১ ওভার ব্যাটিং করে ১ উইকেটে ৯৩ রান তুলেছে।

অভিষিক্ত উইল পুকোভস্কি তুলে নিয়েছেন তাঁর প্রথম ফিফটি (৫৪*), তাঁর সঙ্গী মারনাস লাবুশান অপরাজিত ৩৪ রানে।