সুমনের তোপ আর তৌহিদ-মাহমুদুলের ‘লেটার মার্কসে’ সিরিজ বাংলাদেশের

রানের জন্য দৌড়াচ্ছেন তৌহিদ ও মাহমুদুল।ছবি: বিসিবির সৌজন্যে

আত্মবিশ্বাসটা সিরিজের চট্টগ্রাম পর্ব থেকেই নিয়ে এসেছিল বাংলাদেশ ইমার্জিং দল। প্রথমে একমাত্র চার দিনের ম্যাচ সহজে জিতল। এরপর করোনার কারণে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটি বাতিল হওয়ার পরের দুই ম্যাচেই আয়ারল্যান্ড উলভসকে অনায়াসে হারায় সাইফ হাসানের দল। পাঁচ ওয়ানডের সিরিজের চতুর্থ ম্যাচটি আজ তাই আইরিশদের জন্য ছিল সিরিজে সমতা ফেরানোর স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার ম্যাচ। কিন্তু মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেটি আর হতে দিলেন না ইমার্জিং দলের ক্রিকেটাররা।

আইরিশদের আগে ব্যাট করতে পাঠিয়ে ১৮২ রানে অলআউট করে সেই রান ৮ উইকেট হাতে রেখে তাড়া করে ফেলে ইমার্জিং দল। বল হাতে সুমন খানের দারুণ পারফরম্যান্স আর ব্যাটিংয়ে মাহমুদুল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়ের ৮০ রান ছাড়ানো দুই ইনিংস—এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ইমার্জিং দলের ওয়ানডে সিরিজ জয়ের গল্পে আজকের বড় ‘হাইলাইটস’ এগুলো।

প্রথম ইনিংসে কাজটা সহজ করে দেন মূলত পেসার সুমন খান। নিজের প্রথম স্পেলেই ৩ উইকেট নিয়ে আইরিশ টপ অর্ডারে ফাটল ধরান এই পেসার। হ্যাটট্রিকের সুযোগও সৃষ্টি করেছিলেন।

ম্যাচসেরা সুমন।
ছবি: বিসিবি

নতুন বলে আরেক পেসার মুকিদুল ইসলাম আয়ারল্যান্ডের ওপেনার স্টিফেন দোহানির উইকেট নেওয়ার পর শুরু হয় সুমনের আগ্রাসনের গল্প। সুইং ও আঁটসাঁট লাইন-লেংথে একে একে বশ করেন আরেক আইরিশ ওপেনার জেরমি ললার, হ্যারি টেক্টর আর কুর্তিস ক্যাম্পারকে। ইনিংসের প্রথম ১২ ওভারে ৫৪ রান তুলতেই ৪ উইকেট নেই সফরকারী দলের।

শুরুর সেই ধাক্কাটা কাটিয়ে উঠতে পারেনি আইরিশরা। পেসার মুকিদুল, সাইফ হাসান ও রকিবুল হাসানরা চেপে ধরেন আইরিশ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। শেষে এসে সেই সুমনই ইয়র্কারে পিটার চেজকে বোল্ড করে আইরিশ ইনিংসের ইতি টানেন।

মাঝে ছোট ছোট জুটি গড়লেও মাত্র ১৮২ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। বল হাতে ৪ উইকেট নেন সুমন। মিরপুরের মাঠে বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপের ফাইনালে সর্বশেষ ৫০ ওভারের ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সুমন।

ম্যাচ শেষে দুই দলের খেলোয়াড়দের অভিবাদন পর্ব।
ছবি: বিসিবি

নিয়মিত ওপেনার সাইফ ছাড়াই ১৮৩ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নামে ইমার্জিং দল। ফিল্ডিংয়ের সময় কাঁধে চোট পাওয়ায় ওপেনিংয়ে নামেননি আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সাইফ। তানজিদ হাসানের সঙ্গে ইনিংসের সূচনা করেন মাহমুদুল হাসান। ২ রান করে তামিম আউট হওয়ার পর হতাশ করেন তিনে নামা ইয়াসির আলী। দুজনই আউট হন পিটার চেসের বলে। ৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তখন ধুঁকছে!

এরপর অবশ্য মাহমুদুল ও তৌহিদ কোনো আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি। মিরপুরের ২২ গজে সফরকারীদের শাসন করেন দুই ব্যাটসম্যান। ১৭৬ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে ম্যাচ শেষ করে আসেন যুব বিশ্বকাপজয়ী দুই ব্যাটসম্যান। হৃদয় ৯৭ বলে ৮৮ ও মাহমুদুল ১৩৫ বলে ৮০ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন। লেটার মার্কস বটে! দুজনের ব্যাটে ৫১ বলে হাতে রেখে ৮ উইকেটের বড় জয় পায় ইমার্জিং দল।