সেই ‘৬১’ ফেরাতে পারবে বাংলাদেশ?

চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা সর্বশেষ ওয়ানডেতে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ২০১১ সালের সেই ম্যাচে ৬১ রানে অলআউট হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।প্রথম আলো ফাইল ছবি

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ২০১১ সালের বাংলাদেশ সফরের সূচিটা প্রায় এবারের মতোই ছিল। ওই বছরও ঢাকায় প্রথম দুটি ওয়ানডে খেলে চট্টগ্রামে যায় দুই দল। সেখানে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে খেলার পর প্রথম টেস্ট, এরপর আবার ঢাকায় প্রত্যাবর্তন। সূচিতে পার্থক্য বলতে এবার কোনো টি-টোয়েন্টি নেই, কিন্তু ২০১১ সালে ঢাকায় একমাত্র টি-টোয়েন্টি দিয়েই শুরু হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই বাংলাদেশ সফর।

সোয়া নয় বছর আগামীকাল সোমবার আবার চট্টগ্রামে ওয়ানডেতে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১১ সালের শেষ ওয়ানডেটা ছিল এবারের মতোই ‘মরা’ ম্যাচ। ঢাকায় প্রথম দুটি ম্যাচ জিতেই যে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবারও সেই ‘মরা’ ম্যাচই ভাগ্যে জুটল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের। তবে পার্থক্য আইসিসির ওয়ানডে সুপার লিগের কারণে এবারের ম্যাচটির গুরুত্ব যথেষ্টই আছে। আর এবার ঢাকায় সিরিজ জয় নিশ্চিত করে তবেই চট্টগ্রামের বিমানে চড়েছে বাংলাদেশ।

২০১১ সালে সিরিজ হেরে চট্টগ্রামে গেলেও তৃতীয় ওয়ানডেতে বড় রকমের প্রতিশোধ নিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের মাস সাতেক আগে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুই দলের বিশ্বকাপ ম্যাচটা যে বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম দুঃখের ইতিহাসই হয়ে আছে। বাংলাদেশ যে অলআউট হয়েছিল নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৫৮ রানে।

ড্যারেন স্যামিকে আউট করার পর সাকিব আল হাসান।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

বছর শেষ না হতেই বাংলাদেশ পাল্টা জবাব দিয়ে দেবে, কে ভাবতে পেরেছিল! ২০১১ সালে ১৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে তৃতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট মাত্র ৬১ রানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডেতে এর চেয়ে কম রানে অলআউট হয়েছে মাত্র একবারই, ২০০৪ সালে কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫৪ রানে। বাংলাদেশও এর চেয়ে কম রানের ওয়ানডেতে কোনো দলকে অলআউট করেছে মাত্র একবার, ২০০৯ সালে চট্টগ্রামেই জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানে।

দিবারাত্রির সেই ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল বাংলাদেশ। ১০ রানে প্রথম উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার ডানজা হায়াটকে ইমরুল কায়েসের ক্যাচ বানান পেসার নাজমুল হোসেন। এরপর আর কোনো উইকেট না হারিয়েই ৩৩ রান তুলে ফেলে ক্যারিবীয়রা। একাদশ ওভারে আরেক পেসার শফিউল ইসলাম মারলন স্যামুয়েলসকে ফেরাতেই ধসের সূচনা।

পরের ওভারে ২ বলে ২ উইকেট পেয়ে গেলেন নাসির হোসেন, ফেরালেন কাইরান পাওয়েল ও কাইরন পোলার্ডকে। এক ওভার পরে শফিউলের দ্বিতীয় শিকার ড্যারেন ব্রাভো। ১৪তম ওভারে প্রথমবার বল হাতে নিয়েই প্রথম বলে সাকিব আল হাসান ফেরালেন ড্যারেন স্যামিকে। ১ উইকেটে ৩২ থেকে ১৫ বলের মধ্যেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে ৩৮। ক্যারিবীয়রা শেষ পর্যন্ত অলআউট ২২ ওভারে ৬১ রানে।

টানা দুই বলে উইকেট পেয়েছিলেন নাসির হোসেন (ডানে)।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

ওই ম্যাচে ৫ ওভার বোলিং করে সাকিব নিয়েছিলেন ১৬ রানে ৪ উইকেট। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ওয়ানডেতে সাকিবের সেরা বোলিং ছিল এটিই। ওই ম্যাচে ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। রান তাড়ায় ৬২ রানের লক্ষ্যটা বাংলাদেশ ছুঁয়ে ফেলেছিল ৮ উইকেট ও ১৮০ বল হাতে রেখেই।

সেই ম্যাচের পরে সাকিব বলেছিলেন, তিনি চট্টগ্রামে বোলিং করাটা সব সময়ই উপভোগ করেন। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাকিবের বোলিং পরিসংখ্যানটাও কী ঝলমলে! টেস্টে এখানে ১৬ ম্যাচে ৬০ উইকেট তাঁর, ওয়ানডেতে ১৫ ম্যাচে ৩০ উইকেট। মিরপুরে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ৬ উইকেট নেওয়া সাকিব কি আগামীকাল চট্টগ্রামেও নাভিশ্বাস ছোটাবেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের?