‘সেরা ব্যাটসম্যানরা কিন্তু বেশির ভাগই ভারতের’

আইপিএলে এবার রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্স করেন মোস্তাফিজুর রহমান।ছবি: টুইটার

আইপিএল মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে সব কটি ম্যাচেই খেলেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। নিয়েছেন ৮ উইকেট।

এবার চোখ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজে। দুদিন আগে ভারত থেকে ফিরে সরকারি নির্দেশনা মেনে মোস্তাফিজ এখন আছেন ঢাকার একটি হোটেলে কোয়ারেন্টিনে। সেখান থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন আইপিএল–অভিজ্ঞতা নিয়ে—

প্রশ্ন:

প্রশ্ন: দেশে ফিরেই আবার কোয়ারেন্টিন। এই বছরটা তো কোয়ারেন্টিনেই কাটিয়ে দিচ্ছেন!

মোস্তাফিজুর রহমান: কী আর করা। ভারতেও ছিলাম। এখানেও আছি। আইপিএলে এক দলের একজনের করোনা হওয়ার পরই আমরা একদম রুম কোয়ারেন্টিনে ছিলাম। দেশে ফেরার আগের পাঁচ-ছয় দিন এক রুমেই বন্দী ছিলাম। এরপর এসেছি ভাড়া করা বিমানে। এখানে এসেও কোয়ারেন্টিন করছি।

আইপিএলে খুঁজে পাওয়া ছন্দ এই বিরতিতে কেটে যেতে পারে বলে মনে করেন মোস্তাফিজ।
ছবি: টুইটার
প্রশ্ন:

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে এই কোয়ারেন্টিন প্রস্তুতিতে প্রভাব পড়বে না তো?

মোস্তাফিজ: হ্যাঁ, প্রভাব পড়া স্বাভাবিক। আইপিএলে একটা ছন্দে ছিলাম। এখন বেশ কিছুদিন বিরতি পড়লে তো সমস্যা হওয়ারই কথা। হোটেলে বসে আপনি যতই ফিটনেস নিয়ে কাজ করেন না কেন, মাঠে নেমে করার মতো না সেটা। তবে যেহেতু ঘরের মাঠে খেলা, ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী।

প্রশ্ন:

প্রশ্ন: এবার আইপিএলে নিজের পারফরম্যান্সে কি আপনি সন্তুষ্ট?

মোস্তাফিজ: আমি চেষ্টা করেছি। খারাপ বলব না। সব মিলিয়ে ভালোই। খেলা তো আগে আগেই শেষ হয়ে গেল। এটা নিয়ে একটু আক্ষেপ আছে। আরও কিছু ম্যাচ খেলতে পারলে ভালো হতো।

ভাড়া করা বিমানে ভারত থেকে দেশে ফেরার পথে এ ছবিটা তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন মোস্তাফিজ।
ছবি: টুইটার
প্রশ্ন:

প্রশ্ন: গতবারের আইপিএলটা খুব ভালো যায়নি। বিশেষ করে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ব্যাটিং–সহায়ক উইকেটে একটু চ্যালেঞ্জিং ছিল আপনার জন্য। এবার সেই মাঠেই খুব ভালো করেছেন।

মোস্তাফিজ: এবার সুবিধা হয়েছে অনেক মাঠে খেলা না হওয়ায়। একই মাঠে খেলা হয়েছে অনেক। প্রায় প্রতিদিনই খেলা হয়েছে। উইকেট ব্যবহৃত ছিল। এটা আমার জন্য একটা সুবিধা ছিল।

প্রশ্ন:

প্রশ্ন: রাজস্থান আপনাকে নতুন বলে বোলিং করিয়েছে নিয়মিত। এটা নিশ্চয়ই তৃপ্তিদায়ক?

মোস্তাফিজ: এই বিষয়টা ভালো লেগেছে। রাজস্থান আমাকে প্রথমে বল করার সুযোগটা করে দিয়েছে প্রায় প্রতি ম্যাচেই। চেষ্টা করেছি সুযোগটা কাজে লাগানোর। অনেক দিন ধরেই নতুন বলে সুইং করানো নিয়ে কাজ করছিলাম। খুব বেশি ভালো করেছি, তা বলব না। আরও কাজ করে যেতে হবে এটা নিয়ে।

প্রশ্ন:

প্রশ্ন: কাটার তো আগে থেকেই ছিল। এখন আরও বৈচিত্র্য যোগ করেছেন। কিন্তু বৈচিত্র্য সঠিক সময়ে ব্যবহারের একটা ব্যাপার থাকে...

মোস্তাফিজ: এটা আসে অভিজ্ঞতা থেকে। যত খেলবেন, ততই মাথা খুলবে। আপনার দক্ষতাও বাড়বে। অনেকের সঙ্গে মিশবেন। বড় বড় টুর্নামেন্টে খেলবেন, বড় ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকলে আপনার সাহসও বাড়বে। এভাবেই পরিধিটা বাড়ে। আমরা সাধারণত বিপিএলই খেলি। সেখানে ভারতীয় ব্যাটসম্যান কিন্তু কেউ আসে না। দেখবেন সেরা ব্যাটসম্যানরা কিন্তু বেশির ভাগই ভারতের। এমন পরিবেশে আপনার সাহসটা বাড়ে। সঙ্গে দক্ষতাও। বুঝতে পারবেন আপনি কোন জায়গায় আছেন এবং কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে।

পেস বোলিং নিয়ে রাজস্থান রয়্যালস সতীর্থদের সঙ্গে কথা হয়েছে মোস্তাফিজের।
ফাইল ছবি: প্রথম আলো
প্রশ্ন:

প্রশ্ন: এবার রাজস্থান দলে বেন স্টোকস, জস বাটলাররা ছিলেন। কোচ কুমার সাঙ্গাকারা। তাঁদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন?

মোস্তাফিজ: সবাই অনেক সাহায্য করেছে। স্টোকস তো চোটের কারণে খেলতে পারেনি। বাটলারকে আমি এর আগে বল করেছিলাম দুবার। বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে মনে হয়। এবার নেটে বল করা হয়েছে। সাঙ্গার সঙ্গে আমি খেলেছি ঢাকা ডাইনামাইটসের হয়ে। ও আমার সম্পর্কে ভালো জানে। ওরা আমাকে হয়তো আশা করে দলে নিয়েছিল। জানি না কতটা পূরণ করতে পেরেছি।

প্রশ্ন:

প্রশ্ন: রাজস্থানের দুজন ভারতীয় বাঁহাতি পেসার ছিল। তাঁদের সঙ্গে কি বোলিং নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে?

মোস্তাফিজ: হ্যাঁ, সব জায়গাতেই হয়। আমি কোন বলটা করার সময় কী করি তারাও শুনতে চায়। শেখার আগ্রহটা সবার মধ্যেই থাকে। আইপিএলের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য এটাই।

প্রশ্ন:

প্রশ্ন: এবার আপনাকে ব্যাক অব দ্য হ্যান্ড স্লোয়ার বল করতে দেখেছি। আগে কখনো এই বল করতে দেখিনি।


মোস্তাফিজ: এটা আমি অনেক দিন ধরেই চেষ্টা করছিলাম। আমার আরও অনুশীলন করা লাগবে। নেটে অনেক দিন চেষ্টা করেছি। নেটে ভালো হচ্ছিল তাই ম্যাচে করেছি।

আইপিএলে ইয়র্কার মারার দক্ষতা ফিরে পেয়েছেন বাংলাদেশের এ পেসার।
ফাইল ছবি: প্রথম আলো
প্রশ্ন:

প্রশ্ন: নতুন বলে স্লোয়ার ইয়র্কারে একটা উইকেট নিতে দেখেছি…

মোস্তাফিজ: এটা অনেক কঠিন বল। টি-টোয়েন্টিতে এসব ঝুঁকি নিতে হয়। চেষ্টা করেছি। হয়ে গেছে।

আইপিএলে থাকতে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা সফরে চোখ রেখেছিলেন মোস্তাফিজ।
ফাইল ছবি: প্রথম আলো
প্রশ্ন:

প্রশ্ন: শেষের ওভারগুলোতে দেখা গেছে অনেক ইয়র্কার দিচ্ছিলেন। মাঝে কিছুদিন ইয়র্কার দেখা যাচ্ছিল না...

মোস্তাফিজ: আমি কাজ করছিলাম এটা নিয়ে। কিন্তু চাইলেই ইয়র্কার করতে পারছিলাম না। নিউজিল্যান্ড থেকে আইপিএলে এসে দেখলাম পারছি। একেবারে যে জায়গা মতো ফেলতে পারছি, তা না। তবে কাছাকাছি পারছি। আরও অনুশীলন করে যেতে হবে।

প্রশ্ন:

প্রশ্ন: আইপিএলের সময় টেস্ট সিরিজ খেলছিল বাংলাদেশ। মিস করেছেন নিশ্চয়ই?

মোস্তাফিজ: হ্যাঁ, খেলা দেখেছি নিয়মিত। টিভিতে দেখার চেষ্টা করেছি। টিভিতে না হলে নিয়মিতই স্কোর দেখেছি মোবাইলে।