স্পিন পাল্টে দিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং

প্রোটিয়াদের হয়ে দারুণ করছেন শামসি
ছবি: ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা টুইটার

ইমরান তাহিরের পর কে? ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেটে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। ‘চায়নাম্যান’ তাবরেইজ শামসি তখনো ছিলেন দলের আশপাশে। কিন্তু ধারাবাহিক হতে না পারায় শামসি আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারেননি।

সামনেই আরেকটি বিশ্বকাপ। তাঁর আগে সেই শামসিই হয়ে উঠেছেন ‘ধারাবাহিক’। তাঁর বোলিংয়ে টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে হারিয়ে এসেছে প্রোটিয়ারা। ৫ ম্যাচে তাঁর শিকার ৭ উইকেট। মাঝের ওভারে তিনি দমিয়ে রেখেছিলেন কাইরন পোলার্ড, নিকোলাস পুরানদের মতো হার্ডহিটারদের।

কাল সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও। দক্ষিণ আফ্রিকা আগে ব্যাট করে ১৬৫ রান তুলেছে।

আইরিশদের জিততে দেননি শামসি। তাঁর ৪ উইকেটে আইরিশ ইনিংস থেমেছে ৯ উইকেটে ১৩২ রানে, প্রোটিয়ারা সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতেছে ৩৩ রানে।
ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংও জুটির খেলা। শামসির সঙ্গে জুটি বাঁধার জন্য আছেন আরেক স্পিনার জর্জ লিন্ডে। একজন উইকেট নিচ্ছেন তো আরেকজন রান থামাচ্ছেন।

রান থামানোর ক্ষেত্রে লিন্ডের বাঁহাতি স্পিন যে বেশ কার্যকর, তা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকেই প্রমাণিত। ৫ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি। কালও ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে লিন্ডে নিয়েছেন ২ উইকেট। দুজনই আবার খুব কাছের বন্ধু। সে জন্যই হয়তো মাঠে দুজনের রসায়নটা জমছে ভালো।

শামসি-লিন্ডে জুটি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ মার্ক বাউচারের আশার পারদও চড়ছে। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন যেভাবে দাপট দেখিয়েছে, তাতে অক্টোবর-নভেম্বরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো ফল আশা করতেই পারেন বাউচার।

এর পেছনে ক্রিকেটীয় যুক্তিও আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজের সব খেলা এক মাঠে হওয়ায় অতি ব্যবহারে উইকেট হয়ে পড়ে স্পিন–সহায়ক।

বাউচার মনে করেন, বিশ্বকাপেও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশন এমনই থাকবে। বিশ্বকাপ শুরুর আগে সেখানে টানা এক মাস হবে আইপিএলের খেলা। এর দুই সপ্তাহ পরই শুরু হবে বিশ্বকাপ। তাই কন্ডিশনের সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারবেন দুই প্রোটিয়া স্পিনার।

বাউচারের কথায়ও সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেল, ‘আমরা হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো কন্ডিশনই আরব আমিরাতে পাব। আইপিএলের পর উইকেটগুলো শুষ্ক হওয়ার কথা। একদমই দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনের মতো না। যেখানে আপনি চাইলেই ১৮০-২০০ রান করে ফেলবেন। আপনাকে দক্ষতা দেখাতে হবে, চালাক হতে হবে। আর আমাদের বোলাররা সেটাই করে দেখাচ্ছে।’

স্পিন সব সময়ই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দুর্বলতম অংশ। সাম্প্রতিক সময়ে বড় মঞ্চে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন দিয়ে কাঁপিয়ে দেওয়ার ঘটনা খুব কম। ২০১১ বিশ্বকাপ থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত ইমরান তাহিরকে ব্যবহার করেছে প্রোটিয়ারা।

এখন শামসি-লিন্ডে জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা পেয়েছে দুজন কার্যকর স্পিনার। তাঁদের সঙ্গে কাগিসো রাবাদা, এনরিক নরকিয়ের মতো বিশ্বমানের ফাস্টবোলার তো আছেনই!