হঠাৎই 'বিস্ফোরক' ক্লার্ক!

মাইকেল ক্লার্কের সেই বই—‘অ্যাশেজ ডায়েরি ২০১৫’।
মাইকেল ক্লার্কের সেই বই—‘অ্যাশেজ ডায়েরি ২০১৫’।

অ্যাশেজ সিরিজ খেলেই ক্রিকেটকে ‘বিদায়’ বলেছেন মাইকেল ক্লার্ক। বেশ নীরবেই কাটছে তাঁর জীবন। কিন্তু সাবেক এই অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ‘অ্যাশেজ ডায়েরি ২০১৫’তে নীরবতা ভাঙলেন সশব্দে, তাঁর এই বই প্রকাশিত হয়েছে গত সপ্তাহে। গত আগস্টে ইংল্যান্ড সফরে তাঁর অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস ও ম্যাথু হেইডেন। অস্ট্রেলিয়ার সোনালি সময়ের এই দুই সতীর্থকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন ক্লার্ক।
গত আগস্টে অ্যাশেজ সিরিজে ব্যর্থতার জেরে তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন ক্লার্ক। সাইমন্ডস, হেইডেনরা প্রকাশ্যেই সমালোচনার তির ছুঁড়েছিলেন তাঁর দিকে। প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর নেতৃত্ব নিয়েও। নিজের বইয়ে ক্লার্ক সেটির ঝাঁজালো জবাব দিলেন, ‘অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এসে আমার নেতৃত্বের সমালোচনা করেছে! আমি দুঃখিত, কিন্তু এটা বলতেই হচ্ছে, অন্যের নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে সাইমন্ডস মোটেও যোগ্য ব্যক্তি নয়।’
‘সাইমন্ডস কেন যোগ্য ব্যক্তি নন’—বইয়ে সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তা-ও, ‘এই সাইমন্ডসই তো মাতাল অবস্থায় দেশের হয়ে খেলতে এসেছিল। আমার দিকে ইট ছোঁড়াটা তাঁর জন্য একটু বাড়াবাড়িই হয়ে গেছে।’
সাইমন্ডসের সঙ্গে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মধুর সম্পর্কই ছিল ক্লার্কের। কিন্তু একটা সময় দুজনের পথ দুটি ভিন্ন দিকেই বেঁকে যায়। ক্লার্ক মাঠে ও মাঠের বাইরে পরিণত হয়ে উঠে ক্রমশ নিজেকে যোগ্য করে তোলেন অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে। আর সাইমন্ডস একের পর এক উচ্ছৃঙ্খল কাণ্ডে নিজের গ্রহণযোগ্যতা হারাতে থাকেন। ২০০৯ সালে তো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কেন্দ্রীয় চুক্তিই বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল সাইমন্ডসের।
ক্লার্ক এক হাত নিয়েছেন ম্যাথু হেইডেনকেও। হেইডেন বলেছিলেন, ক্লার্ক নাকি কোনো একদিন পন্টিংকে বলেছিলেন তাঁকে ক্লোজ ইন ফিল্ডিংয়ে দাঁড় করালে তিনি তাঁর ব্যাগি গ্রিন (অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্যাপ) ফেরত দিয়ে দেবেন।
ক্লার্ক ভেবেই পাচ্ছেন না হেইডেন কীভাবে এমন কথা বলতে পারেন, ‘আমি মনে করি, দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা ও আমার কাছে ৩৮৯টি ব্যাগি গ্রিনের মূল্য কী, তা আমি গত বার বছর ধরেই দেখিয়ে এসেছি। রিকি পন্টিং যদি আমাকে সিডনি হারবার ব্রিজ থেকে পানিতে লাফ দেওয়ার নির্দেশ দিত, আমি তা-ই করে দেখাতাম। আমি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলাটাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি। আমি অস্ট্রেলিয়া দলে খেলার বিনিময়ে সবকিছুই করতে রাজি ছিলাম।’
ক্লার্কের সবচেয়ে বড় আক্রমণটা অবশ্য সাবেক কোচ জন বুকাননকে লক্ষ্য করে। অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলীয় দলের ব্যর্থতার সমালোচনা করতে গিয়ে বুকানন বলেছিলেন, মাইকেল ক্লার্কের অধিনায়কত্বে ব্যাগি গ্রিনের মর্যাদা নাকি ভুলুণ্ঠিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
ক্লার্ক এই মন্তব্যের জবাবে বুকাননের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বুকাননের সময় অস্ট্রেলীয় দলে যে সব খেলোয়াড় ছিল, তাঁদের জন্য কোনো কোচের দরকার হয় না, ‘আমি নিশ্চিত যদি আমার বাড়ির কুকুর জেরিও অস্ট্রেলিয়ার ওই দলটির কোচ হতো , তাহলেও সে সফল হতো। আর ব্যাগি গ্রিন সম্পর্কে এই বুকানন কী জানে? সে তো কোনোদিন এই ক্যাপ পড়ার সুযোগও পায়নি। সূত্র: সিডনি মর্নিং হেরাল্ড, এএফপি।